যুক্তরাষ্ট্র কারাগারে মারা গেলেন আলোচিত ‘অন্ধ শেখ’

আপডেট: ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৭, ১২:০৭ পূর্বাহ্ণ

সোনার দেশ ডেস্ক


বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্রে হামলার ষড়যন্ত্রে দ-প্রাপ্ত কথিত মুসলিম ধর্মীয় নেতা ওমর আবদেল রহমান কারাগারে মারা গেছেন, যিনি ‘অন্ধ শেখ’ নামেই পরিচিত ছিলেন।
শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলিন কারাগারে তার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে।
কারাগারের মুখপাত্র গ্রেগ নর্টন জানিয়েছেন, শনিবার স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে কারাগারের ফেডারেল মেডিকেল সেন্টারে তিনি মারা গেছেন। কারান্তরীণ ওমর ১০ বছর ধরে ডায়াবেটিস এবং করোনারি আর্টারি রোগে ভুগছিলেন। এর আগে ওমরের ছেলে আমমার জানান, যুক্তরাষ্ট্র থেকে টেলিফোন করে মিশরে তাদেরকে মৃত্যুর খবর জানানো হয়েছে।
মিশরীয় বংশোদ্ভূত ওমর মুসলিম আধ্যাত্মিক নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। দীর্ঘ ধূসর শ্মশ্রু, কালো চশমা, আর মাথায় সাদা পাগড়ি পরতেন এই কট্টর মুসলিম নেতা। আশি ও নব্বইয়ের দশকে ধর্ম নিয়ে কট্টর অবস্থানের কারণে তিনি ছিলেন বেশ আলোচিত। মনে করা হয়, তার অনুসারীরাই বিশ্বব্যাপী হত্যা, বোমা হামলার মতো ঘটনায় জড়িত।
ছোটকালেই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে চোখের দৃষ্টি হারান ওমর আবদেল রহমান, যার জন্ম ১৯৩৮ সালের ৩ মে। ব্রেইল সংষ্করণের কোরআন শিক্ষার মধ্য দিয়ে তার বেড়ে ওঠা।
‘অন্ধ শেখ’ তরুণ বয়সে মুসলিম মৌলবাদ গ্রুপগুলোর সঙ্গে যুক্ত হন। ১৯৮১ সালে মিশরের তৎলকালীন প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাতের বিরুদ্ধে ফতোয়া দিয়ে তাকে বেশ কয়েকবছর সাজা ভোগ করতে হয়েছিল।
সন্ত্রাসী তালিকায় নাম থাকার পরও ১৯৯০ সালে তাকে যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ ভিসা দেয়। যদিও ভিসা কর্তৃপক্ষ পরবর্তীতে দাবি করেছিল কম্পিউটারে তথ্য ভুলের সুবিধা পেয়ে গেছেন ওমর। ১৯৯১ সালে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি পাওয়ার পর তাদের সেই দাবি বেশ আলোচনার জন্ম দেয়।
নিউ ইয়র্ক টাইমস সেসময় এক খবরে জানায়, সিআইএ এর সায় পেয়ে তাকে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কারণ হিসেবে বলা হয়েছিল, তিনি আফগানিস্তানে সোভিয়েতবিরোধী মুজাহিদদের সমর্থন যুগিয়েছিলেন।
১৯৯৩ সালে বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্রে হামলায় ওমর সরাসরি দোষী সাব্যস্ত না হলেও ওই হামলার ষড়যন্ত্রে পরোক্ষভাবে ইন্ধন দেওয়ার প্রামণ পাওয়া গিয়েছিল।
এইক সঙ্গে তার বিরুদ্ধে ১৯৯৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে মিশরের প্রেসিডেন্ট হোসনি মুবারককে হত্যার ষড়যন্ত্রের বিষয়টিও বিচারে আমলে নেওয়া হয়।
বিচার প্রক্রিয়ায় তার বক্তব্য শোনা না হলেও রায়ের দিন দোভাষীর মাধ্যমে প্রায় দেড় ঘণ্টা বক্তব্য রাখেন ওমর আবদেল রহমান, যেখানে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকারের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রকে তার ধর্মীয় বিশ্বাসের শত্রু হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
তিনি বলেছিলেন, “মানুষজনকে ইসলামের দাওয়াত দেওয়ার বাইরে আমি কোনো অপরাধ করিনি।”
কারান্তরীণ থাকলেও মুসলিম মৌলবাদীদের কাছে তার বেশ গ্রহণযোগ্যতা ছিল। আল-কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেনও একবার তাকে মুক্ত করার জন্য জিহাদ ঘোষণা করেছিলেন।- বিডিনিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ