বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৪ বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ।
সোনার দেশ ডেস্ক :
রক্ত জমাট বেঁধে ধমনী অবরুদ্ধ হবে না। ফলে আচমকা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও থাকবে না। আগে থেকেই স্ট্রোক ও হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমাতে নতুন এক টিকা তৈরির দাবি করেছেন চিনের বিজ্ঞানীরা। চিনের নানজিং ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স অ্যান্ট টেকনোলজির গবেষকেরা দাবি করেছেন, এমন এক প্রতিষেধক তৈরি করা হচ্ছে যা হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুর ঝুঁকি কমাবে। যদিও বহু মানুষের শরীরে ট্রায়ালের পরেই টিকাটির কার্যকারিতা সম্পর্কে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যাবে বলেও জানিয়েছেন তাঁরা।
নতুন টিকা অ্যাথেরোসক্লেরোসিসের ঝুঁকি কমাবে। সেটি কী? এ ক্ষেত্রে ধমনীর দেওয়ালের মধ্যে চর্বি, কোলেস্টেরল এবং অন্যান্য পদার্থ জমতে থাকে। সেগুলির স্তর পুরু হয়ে উঠলে তাকে বলা হয় ‘প্লাক’। এর ফলে ধমনী সঙ্কীর্ণ হয়ে রক্তপ্রবাহে বাধা দিতে পারে। এই ব্লকেজ থেকেই স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা থাকে।
প্লাক অনেক সময়ে হঠাৎই ফেটে যায়। তখন অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত আর ধমনী দিয়ে বাহিত হতে পারে না। তখন স্ট্রোকের ঝুঁকি বহু গুণে বেড়ে যায়। চিনা গবেষকদের দাবি, নতুন প্রতিষেধক এই প্লাক গঠনেই বাধা দেবে। ধমনীর ভিতরে রক্ত জমাট বাঁধতে দেবে না।
তা কী ভাবে হবে? গবেষকদের বক্তব্য, পি২১০ নামে এমন এক প্রোটিন আছে যা প্লাক তৈরিতে বাধা দেয়। যাদের শরীরে এই প্রোটিনের আধিক্য আছে, তাদের অ্যাথেরোসক্লেরোসিসের ঝুঁকি কম। নতুন টিকার ডোজ় নিলে সেটি শরীরে এই প্রোটিনের উৎপাদন বাড়াবে। তা ছাড়া শরীরের রোগ প্রতিরোধী কোষগুলিকে (ইমিউন কোষ) উদ্দীপিত করে রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি কমাবে।
পুরুষদের ৩৫ থেকে ৪৫-এর মধ্যে অ্যাথেরোসক্লেরোসিসের ঝুঁকি বেশি থাকে। বিশেষ করে যাঁদের স্থূলতা রয়েছে, অথবা ডায়াবিটিস, উচ্চ কোলেস্টেরল বা হাইপারটেনশন রয়েছে, তাঁদের আশঙ্কা বেশি। মহিলাদের ক্ষেত্রে ১২-৪৫ বছর বয়স পর্যন্ত নিরাপদ পর্ব হিসেবে ধরা হয়ে থাকে।
এ সময়ে ইস্ট্রোজেনের ক্ষরণ বেশি হয় শরীরে যা হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমায়। কিন্তু রজোনিবৃত্তির পরে মহিলাদের হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি থাকে। গবেষকেরা মনে করছেন, ওই সময়ে যদি টিকা দেওয়া যায়, তা হলে রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। তবে আপাতত টিকাটি গবেষণার স্তরেই রয়েছে। মানুষের উপর পরীক্ষা করে তবেই নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যাবে।
তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার অনলাইন