যুদ্ধাপরাধীদের সম্পদ বাজেয়াপ্তকরণ ।। দ্রুত আইন প্রণয়ন করা হোক

আপডেট: ডিসেম্বর ১৮, ২০১৬, ১২:০২ পূর্বাহ্ণ

ভিন্ন মাত্রায় এবারের বিজয় দিবস দেশব্যাপি উদযাপিত হয়েছে। বিজয় দিবস উদযাপনের বাধভাঙ্গা উচ্ছ্বাস ছিল, অংশগ্রহণ ছিল, আনন্দের উদ্ভাস ছিলÑ শপথ ছিল, অঙ্গীকার ছিল। এ শপথ অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার, অঙ্গীকার ছিল মানবিক রাষ্ট্র গড়ার। শপথ ও অঙ্গীকারের গন্তব্য যাত্রায় জাতি সোচ্চার হয়েছিল ‘যুদ্ধাপরাধীদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার জন্য জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার। এ দেশের মানুষের ওপর গণহত্যা চালিয়ে, লুটপাট অগ্নিসংযোগ করে যে অর্থ-সম্পদ তারা স্বাধীন বাংলােেদশে গড়ে তুলেছিল এবং ওই অর্থ সম্পদ জঙ্গি-সন্ত্রাসী তৎপরতায় বিনিয়োগ করে এ দেশের স্বাধীনতা- সার্বভৌমত্বকে নস্যাৎ করতে চেয়েছিল; ওই সম্পদের অধিকার তারা রাখে না। একাত্তরে নিপীড়িত বঞ্চিত ক্ষতিগ্রস্ত মুক্তিকামী মানুষ, দরিদ্র অসহায় মানুষের অধিকার ওই সম্পদে। এ ব্যাপারে সারা দেশের মানুষের ঐক্যবদ্ধ আওয়াজ যুদ্ধাপরাধীদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হোক।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বিজয় দিবসের প্রাক্কালে বৃহস্পতিবার বলেছেন, আইন করে যুদ্ধাপরাধীদের সম্পদ বাতিল করা হবে। এরপর ওই অর্থ দেশের কল্যাণে ব্যয় করার পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। মন্ত্রীর এই প্রতিশ্রুতির কথা দৈনিক সোনার দেশসহ দেশের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী দল জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ পাঁচ নেতাসহ বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্যের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। রাজাকার শিরোমনি গোলাম আযম এবং বিএনপি নেতা আব্দুল আলিম আজীবন কারাদ- ভোগকালে মারা গেছে। আরো অনেক মানবতাবিরোধীর আপিল মামলা নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আছে। এই যুদ্ধপরাধীদের বিশুল বিত্তবৈভব আছে।  এ সম্পদে দেশের মানুষের অধিকার আছে এই জন্য যে, এসব অর্থবিত্ত এ দেশের মানুষের সম্পদ লুণ্ঠন করে অর্জিত। আইনমন্ত্রী ও সে কথাটিই বলেছেন, “যুদ্ধাপরাধীরা সঠিক পথে সম্পত্তি আহরণ করেননি। তাই তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে আইন প্রণয়ন করা হবে। যুদ্ধাপরাধীদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে তা দেশের কল্যাণে কাজে লাগানো হবে।”
বিজয় দিবসে দাবি উঠেছে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার। এ ব্যাপারেও সরকারের পক্ষ থেকে অঙ্গীকার আছে, প্রতিশ্রুতি আছে।  কিন্তু মাঠ পর্যায় থেকে ঘুরে ফিরে দাবিগুলো উঠছে কিন্তু এ ব্যাপারে অগ্রগতি তেমন লক্ষ্যনীয় নয়। জামায়াতে ইসলামী ও যুদ্ধপারাধীদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে আইনের প্রয়োজন হলে তা আর বিলম্ব কেন?। আইন দ্রুত প্রণয়ন করে যুদ্ধাপরাধীদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার কাজটি ত্বরান্বিত হোক এটাই আমাদের প্রত্যাশা।