মোহনপুরে বাড়ছে সাপ আতঙ্ক আবারো দুই বাড়িতে ৭০ গোখরা নিধন

আপডেট: জুলাই ২১, ২০১৭, ১২:৫৫ পূর্বাহ্ণ

মোস্তফা কামাল, কেশরহাট


গোখরা সাপ আতঙ্কে কাঁপছে মোহনপুর। ঘরে-বাইরে,  উঠানে, মাঠে, ঘাটে এমনকি শয়ন কক্ষে বিষধর গোখরা সাপের অবাধ বিচরণ। সর্বত্রই চলছে সাপ সন্ধান করা ও সাপ নিধনের কৌশল। বিচ্ছিন্নভাবে গত কয়েক দিনের ব্যবধানে প্রায় শতাধিক সাপ নিধন করা হয়েছে। সাপ নিধনের বিষয়ে ওঝা ও চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের পরামর্শ মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
সরোজমিন সর্প বিশেষজ্ঞ ও স্বাস্থ্যবিদদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাজশাহীর ছোট আয়তনের একটি উপজেলা হিসেবে পরিচিত মোহনপুর। ঘন বসতিসহ পানবরজ অধ্যুষিত এলাকা হিসেবে এখানে বসবাস ও উপদ্রƒপ কিছুটা বেশি বলে ধারণা করছেন অনেকে। সাপ সবস্থানে থাকলেও গোখরা সাপটি মানুষের বসবাসস্থলে বেশি থাকে বলে, মানুষের সঙ্গে এর বিড়ম্বনাও বেশি শোনা যায়। তবে আঘাত না পেলে গোখরা মানুষকে তেড়ে না আসলেও গ্রামের বেশিরভাগ বাড়িতে প্রতিনিয়ত হাঁস-মুরগী নিধন করে থাকে। সম্প্রতি গোখরা সাপের প্রজনন মৌসুম হিসেবে যেখানে সেখানে মানুষের সঙ্গে দেখা মিলছে গোখরার।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার উপজেলার দুইটি স্থানে মাসহ প্রায় ৭০টি গোখরা নিধন করা হয়েছে। এর মধ্যে ঢোপাঘাটা গ্রামের কৃষক নুুরুল ইসলামের বাড়িতে ৪৮টি গোখরা সাপের বাচ্চা নিধন করা হয়। অন্যদিকে বুধবার রাতে খয়রা গ্রামের কোব্বাস আলীর বাড়ির শয়ন কক্ষে ২১টি গোখরা সাপের বাচ্চা নিধন করা হয়েছে। এছাড়াও এক সপ্তা আগে বিদিরপুর গ্রামের মাইনুল ইসলামের বাড়িতে ব্যাঙের ফাঁদ পেতে মাসহ ২০টি সাপ নিধন করা হয়েছে। তবে এসব সাপ কাউকে তেড়ে আসার খবর পাওয়া যায় নি। এসব সাপগুলো বাচ্চা প্রসবকালে দেহ স্বাভাবিক রাখতে মাটির কোটর থেকে বাইরে আসলে মানুষের নজরে পড়ে। এসময় ভয়ে আতঙ্কে মানুষ সাপগুলো নিধন করছে।
জানতে চাইলে নরুল ইসলাম বলেন, সাপ মানে ভয়। ভয়ে লোকজন সাপগুলো মেরে ফেলেছে, বড় সাপ গর্তে চলে গেছে। বিষহারা গ্রামের ওঝা এন্তাজ আলী বলেন, গোখরা সাপ সাধারণত রাতের বেলায় আহারের জন্য বাইরে আসে।
কেশরহাট পৌর এলাকার বাকশৈল গ্রামের ওঝা সমশের আলী জানান, সাপ কখনো মানুষকে কামড়াতে আসে না। সাপ যখন ভয়ে অথবা আতঙ্কে পড়ে তখনই কেবল ছোবল মারে। যেসব জায়গায় সাপের উপদ্রƒপ বেশি ওইসব স্থানে কার্বলিক অ্যাসিড রাখলে সাপ থাকবে না।
সাপে কাটা রোগির প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের টিএইচও ডা. গৌতম পাল বলেন, সাপ থেকে সতর্ক থাকতে হবে। বাড়িতে কার্বলিক অ্যাসিড রাখা যেতে পারে। কাউকে সাপে কাটলে একাধিকস্থানে বাধন দিয়ে দ্রƒত জেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্্ের নিতে হবে। চিকিৎসকদের মতে, সাপের জন্য ইনেজল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যা উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আপাতত নেই। তবে দ্রƒত নিয়ে আসার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ