বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২ শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ।
রাজশাহীতে গেল ১৯ দিনে ১৯৮ জন রোগীর করোনা ভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। করোনা পজেটিভ হয়েছেন ৫১ জন। শতকরা হিসেবে আক্রান্তের হার দাঁড়ায় ২৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ। যা প্রায় ২৬ শতাংশ। আক্রান্তরা নিজ নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এরপরও রাজশাহীতে তেমনভাবে করোনা নিয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনা গড়ে উঠেনি। এতে করে মুষ্ঠিমেয় কিছু ব্যক্তি স্বাস্থ্য সচেতনতা থাকলেও অনেকের তার মানছে না। তাই এ ব্যাপারে প্রথম থেকে নিজেরদের মধ্যে সর্তক হতে হবে। আর করোনা পরীক্ষার জন্য যেসব সামগ্রীর ঘাটতি আছে। সেগুলো চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করতে হবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে। যাতে রাজশাহী শহর নয়, উপজেলা পর্যায়ে করোনার প্রকোপ বাড়তে না পারেন। এমন প্রেক্ষাপটে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, কিট সরবরাহ জোরদার করা এবং হাসপাতালগুলোতে পূর্ণ প্রস্তুতি নেয়া। তাৎক্ষণিক প্রস্তুতি না নিলে আমরা আবারও বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে পারি। করোনা সংক্রমণের সংখ্যা হয়তো এখনো উদ্বেগজনক নয়, কিন্তু এটি বাড়তে শুরু করেছে। কাজেই বিষয়টি উপেক্ষা করা চলে না।
টিকা বিতরণ ও ব্যবহারের বিষয়েও সুস্পষ্ট নির্দেশনা প্রয়োজন। জানা গেছে, দেশে মজুত থাকা ৩১ লাখ ফাইজার টিকার মধ্যে অর্ধেকের বেশি আগস্টের আগে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে যাবে। ভারতসহ আশপাশের দেশে সংক্রমণ বাড়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। সীমান্ত ও বিমানবন্দরগুলোতে স্ক্রিনিং ব্যবস্থা জোরদার করা হলেও দেশের ভেতরে ব্যাপক প্রস্তুতির কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি এখনো নেই। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, নতুন উপধরনের (যেমন জেএন-১, এক্সএফসি, এক্সএফজি) বিরুদ্ধে এই টিকাগুলোর কার্যকারিতা নিয়েও সংশয় রয়েছে। তাই কারিগরি কমিটির দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়া জরুরি, যাতে টিকা কার্যক্রম আবারও কার্যকরভাবে শুরু করা যায় অথবা বিকল্প টিকার বন্দোবস্ত করা যায়। পাশাপাশি জনসচেতনতা বাড়ানো এবং স্বাস্থ্যবিধি মানা বাধ্যতামূলক করা জরুরি। করোনা প্রতিরোধের দায়িত্ব শুধু সরকারের নয়, বরং আমাদের সবার। রাষ্ট্রীয় প্রস্তুতি এবং ব্যক্তিগত সচেতনতাÑএই দুইয়ের সমন্বয়ই হতে হবে আমাদের প্রধান অস্ত্র। তাই সবার উচিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। বাইরে গেলে মাস্ক পরতে হবে, নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে হবে এবং বারবার হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
অন্যদিকে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে শুধু ফগিং বা প্রচার কার্যক্রম যথেষ্ট নয়। বাসাবাড়ির পানির পাত্র, নির্মাণাধীন ভবন, ফুলের টব বা ব্যবহৃত টায়ারের মতো ঝুঁকিপূর্ণ জায়গাগুলো চিহ্নিত করে নিয়মিত পরিদর্শন ও পরিষ্কার করা জরুরি। একইসঙ্গে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে নাগরিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হলে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে।