মোহনপুরে বন্যার পরিস্থিতির আরো অবনতি

আপডেট: আগস্ট ১৮, ২০১৭, ১:৫০ পূর্বাহ্ণ

মোহনপুর প্রতিনিধি


পাঁচদিনেও  রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার ভীমনগরে শিবনদীর বেড়ি বাঁধ ভাঙন বন্ধ করতে পারে নি পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে বস্তা ফেলা শুরু করেছে পাউবো। এদিকে বাঁধের ভাঙন রোধ না হওয়ায় বন্যার পরিস্থিতি আরো অবনতি হয়েছে। উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন ও কেশরহাট পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা গত বুধবার রাতে বন্যার পানি ঢুকে প্লাবিত হয়েছে। ফসল, পানবরজ, পুকুর, নিয়ে কৃষকরা উদ্বেগ মধ্যে রয়েছেন। স্থানীয় সাংসদ আয়েন উদ্দিন, সংরক্ষিত সাংসদ আখতার জাহানসহ আ’লীগের নেতাকর্মিরা বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন। এসময়  তারা ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতার আশ্বাস দিলেও এখন পর্যন্ত কোন প্রকার ত্রাণ ও সহযোগিতা পান নি বলে জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা। মোহনপুর উপজেলার অধিকাংশ মানুষ কৃষির ওপর নির্ভরশীল। বন্যায় নিত্য প্রয়োজনীয় ফসলগুলো তলিয়ে যাওয়ায় কারণে বন্যাকবলিত এলাকার কৃষকরা পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম বিপাকের মধ্যে রয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা দ্রুত সাহায্য-সহযোগিতা প্রদানের দাবি জানিয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকার অনেক কৃষক জানান, বন্যার পানিতে আমাদের সবকিছু শেষ হওয়ায় একদিকে সংসারের খরচ অন্যাদিকে ছেলে মেয়ে লেখাপড়ার খরচ নিয়ে বিপাকের মধ্যে রয়েছি। তারা আরো জানান, পাউবোর অবহেলা ও বিশ্বনাথ হালদার নামে এক ব্যক্তি স্লুইস গেট বন্ধ করে বিল মাইল বিলে মাছ চাষ করার জন্য এ অবস্থায় সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে পাঁচদিনের প্রবল ¯্রােতের তোড়ে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলার ধুরইল, ঘাসিগ্রাম, রায়ঘাটি ইউনিয়ন ও কেশরহাট পৌরসভার বন্যার পরিস্থিতি আরো অবনতি হয়েছে। অন্যদিকে জাহানাবাদ, মৌগাছি ও বাকশিমইল ইউনিয়নের কিছু কিছু এলাকায় বন্যার পানি ঢুকেছে। রাজশাহী জেলা কৃষি অধিদফতরের শীর্ষ কর্মমর্তারা মোহনপুর উপজেলা কৃষি অফিসার রহিমা খাতুনকে সাথে নিয়ে বন্যায় প্লাবিত ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
মোহনপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রহিমা খাতুন জানান, ভীমনগর বেড়ি বাঁধ ভেঙে গতকাল দুপুর পর্যন্ত ২ হাজার ৯শ ৫ হেক্টর জমির ফসল বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। বেশি ক্ষতি হয়েছে রোপা-আমন, রোপা-আঊশ, পটল, পানবরজ, করলা, বাঁধাকপি, ফুলকপিসহ বিভিন্ন সবজির খেতের। কৃষি অফিসার আরো জানান, প্রতিদিন তিন ঘণ্টা পর পর বন্যার পরিস্থিতির তথ্য জেলা অফিসে পাঠানো হচ্ছে। মোহনপুর উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, পাঁচ দিনে বন্যার পানিতে ধুরইল, ঘাসিগ্রাম ও মৌগাছি ইউনিয়নের ২৩টি পুকুর প্লাবিত হয়েছে। পাঁচদিন ধরে শিবনদীর বেড়ি বাঁধের ভাঙা স্থান মেরামতে কাজ চলছে। বাঁধ ভাঙার পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) শুক্লা সরকারের সহযোগিতার পাউবোর শ্রমিকের সাথে  উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা বিপুল কুমার মালাকার, ধুরইল ও ঘাসিগ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাজিমউদ্দিন সরকার, আজাহারুল ইসলাম বাবলু প্রতিনিয়ত কাজ করছেন।
পাঁচদিনেও বাঁধ মেরামত করা কেন সম্ভব হয়নি জানতে চাইলে রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেসুর রহমান জানান, বাঁধ মেরামতের জন্য দুইদিন ধরে বাঁশ পুতে পাইলিং শেষে গতকাল বিকেলে বস্তা ফেলা শুরু করা হয়েছে । দুইদিনের মধ্যে ভাঙা স্থান বন্ধ করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। মোহনপুর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শুক্লা সরকার জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডেকে বঁাঁধ ভাঙার পর থেকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল প্রকার সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ