সোমবার, ২৯ মে, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
সোনার দেশ ডেস্ক
১৮৭৭ সালে মেলবোর্নে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে টেস্ট ক্রিকেটের যাত্রা শুরু হয়। সেই থেকে এই সংস্করণে টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলো খেলেই চলছে। সবমিলিয়ে এখন পর্যন্ত টেস্ট হয়েছে ২২৫৩টি। বাংলাদেশ ২২৫৪তম টেস্ট খেলতে নামবে বুধবার। আজ সবগুলো টেস্ট খেলুড়ে দেশকে টপকে সবচেয়ে কম সময়ে শততম টেস্ট খেলার মাইলফলকে পৌঁছাতে যাচ্ছে তারা। ২০০০ সালের নভেম্বরে ভারতের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয় বাংলাদেশ। এর ১৬ বছর পর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ‘অপয়া’ ভেন্যুতে শততম ম্যাচ খেলতে যাচ্ছে মুশফিকরা। যেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশ শততম ম্যাচ খেলছে সেই তাদের সময় লেগেছিল ১৮ বছর। এর পর জিম্বাবুয়ে শততম টেস্ট খেলেছে ২৪ বছর পর।
এমনিতেই বাংলাদেশ টেস্ট কম খেলে। এ কারণেই বাংলাদেশের দ্রুততম সময়ে শততম টেস্ট খেলার রেকর্ডে বিস্ময় জন্ম দিয়েছে। ঘটনাক্রমে শুরুর দিকে শুধুমাত্র টেস্ট ক্রিকেট থাকলেও এক দেশ থেকে অন্য দেশে ক্রিকেটারদের ভ্রমণেই সময়ে চলে যেত। সেক্ষেত্রে বছরে খুব বেশি টেস্ট খেলার সুযোগ পেত না দলগুলো। এখনকার মতো যাতায়াত ব্যবস্থা উন্নত হলে অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড-ভারত দশ বছরেই শততম টেস্ট খেলতে পারত!
কিন্তু সেই সব পরিসংখ্যানে নেই। যেগুলো আছে, সেই হিসেবে সবচেয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে শততম টেস্ট খেলার রেকর্ড বাংলাদেশের! আশ্চর্যজনক হলেও এটাই সত্যি। ২০০০ সালের নভেম্বরে ভারতের বিপক্ষে অভিষেক টেস্টে ৯ উইকেটে হেরেছিল বাংলাদেশ। এর ১৬ বছর পর বুধবার লঙ্কানদের বিপক্ষে পি সারা ওভালে নিজেদের শততম ম্যাচটি খেলবে বাংলাদেশ। এই একই ভেন্যুতে শ্রীলঙ্কাও নিজেদের শততম ম্যাচটি খেলেছিল।
১৯৮২ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি কলম্বোর পি সারা ওভালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয়েছিল লঙ্কানদের। ওই ম্যাচটিতে ৭ উইকেটে হেরেছিল লঙ্কানরা। এর ১৮ বছর পর পাকিস্তানের বিপক্ষে শততম টেস্ট খেলেছিল তারা। ২০০০ সালের ১৪ জুন অনুষ্ঠিত এই ম্যাচটি লঙ্কানরা হেরেছিল ৫ উইকেটে।
২৪ বছর বয়সে ২০১৬ সালে জিম্বাবুয়ে তাদের শততম টেস্ট খেলে লঙ্কানদের বিপক্ষে হারারেতে। ওই ম্যাচে ২২৫ রানে হেরেছিল স্বাগতিক জিম্বাবুয়ে। এর আগে ১৯৯২ সালে অভিষেক টেস্টে ভারতের সঙ্গে ম্যাচ ড্র করেছিল তারা। ওই ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল হারারেতে।
দিল্লিতে ভারতের বিপক্ষে ১৯৫২ সালে টেস্ট অভিষেক হয়েছিল পাকিস্তানের। ওই ম্যাচে ইনিংস ও ৫২ রানে হেরেছিল তারা। এর ২৭ বছর পর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মেলবোর্নে ৭১ রানে জিতেছিল পাকিস্তান।
১৮৭৭ সালের ১৫ মার্চ মেলবোর্ন ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম টেস্ট খেলেছিল ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া। তার ৩২ বছর পর ইংলিশরা তাদের শততম টেস্ট খেলে সেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেই। নিজেদের শততম ম্যাচটিতে ১২৬ রানে হার মানে তারা। ম্যাচটি হয় লিডসে।
বর্তমান টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর দল ভারত তাদের প্রথম টেস্ট খেলে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লর্ডসে। ১৯৩২ সালের ২৫ জুন ভারত তাদের অভিষেক ম্যাচে অংশ নেয়। নিজেদের প্রথম ম্যাচটি ইংলিশদের বিপক্ষে ১৫৮ রানে হার মানে ভারত। ৩৫ বছর পর সেই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নিজেদের শততম ম্যাচ খেলে তারা। ১৯৬৭ সালের ওই ম্যাচে ১৩২ রানে হারতে হয়েছিল ভারতকে। ক্রিকেট ইতিহাসের প্রথম টেস্ট ম্যাচটি খেলে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড। ১৮৭৭ সালে প্রথম টেস্টটির ভেন্যু ছিল মেলবোর্নে। অভিষেক ম্যাচে ৪৫ রানের জয়ের ধারা শততম ম্যাচেও ধরে রেখেছিল অস্ট্রেলিয়া। ১৮৮৭ সালে একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ৯ উইকেটে জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। শততম ম্যাচটি খেলতে তাদের সময় লেগেছিল ৩৫ বছর।
অভিষেকের ৩৭ বছর পর শততম টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লর্ডসে অনুষ্ঠিত ওই ম্যাচে ইনিংস ও ৫৮ রানে হেরেছিল ক্যারিবীয়রা। এর পর ১৯৬৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে কিংসটাউনে নিজেদের শততম ম্যাচে ১৭৯ রানে জিতেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
ক্রাইস্টচার্চে ১৯৩০ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৮ উইকেটের জয় দিয়ে টেস্ট ক্রিকেটে যাত্রা শুরু হয়েছিল ব্ল্যাক ক্যাপদের। নিজেদের শততম ম্যাচে অবশ্য জিততে না পারলেও ম্যাচটি ড্র করেছিল তারা। ব্রিজটাউনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১৯৭২ সালে ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল। নিউজিল্যান্ড তাদের শততম ম্যাচটি খেলতে সময় নিয়েছিল ৪২ বছর।
শততম টেস্ট খেলতে সবচেয়ে বেশি সময় নিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। তারা অভিষেকর ৬০ বছরের মাথায় শততম টেস্ট ম্যাচ খেলার সুযোগ পায়। অবশ্য মাঝে নানা কারণে ক্রিকেটে নিষিদ্ধ ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ১৮৮৯ সালে পোর্ট এলিজাবেথে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেক ম্যাচে ৮ উইকেটে হেরেছিল প্রোটিয়ারা। নিজেদের শততম ম্যাচটিতে একই ভেন্যু এবং একই দলের বিপক্ষে তিন উইকেটে হারে ১৯৪৯ সালে।-বাংলা ট্রিবিউন