মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৯ বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ।
দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিন
দেশে এখনও যৌন হয়রানি চলছে। একটা সবসময় ছিল, কখনো লোকচক্ষুর আড়ালে, কখনো প্রকাশ্যে, স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার নারীরা এর শিকার হন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়ার পথে এমনকি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভেতরেও মেয়ে শিক্ষার্থীরা যৌন হয়রানির শিকার হয়। শ্রেণিকক্ষে ঢুকে ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করার প্রতিবাদ করায় এক শিক্ষককে পিটিয়ে দুই হাত ভেঙে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গত রোববার নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের একটি মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটেছে।
এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ইভটিজাররা শ্রেণিকক্ষে ঢুকে এক ছাত্রীকে উত্যক্ত করে। তাদের ভয়ে ওই শিক্ষার্থী শ্রেণিকক্ষের বেঞ্চের নিচে লুকাতে বাধ্য হয়। যৌন হয়রানির শিকার ছাত্রীর সহপাঠীরা সেসময় দুর্বৃত্তদের বাধা দেয়। খবর পেয়ে মাদ্রাসার নুরানি বিভাগের শিক্ষক মো. সোহেল এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা মাদ্রাসার ভেতরে ওই শিক্ষককে মারধর করে। ঘটনার দিন বিকেলে মাদ্রাসা থেকে বাড়ি ফেরার পথে ওই শিক্ষকের ওপর দুর্বৃত্তরা হামলা চালায়।
তখন তার দুই হাত ভেঙে যায়। অতীতেও যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করতে গিয়ে হামলা, মারধরের শিকার হয়ে আহত হয়েছেন অনেকে। এমনকি হত্যার শিকারও হয়েছেন ভুক্তভোগী কোন কোন পরিবারের স্বজনরা। যৌন হয়রানির নেতিবাচক প্রভাব শুধু ভুক্তভোগী নারীর ওপরই নয় বরং তা তার পুরো পরিবারের ওপরই পড়ে। যৌন হয়রানির শিকার নারী শারীরিক লাঞ্ছনার শিকার হতে পারে। এমনকি অ্যাসিড সন্ত্রাস বা হত্যার মতো ঘটনাও ঘটতে পারে।
পাশাপাশি মানসিক নির্যাতনের শিকার হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যৌন হয়রানি নারীজীবনে ভয়ানক অভিজ্ঞতা। নারীজীবনে এর ভয়াবহ নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
দেখা যায় যে, ইভটিজিং অসহনীয় মাত্রায় পৌঁছলে অনেকেই লেখাপড়া বাদ দিয়ে ঘরবন্দী জীবনযাপন করে। অনেকে আবার বাল্যবিয়ের শিকার হয়। কেউ কেউ যৌন হয়রানির কারণে নিরূপায় হয়ে আত্মহত্যার পথও বেছে নেয়।
যৌন হয়রানি ভয়াবহ এক ‘সামাজিক ব্যাধি’। এটা থেকে নারীকে, সমাজকে মুক্তি দিতে হবে। এজন্য প্রশাসনিক তৎপরতার পাশাপাশি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা দরকার। ইভটিজাররা অপরাধ করেও প্রায়। পার পেয়ে যাওয়ার কারণে আবারও যৌন হয়রানির সাথে জড়িয়ে পড়ে। ইভটিজারদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। নোয়াখালীতে যৌন হয়রানির যে অভিযোগ পাওয়া গেছে তা আমলে নিতে হবে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। শুধু নোয়াখালি নয়, দেশের বিভিন্ন এলাকায় যৌন হয়রানির শিকার হোন। অনেকে অভিযোগ করেন। আবার অনেকে করে না। তাই যৌন হয়রানি যারা করে থাকেন্ত মূলক ব্যবস্থাগ্রহণ করতে হবে। যাতে এই ঘটনাগুলোর আগামি না ঘটে। সেদিকে সংশ্লিষ্টদের বেশি নজর দিতে হবে না।