যৌন হয়রানির বাস্তবতা ও করণীয় বিষয়ে রাবিতে সেমিনার অনুষ্ঠিত

আপডেট: মে ২৫, ২০২৪, ১:৫২ অপরাহ্ণ

সেমিনারে বক্তব্য দেন রাবি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

রাবি প্রতিবেদক :


রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি: বাস্তবতা ও করণীয়’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (২৫ মে) সকাল ১০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে ‘যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ বিষয়ক অভিযোগ কমিটি’র আয়োজনে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. তানজিম জোহরা হাবিবের সভাপতিত্বে সেমিনারে বক্তব্য দেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক সাদেকা হালিম, কমিটির সাবেক সদস্য অধ্যাপক মাহবুবা কানিজ কেয়া ও জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রণব কুমার পান্ডে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, একজন মানুষ যখন তার শুভ চিন্তা গুলো হারিয়ে ফেলে তখন তার মানসিক রোগ হয়, মানসিক সমস্যা হয়। তখন সে তার যৌক্তিক কারণে এ অপরাধগুলো করে। তবে এটা ঘটে যেতে থাকলে ভবিষ্যতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ার সম্ভাবনা আছে।

আমরা দেখি সমাজে যদি কোনো ঘটনা ঘটে, তাহলে তা আইনের আওতায় আনা হয়। কিন্তু তাকে সচেতন করার যে প্রবণতা, তা হয় না। আমরা চাই প্রকৃত অপরাধীরা শাস্তির আওতায় আসুক। তবে তাকে সচেতন করার পরে। তারপরেও যদি তারা অপরাধ করে তাকে সুষ্ঠুভাবে চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা। এমনকি সে হতে পারে পুরুষ, নারী, শিক্ষক, শিক্ষার্থী অথবা কর্মচারী সহ যে কেউ।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক সাদেকা হালিম বলেন, যৌন হয়রানির শিকার মেয়েরা নির্যাতিত হওয়ার পর সমাজে তাদেরকে হেয় করা হয়। শুধু মেয়েদের ক্ষেত্রে নয় ছেলেরাও হয়রানির শিকার হয়ে থাকে। বিভিন্ন তথ্যে উঠে এসেছে যে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রতিনিয়ত বিভিন্নভাবে শিক্ষার্থীরা যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা বলছে, তা নিয়ে তারা কোথাও কোনো অভিযোগ করতে পারছে না।

শিক্ষক কর্তৃক অনেক শিক্ষার্থী যৌন হয়রানির শিকার হলেও তারা অভিযোগ করতে পারেনা। এই পৃথিবীটা অনেক খারাপ জায়গা বিশেষ করে মেয়েদের জন্য। যতই আপনজন হোক না কেন মেয়েদের কে যৌন হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। নারীদেরকে একটা প্লাটফর্ম নিশ্চিত করতেই হবে, যেখানে নারীরা তাদের কথা বলতে পারবে ও তাদের অধিকার নিশ্চিত করতে পারবে।

সভাপতি অধ্যাপক ড. তানজিম জোহরা হাবিব বলেন, শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষক দ্বারা যৌন হয়রানির শিকার হতে পারে। আবার তাদের সহপাঠী দ্বারাও হতে পারে।আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতেযৌন হয়রানির ঘটনার তুলনায় অভিযোগ কম আসে। এই বিষয়ে আমাদের বিচার চাওয়ার প্রবণতা কমে যাচ্ছে। যার ফলে অনেক ঘটনা আমাদের আড়ালেই থেকে যায়।

তিনি তার বক্তব্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন হয়রানি প্রতিরোধের কার্যক্রম তুলে ধরে বলেম, এই বিষয়ে একটি অভিযোগ বক্স স্থাপন করা হয়েছে। যেখানে শিক্ষার্থীরা তাদের নাম পরিচয় ছাড়া অভিযোগপত্র জমা দিতে পারবে এবং আমরা কিছুদিন পর পর খুলে দেখবো কোনো অভিযোগপত্র জমা পড়েছে কিনা।

আমরা হলগুলোতে এধরণের সেমিনার আয়োজন করার পরিকল্পনা করেছি। যদি সেখানে এমন সেমিনার আয়োজন করা যায় তাহলে যৌন হয়রানির অপরাধের মাত্র আরও কমিয়ে আনা সম্ভব। আমরা ইতিমধ্যে সাতটি হলে আয়োজন করার পরিকল্পনা করেছি।
সেমিনারে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ দেড় শতাধিক মানষ উপস্থিত ছিলেন।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ