রবিবার, ৪ জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ২১ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
চলতি (মার্চ) মাসেই রোজা শুরু হবে। তার আগেই নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। তবে একাধিক মন্ত্রী আশ্বাস দিয়ে বলেছিলেন যে, এবারের রোজায় নিত্যপণ্যের দাম বাড়বে না। অবশ্য এমন কথা প্রতিবারই রোজার আগে শোনা যায়। বাস্তবতা হচ্ছে, এবারও নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে সাধারণ মানুষের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার অবসান হয়নি। চিনির দাম আরও আগেই বেড়ে গেছে। বেড়েছে ব্রয়লার মুরগি ও ডিমসহ আরও কিছু পণ্যের দাম। দাম কমার কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। দাম যে এক জায়গায় স্থিতিশীল হবে সেটার আশাও করা যাচ্ছে না।
নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে অনেক দিন ধরে। সাধারণ মানুষকে সংসার চালাতে হচ্ছে অনেক হিসাব কষে, কাটছাঁট করে। সরকারের দেয়া স্বল্পমূল্যের পণ্য কেনার জন্য অপেক্ষমাণ মানুষের দীর্ঘ সারিতে দেখা যায় নতুন নতুন মুখ। তারা বলছেন, নিত্যপণ্যের দাম তাদের নাগালের বাইরে চলে গেছে। রোজায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখার কথা প্রতিবারই বলা হয়। সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় যে, দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের পর্যাপ্ত মজুত আছে। কেউ সিন্ডিকেট করে দাম বাড়ালে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথাও বলা হয়।
মুসলিমদের সিয়াম-সাধনার এই মাসকে কেন্দ্র করে অসাধু ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য বাড়ে। বাড়ে পণ্যমূল্যে। বর্তমান উর্ধ্বমূখী বাজার মূল্য ব্যবস্থায় আসন্ন রমজানকে নিয়ে সরকারের অগ্রিম প্রস্তুতির অংশ হিসেবে তাদের কার্যক্রমও শুরু করেছে। রমজানে দেশের ৫ কোটি মানুষকে তেল, চিনি, ডাল, খেজুর ও ছোলা-বুট সাশ্রয়ী দামে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। এই উদ্যোগ অবশ্যই প্রশংসিত। তবে পণ্যপ্রাপ্তির পথটাকে সহজ করাসহ স্বচ্ছতাকে গুরুত্ব দিতে হবে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ডলারের মূল্য বৃদ্ধিসহ নানা অজুহাতে দেশের নিত্যপণ্যের বাজারে অস্থীতিশীলতা বিরাজ করছে। প্রতিদিনই বাড়ছে দাম। নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেছে। রমজানকে ঘিরে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে জনজীবনে। তবে এরইমধ্যে টিবিসির মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করে স্বস্থির বার্তা পৌঁছেছে সরকার। ফ্যামেলি কার্ডের মাধ্যমে স্বল্পমূল্যে এসব পণ্য সরবরাহ করা হচ্ছে। তবে পণ্যপ্রাপ্তির পথটাকে আরও সহজ করার বিষয়ে ভাবতে হবে। এছাড়া নিম্ন আয়ের কেউ যেন বঞ্চিত না হয়, সেদিকে নজর দিতে হবে।
সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রমজান মাস আসার আগেই সবাই যেন হুমড়ি খেয়ে না পড়ে একসঙ্গে কেনার জন্য এ বিষয়টিতেও নজর দেয়া হচ্ছে। আশ^স্থ করা হয়েছে পণ্যপ্রাপ্তির বিষয়টি। কেউ যেন মনে না করে সব কিছু একবারে কিনে জমিয়ে রাখবে, তাহলে একটি চাপ পড়ে যায়। একইসঙ্গে সরকারের পর্যাপ্ত মওজুদের বিষয়টিও নিশ্চিত করা হয়েছে।
এছাড়া ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর তাদের লোকজন নিয়ে বাজার মনিটরিং করছেন এবং করবেন। রমজান মাসে বাজার মনিটরিং বাড়ানোর দাবি সাধারণ মানুষের। সুতরাং স্থানীয় প্রশাসনকে এ বিষয়টিকে অধিক গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে। আর কেউ খাদ্য দ্রব্য মওজুদ করার অপচেষ্টা না করে সে বিষয়েও হুশিয়ারি করেছে সরকার। স্থানীয় প্রশাসন বাজার মনিটরিং এ মাসটিকে ঘিরে বিশেষ পরিকল্পনাও নিতে পারে। যা জনজীবনে স্বস্থির বার্তা দিবে।