রাজশাহীতে কেন্দ্রীয় নেতা যা বললেন

আপডেট: জানুয়ারি ২৯, ২০২৩, ১১:৩৮ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক:


রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের জনসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে অনুষ্ঠিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে জনসভায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্র নেতৃবৃন্দরা বক্তব্য দিয়েছেন।

জনসভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, খেলার আগেই বিএনপি পালানো শুরু করেছে, মরণযাত্রা শুরু করেছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে খেলা হবে, খেলা হবে হত্যা-ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে, খেলা হবে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে, খেলা হবে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে। আগামী নির্বাচনে ফাইনাল খেলা। বিএনপির এখনো শিক্ষা হয়নি। আগামী নির্বাচনে আবারো পরাজয়ের মুখ দর্শন করে তারা শিক্ষা পাবে।

তিনি আরও বলেন, আজকের এই জনসভা জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। এই মাঠে যত মানুষ তার থেকে দশগুণ মানুষ বাহিরে আছে, বক্তব্য শুনছে। কিছুদিন আগে বিএনপি এখানে সমাবেশ করেছিল। সেই সমাবেশ আর আজকের সমাবেশ রাজশাহীবাসী এবং সারা বাংলাদেশ দেখছে। বিএনপি বলেছিল, লাল কার্ড দেখিয়ে ১০ ডিসেম্বর সরকারের পতন ঘটাবে। কিন্তু সরকার এখনো আছে। বিএনপি এখন পদযাত্রায়। এটা পদযাত্রা না বিএনপির মরণযাত্রা। এখন তারা সরকারকে পালাতে বলে। পালাবার পথ নাকি খুঁজে পাবে না। ফখরুল সাহেব পালিয়ে আছেন তো আপনারা?

তিনি আরও বলেন, তারেক রহমান আর রাজনীতি করবে না। মুচলেকা দিয়ে পালিয়েছে। আমরা পালাতে জানি না। এই দেশে আমার জন্ম, এই দেশেই মরব এটা বঙ্গবন্ধুর কথা। আমরা পালাব না, আমরা ফখরুল সাহেবের বাসায় গিয়ে উঠবো। আসলে বিএনপি জ্বালায় জ্বালায় মরছে। এখন তাদের জ্বালা হলো মেট্রোরেল। সামনে তাদের আরেক জ্বালা আসছে বঙ্গবন্ধু টানেল। এখন আমরা যেদিকে তাকাই শুধু উন্নয়ন আর উন্নয়ন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনার উন্নয়নের ফলে রাজশাহী এখন ক্লিন সিটিতে পরিণত হয়েছে। আজ রাজশাহী ভাগ্যবান কারণ রাজশাহী শহর বাংলাদেশের সবচেয়ে পরিষ্কার শহর। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে রাজশাহী শহরকে সজ্জিত করা হয়েছে।

তথ্য মন্ত্রী মোহাম্মদ হাসান মাহমুদ বলেন, আজ রাজশাহী মাদ্রাসা মাঠে জনতার যে শ্রোত জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে, জননেত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য শোনার জন্য। এই ময়দানে লাল, নীল, হলুদ আকাশের রংধনু যেন এই মাঠে এসে মিশে গেছে। মাঠের বাহিরে দশ গুন মানুষ বক্তব্য শুনছে। কিছুদিন আগে এখানে বিএনপি সমাবেশ করেছিল। আমাদের নেতারা বলেছিল এই মাঠ ছোট এখানে সমাবেশ না করার জন্য। তবে এটা আমাদের ঐতিহাসিক মাঠ তাই এখানেই আমরা সমাবেশ করেছি। বিএনপিকে দেখানোর জন্যেও আমরা এখানে সমাবেশ করেছি। আজ মাদ্রাসা মাঠ ছাপিয়ে পুরো শহর জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, বিএনপির সমাবেশে দেখেছি এখানে কাথা-কম্বল নিয়ে মশার কয়েল, মশারি নিয়ে খাশি জবাই করে খিচুড়ি পাকিয়ে খেলেছিলো। এটা তাদের জনসভা ছিলো না, এটা ছিলো একটা পিকনিক। বিএনপি সারাদেশে আটটা বিভাগে জনসভার নামে পিকনিক করেছে। আজকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পুরো বাংলাদেশে জনতার সমুদ্রে ঢেউ জেগেছে। এই রাজশাহী শহর গত ১৪ বছরে বদলে গেছে। আগে রাজশাহীতে দুই তিন তলা বিল্ডিং ছিলো আজকে দশ পনেরো তালা বিল্ডিং হয়ে গেছে যা হাতে গুনে শেষ করা যাবে না।

তিনি আরো বলেন, রাজশাহী শহর বদলে গেছে, বিভাগ বদলে গেছে, বদলে গেছে পুরো বাংলাদেশ। বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিলো তখন এখানে বাঙলা ভাই সৃষ্টি হয়েছিল। আমরা বাংলাদেশে যেমন শেখ হাসিনা সুশাসন প্রতিষ্ঠার করেছেন তেমনি রাজশাহী শহরেও সুশাসন প্রতিষ্ঠা হয়েছে। বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন শহরে পরিণত হয়েছে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। বিএনপি বলে পালানোর জায়গা পাবেন না। বিএনপির নেতা তারেক রহমান এখন পালিয়ে কোথায়। মুসলেকা দিয়ে গেছে আর রাজনীতি করবেন না। তিনি পালিয়ে ইংল্যান্ডে অবস্থান করছেন। আমরা নির্বাচনে জয়ী হয়ে বিএনপিকে আর পালানোর জায়গা দিবো না। বিএনপিকে এই দেশের মানুষ আর পালাবার সুযোগ দিবে না।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেছেন, এই বিএনপির আমলে রাজশাহীর বাগমারা বাংলাভাই পুলিশের পাহারায় সশস্ত্র মিছিল করেছিল রাজশাহী শহরের। আমি বলতে চাই কোথায় গেল এই শাসন ব্যবস্থা যখন নিরীহ মানুষদের হত্যা করা হয়েছিল। আজ দেশে আইন আছে, শাসন ব্যবস্থা আছে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। আর সেটাই এখন বিএনপির জন্য মাথা ব্যাথার কারন হয়ে দাড়িয়েছে।

তিনি আরো বলেন, আমরা আজ এই সমাবেশে পরিষ্কার ভাবে বলে দিতে চাই তারা গত ১০ ডিসেম্বর বলেছিল সরকারের পতন হয়ে যাবে কিন্ত সরকারের পতন হয় নাই। বিএনপির পতন হয়েছে। বিএনপি জনগণ থেকে আবারো বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তাদের ধোঁকাবাজি রাজনৈতি মানুষের কাছে পরিষ্কার হয়ে গেছে। বিএনপির আন্দোলন গত ১০ ডিসেম্বরেই শেষ হয়ে গেছে। এভাবে আন্দোলন করে লাভ নাই আমি আহবান জানাবো আগামী সংসদ নির্বাচনে আসুন। নির্বাচনেই ফয়সালা হবে আগামী দিনে এই বাংলাদেশ কার নেতৃত্বে পরিচালিত হবে। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আবারো বিজয় অর্জন করে এই উন্নয়নের ধারা অব্যহত রাখবে।

আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলির সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, আমি আপনাদের একটা কথা বলি শেখ হাসিনার জনসভা করার মাঠ সারা বাংলাদেশের কোথাও নাই রাজশাহীতেও নাই। আজকে এই রাজশাহী নগরে জনতার সাগর হয়ে গেছে শুধু একটি মুখ দেখার জন্য। তার কণ্ঠে দুটি কথা শোনার জন্য। লাখ লাখ মানুষের কাছে আমার শুধু একটাই জিগ্যেসা থাকবে এই শেখ হাসিনা বাবা মা ভাই হারিয়ে ১৯৮১ সালে ১৭ মে বাংলার জনসম্মুখে এসে বলেছিল বাংলার মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য।

তিনি আরো বলেন, বাংলার মানুষের মুখে খাবার যোগানোর জন্য, বাংলার লক্ষ লক্ষ মা বোনদের পড়নের কাপড় দেওয়ার জন্য এই শেখ হাসিনা অন্ধকার বাংলাদেশকে আলোর বাংলাদেশ পরিণত করেছে। এই শেখ হাসিনা তার জীবনের সমস্ত কিছু হারিয়ে জনগণের শেখ হাসিনায় পরিণত হয়েছে। এই শেখ হাসিনা আপনাদের জন্যে এত কিছু করলো বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, মাতৃকালিন ভাতা এবং মুক্তিযোদ্ধা ভাতা সামাজিক নিরাপত্তা বলায় সৃষ্টি করে তিনি সংকটকে মুকাবেলা করেছেন।

আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলির সদস্য জাহাঙ্গীর কবীর নানক বলেন, আজ উন্নয়নের সুবাতাস বইছে, এই উত্তরের জনপদে আজ মানুষ শান্তিতে বসবাস করছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। আমার বোনেরা আজ তাদের প্রধান সমস্যার সমাধান পেয়েছে। সন্তান গর্ভে ধারণ করে দয়াময় জননী মায়ের পরিচয় দিতে পারত না। শেখ হাসিনার সরকার পিতার নামের সাথে মায়ের নামও সন্তানের পরিচয় হিসেবে নির্ধারণ করেছে। বাংলার শ্রমিক যারা আছেন। আমি তাদেরকে জিজ্ঞেসা করতে চাই, বাংলাদেশ আজ ভারত, জাপান, লন্ডন, আমেরিকার সাথে টক্কর দিয়ে যাচ্ছে। আপনারা এই উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে দেশনেত্রীর পক্ষে আছেন।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল বলেন, বিএনপি বলছে রাষ্ট কাঠামো মেরামত করবেন। ওনারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পরেও অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী রাষ্টপ্রতি জিয়া থেকে খালেদা জিয়া ২৮ বছর ক্ষমতায় ছিলো। জিয়া সামরিক বাহিনীর, মুক্তি যোদ্ধাদের হত্যা করেছিলো। তিনি কারফিউ গণতন্ত্র চালু করেছিলো। এই তাদের রাষ্ট মেরামত। বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ যারা আমার বঙ্গবন্ধুতে হত্যা করে বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানিয়েছিল তাদের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু কন্যা তিনি আমাদের অহংকার। আমরা এখন অহংকার করে বলতে পারি বিশ্বের শ্রেষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ