শনিবার, ৯ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৪ কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
নওগাঁ প্রতিনিধি:
নওগাঁয় যৌতুকের দাবিতে এক গৃহবধূর শরীরে আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামীর বিরুদ্ধে। বর্তমানে ওই গৃহবধূ ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর আগে মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) সকালে নওগাঁ সদর উপজেলার ভবানীপুর মধ্যেপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
গৃহবধূর স্বজনদের অভিযোগ, যৌতুকের টাকা না পেয়ে এবং পরকীয়া প্রেমের বাধা দেওয়াই মারপিট করে স্ত্রীর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়েছেন স্বামী গোলাম রাব্বানী। শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়ে যাওয়ায় তাঁর অবস্থা সংকটাপন্ন। অগ্নিদগ্ধ ফজিলাতুন নেছা (২৫) সদর উপজেলার কোমইগাড়ী এলাকার ফজলুর হোসেনের মেয়ে।
এ ঘটনায় গৃহবধূর বাবা বুধবার (২৮ আগস্ট) ফজলুর হোসেন বাদী হয়ে গোলাম রাব্বানীসহ তাঁর পরিবারের ৪ সদস্যের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। এরপর পুলিশ গোলাম রাব্বানীকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।
ভুক্তভোগীর স্বজন ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, চার বছর আগে গোলাম রাব্বানীর সঙ্গে বিয়ে হয় ফজিলাতুন নেছার। কিন্তু বিয়ের কিছুদিন পরই পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন গোলাম রাব্বানী। বিষয়টি তাঁর স্ত্রী জানতে পারলে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। একপর্যায়ে গোলাম রাব্বানী তাঁর স্ত্রীর কাছে যৌতুক বাবদ সাড়ে ৩ লাখ টাকা দাবি করেন। এরপর থেকেই স্ত্রী ফজিলাতুন নেছাকে মাঝেমধ্যেই শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন গোলাম রাব্বানী ও পরিবারের সদস্যরা।
এ অবস্থায় গত মঙ্গলবার সকালে আবারও যৌতুকের টাকা দাবি করলে স্ত্রীর অস্বীকৃতি জানায়। এ সময় তাঁকে এলোপাতাড়ি মারপিট করে গোলাম রাব্বানী। একপর্যায়ে তাঁর স্ত্রী অজ্ঞান হয়ে গেলে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে প্রতিবেশীরা ফজিলাতুন নেছাকে উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখান থেকে তাঁকে রাজশাহী মেডিকেলে নিয়ে যায় পরিবারের সদস্যরা। এরপর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে ঢাকায় পাঠায় চিকিৎসক।
ফজিলাতুন নেছার বাবা ফজলুর হোসেন বলেন, ‘যৌতুকের জন্য প্রায় আমার মেয়েকে মারপিট করত গোলাম রাব্বানী ও তার পরিবারের সদস্যরা। সে পরকীয়া প্রেমেও আসক্ত ছিল। এর আগে বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু তারা শেষ পর্যন্ত আমার মেয়ের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। এখন সে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।’
এ বিষয়ে নওগাঁ সদর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আ. ওয়াদুদ বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত স্বামী গোলাম রাব্বানীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া ঘটনার সঙ্গে আরও যারা জড়িত আছে তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।#