সোমবার, ১৬ জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২ আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি:
রাজশাহীতে শিলচর ভাষা শহীদ দিবস উপলক্ষে দুপুরে ভুবন মোহন পার্ক শহীদ মিনারে শহীদ স্মরণে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেয়া হয়। পরিবর্তনের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সাংবাদিক মুস্তাফিজুর রহমান খান, জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির পরিচালক (লিগ্যাল) অ্যাডভোকেট দিল সেতারা চুনি, মহিলা পরিষদ জেলা সভাপতি কল্পনা রায়, সাধারণ সম্পাদক অঞ্জনা সরকার, পরিবর্তন পরিচালক রাশেদ রিপন, প্রোগ্রাম অফিসার সোমা হাসান, মহিলা পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক নিলুফার আহামেদ, প্রশিক্ষণ গবেষণা ও পাঠাগার সম্পাদক সেলিনা বানু, নির্বাহী সদস্য তাহেরা খাতুন।
এসময় বক্তারা বলেন, ১৯৬১ সালের এইদিনে ভারতের আসাম রাজ্যের শিলচরের এগারো জন বাঙালি মায়ের ভাষা রক্ষার জন্য তথা বাংলায় কথা বলার জন্মগত অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য প্রাণ উৎসর্গ করেছিলেন। ১৯৫২ সালে বাংলাদেশে অর্থাৎ তৎকালীন পূর্ব বাংলায় মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য যে ভাষা আন্দোলন হয়েছিল এবং প্রাণ উৎসর্গ করেছিলেন সালাম, রফিক, সফিক, বরকত ও জব্বার। সেই ভাষা আন্দোলনের নয় বছর পরে বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষার জন্য এমন আরো একটি আন্দোলন হয়েছিল এবং সে আন্দোলেনে একজন নারীসহ এগারোজন বাঙালি বুকের রক্ত দিয়ে প্রাণ উৎসর্গ করেছিলেন আসামের বরাক উপত্যকার শিলচরে, সে কথা আমাদের অনেকের এখনো হয়তো অজানা রয়ে গেছে। পৃথিবীতে একই ভাষার জন্য দুটি আলাদা রাষ্ট্রে এবং আলাদা সময়ে প্রাণ দেয়ার অনন্য ইতিহাস এটি।
প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করেন শিলচর শহরে। রক্তে রঞ্জিত হয়ে যায় শিলচর রেলওয়ে স্টেশন ও আশেপাশের এলাকা এবং শোকে স্তব্ধ ও হতবাক হয়ে যান বরাক উপত্যকার বাঙালিরা। সমগ্র বরাক উপত্যকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। ২০ মে শোকার্ত আন্দোলনকারীরা ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে শহীদদের লাশ নিয়ে শিলচর শহরে স্মরণকালের বৃহত্তম শোকমিছিল বের করে। মায়ের ভাষা বাংলাকে প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে ১১ জন শহীদ হন, তারা হলেন- কমলা ভট্টাচার্য (পৃথিবীর এক মাত্র নারী ভাষা শহীদ), শচীন্দ্র পাল, বীরেন্দ্র সূত্রধর, কানাইলাল নিয়োগী, চন্ডিচরন সূত্রধর, সত্যেন্দ্র দেব, হীতেশ বিশ্বাস, কুমুদরঞ্জন দাস, তারিণী দেবনাথ, সুনীল সরকার এবং সুকুমার পুরকায়স্থ। আসাম রাজ্য সরকার আন্দোলনকারীদের চাপের মুখে শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়েছিল বাংলাকে ২য় রাজ্যভাষা হিসেবে ঘোষণা দিতে।