মোহনপুরে বাড়ছে আমনচাষ

আপডেট: জুলাই ৩০, ২০১৭, ১:৫৯ অপরাহ্ণ

মোস্তফা কামাল, কেশরহাট


রাজশাহীর কৃষি অধ্যুষিত মোহনপৃুরে বাড়ছে আমনচাষের পরিমান। চলতি মৌসৃুমে আমনচাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন স্থানীয় কৃষকরা। গতবছর এখানে আমনচাষের পরিমাণ ছিল প্রায় দুই হাজার ৩৫০ হেক্টর জমি। চলতি মৌসুমে আমন চাষের পরিমাণ এখনো নির্ধারণ করা না হলেও আরো বাড়বে জানিয়েছে উপজেলা কৃষিবিভাগ।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, রাজশাহী অঞ্চলের একটি কৃষিপ্রধান এলাকা হিসেবে মোহনপুর উপজেলা পরিচিত। প্রাকৃতিক গুনাবলী সমৃদ্ধ এ উপজেলায় প্রায় সব ধরনের ফসল উৎপাদন হয়। রকমারি ফসলের মাঝে এখানে তিনটি মৌসুমে আউশ, আমন ও বোরো ধানের চাষ হয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। এক সময় সেচের পানির অভাবে এখানে ফসলচাষ করতে না পেরে প্রায় জমি চাষ অনুপযোগী হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে গভীর নলকূপ বসানোর পর আবার ফলতে থাকে সোনার ফসল। অভাব ঘুচতে থাকে এ অঞ্চলের কৃষক পরিবারের।
আধুনিক চাষ পদ্ধতির উদ্ভব আর প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ নানাবিধ জটিলতার কারণে অনেক জমিতে বাড়তে শুরু করেছে আমনচাষের পরিমাণ। ছোট আয়তনের মোহনপুর উপজেলায় অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি প্রায় আট হাজার হেক্টর জমিতে বোরোধান, সাড়ে ছয় হাজার হেক্টর জমিতে আউশধান ও প্রায় তিন হাজার হেক্টর জমিতে আমনধানের চাষ হয়ে থাকে। বৈষ্যয়িক জলবায়ুর কারণে বিগত কয়েক বছর ধরে উজানি ঢল, অপরিকল্পিতভাবে পুকুর খনন ও অতি বর্ষনের কারণে নি¤্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে আউশধান বিনষ্ট হচ্ছে। বর্ষার পানিতে ধান কাটার কারণে আউশধানের খড় নষ্ট হওয়ায় গোখাদ্যের সঙ্কট দেখা দিয়েছে।
অন্যদিকে এ অঞ্চলে এখন পানবরজের পরিমাণ বেড়েছে অনেকাংশে। এজন্য পান বরজের চালার ছাউনিতে আমনধানের খড় ব্যবহৃত হচ্ছে। এছাড়াও আউশধান কাটা মাড়ায় করতে হয় বর্ষা মৌসুমে আর আমন ধানের কাটা মাড়ায় করতে হয় খরা মৌসুমে। এতে কৃষকের অর্থ সাশ্রয় হয় বলে আমন চাষে দিন দিন আগ্রহী হয়ে উঠছেন। উপজেলার বেশকিছু এলাকায় ইতোপূর্বে আমনধান রোপণের কাজ শুরু হয়েছে। কয়েক সপ্তার মধ্যে আমন রোপণ শেষ হবে।
উপজেলার কেশরহাট পৌর এলাকার হরিদাগাছি গ্রামের কৃষক সাইদুর রহমান জানিয়েছেন, এবারে তিনি প্রথম আমন ধানের চাষ করছেন। আগে তিনি আউশ ধান চাষ করতেন ভালো ফলন আর খড়ের আশায় এবার আমন ধানের চাষ করেছেন। ইতোমধ্যে প্রায় দুইবিঘা জমিতে তিনি চারা রোপনের কাজ শেষ করছেন। ঘাসিগ্রাম ইউনিয়নের গোছা গ্রামের কৃষক আইয়ুব আলী বলেন, তিনি অনেকদিন ধরে আমন ধানের চাষ চাষ করে আসছেন। এবছর তার এলাকার অনেকেই নতুনভাবে আমনধানের চাষ শুরু করেছেন।
বাকশৈল গ্রামের কৃষক আশরাফুল ইসলাম বলেন আউশ ধানের চেয়ে আমনধান চাষে কষ্ট কম লাভ বেশি। ধান ও খড় দুটোয় ভালো হয়। ধান কাটার সময় শ্রমিক সঙ্কট থাকে না হিসেবে তিনি এবার প্রথমবারের মতো আমন ধানের চাষ করেছেন।
কেশরহাট ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান বলেন, কেশরহাট এলাকায় আমনচাষ এবার অনেকটায় বেড়েছে। এতে ফলন বেশি ফলবে বলে কৃষকরা আমন চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছে।
মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রহিমা খাতুন বলেন, আমনধান রোপণ কাজ চলছে। এবারে এর পরিমাণ কিছুটা বাড়বে এজন্য এখনো পরিমাণ নির্ধারণ করা যায় নি। তবে অনুকূল আবহাওয়ার পাশাপাশি প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে আমনচাষিরা লাভবান হবে বলে আশা করেন তিনি।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ