রাজশাহীতে অবৈধ পুকুর খনন চলছেই, প্রতিকার হচ্ছে না কেন?

আপডেট: মে ১৩, ২০২৫, ৩:৫৩ পূর্বাহ্ণ

রাজশাহী জেরার সর্বত্রই অবৈধ উপায়ে পুকুর খনন চলেছে। স্থানীয় প্রশাসনকে মাঝেমধ্যেই পুকুর খনন বন্ধে অভিযান ও আইনি ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়। তারপরও অজ্ঞাত কারণে অবৈধ পুকুরখনন বন্ধ হয় না। সাধারণ্যে এ নিয়ে নানা অভিযোগ আছে। অভিযোগের মূল হলো- দায়িত্বশীলদের ম্যানেজ করেই পুকুর খনন করা হয়। এর সাথে স্থানীয় প্রভাবশালীরা ভূমিকা রাখেন। গণমাধ্যমে অবৈধ পুকুর খনন বিষয়ে প্রায়ই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর দু’একটি পুকুর খনন বন্ধে অভিযান পরিচালিত হলেও- সেটাকে লোকদেখানো বলেই ধারণা করা হয়।
সোনার দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, চারঘাট উপজেলায় অভিনব কৌশল অবলম্বন করে তিন ফসলি জমিতে বেপরোয়া পুকুর খনন চলছে। ফসলি জমিকে পুরাতন পুকুর উল্লেখ করে প্রশাসনের কাছ থেকে তা সংস্কারের অনুমতি নিয়ে পুকুর খনন হচ্ছে। এসব অবৈধভাবে পুকর খনন কাজ বন্ধে প্রশাসনকে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোন সুফল পাচ্ছেন না স্থানীয় কৃষকরা। স্থানীয়দের মাধ্যমে জানা যায়, উপজেলার ইউসুফপুর এলাকায় প্রায় ১০ বিঘা তিন ফসলি জমিতে অবৈধ পুকুর খনন করছেন এক ব্যক্তি। তার দাবি, স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি নিয়েই চলছে পুকুর সংস্কার।
এমন ধরনের নানা কৌশলেই অবৈধ পুকুর খনন অব্যাহত আছে। অনেক সময় দিনে পুকুর খনন না করে রাতে খনন কাজ করা হয়। এসব কিছু প্রশাসন বা পুলিশের নজরদারিতে নেই এমনটি বলার সুযোগ নেই। কেননা পুকুর খনন হচ্ছে এবং যে কোনো কৌশলেই হোক না কেন। একটা সময় পুকুরের অস্তিত্ব ঠিকই দৃশ্যমান হয়ে ওঠে, অর্থের বিনিয়োগ হয়। সে ক্ষেত্রে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তেমনটি জানা নেই।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের দুই-তিন ফসলি জমি নানাভাবে অকৃষিকাজে ব্যবহার হচ্ছে। অথচ আইনে কৃষিজমিকে অন্য কাজে ব্যবহারের সুযোগ নেই। কিন্তু সে আইনের কোনো বাস্তবায়ন দেখা যাচ্ছে না। কৃষক পুকুর খননে অধিক মূল্য পায় বলেই পুকুর খননের জন্য লিজ দিতে আগ্রহী হচ্ছেন। কৃষকের ন্যায্যমূল্যও বাজারের ওপর ছেড়ে দিলে হবে না। সরকারকে উদ্যোগী হয়ে মূল্যসহায়তা দিতে হবে। কেননা সিন্ডিকেটের সঙ্গে কৃষক পেরে ওঠেন না। খুব সহজেই মাছ ব্যবসায়ীদের খপ্পরে পড়েন কৃষক।
অবৈধ উপায়ে পুকুর খনন বিষয়টি বন্ধ হচ্ছে না কেন এ বিষয়টি খতিয়ে দেখা দরকার। প্রশাসন ও পুলিশকে উপেক্ষা করে প্রভাবশালীরা কীভাবে এই অবৈধ কাজ চালিয়ে যেত পারছে এবং এই প্রক্রিয়ার মধ্যে কোনো পক্ষে কোন ধরনের দুর্বলতা বা সীমাবদ্ধতা আছে আছে কী না সেগুলো জানা খুবই প্রয়োজন। আইন দিয়েই যে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না সেটাও বেশ পরিস্কার। তবে দেশের খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টি সবিশেষ গুরুত্ব দিয়েই বিবেচনা করতে হবে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ