নিজস্ব প্রতিবেদক:
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে রাজশাহীর ছয়টি আসনে জমে উঠেছে প্রচার-প্রচারণা। দিন যত এগোচ্ছে প্রচারণাও তত বাড়ছে।
রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসন : ভোটারদের উদ্দেশে রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি বলেছেন, আজ থেকে আর পুলিশের ভয়ে কারও ধানখেতে ঘুমানোর দরকার নেই। কারণ, তিনি তাদের পাশে আছেন। আর তিনি সবাইকে নিরাপদে ঘরে ঘুমানোর ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন। তাই আগামী ৭ তারিখে তার ট্রাক প্রতীকে ভোট দিতে হবে।
শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে গোদাগাড়ীর মাটিকাটা ইউনিয়নে ভোটের প্রচারণায় গিয়ে খেতুর গ্রামের এক বাড়ির বারান্দা দাঁড়িয়ে ভোটারদের উদ্দেশে তিনি এ কথা বলেন।
মাহি বলেন, ‘১৫ বছর তো একটা পুরুষ মানুষ ছিলেন এমপি হিসেবে। এই এলাকার নাকি অনেক নিরীহ মানুষ, যারা মাঠে চাষবাস করে, তাদেরকে হয়রানি করা হয়। কথা কি সত্য?’ তখন নারীরা চিৎকার দিয়ে বলেন, ‘সত্য’। ভিড়ের ভেতর থেকে এক নারী বলে ওঠেন, ‘রাইতে শুইতে পারছে না বাসাতে।’
এ সময় মাহি বলেন, ‘আজকে এখানে যিনি ওসি সাহেব আছেন, আমি তার সঙ্গে কথা বলব। অনুরোধ করব যে, যার নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নাই, এমন কোনো লোককে, এমন কোনো কৃষক ভাইকে যেন তারা হয়রানি না করে। আমি সবার উদ্দেশে বলে যাচ্ছি, আপনাদের ভাই কিংবা কারও স্বামী এ রকম ভয় পাচ্ছে যে এই বুঝি তাকে ধরে নিয়ে যাবে। আপনাদের ভাই, স্বামী, বাবাকে বলে দেন-আজকে থেকে তারা যেন নিশ্চিন্তে ঘুমায়। কারণ, মাহিয়া মাহি তাদের পাশে আছে।’
এ সময় নারীরা হাততালি দিতে থাকেন। মাহি বলেন, ‘আমি আজকে ওসি সাহেবকে বলে যাচ্ছি। আজকে সবাই সবার বাবা, ভাই, স্বামীকে বলে দেন-তারা যাতে বাসায় চলে আসে। ধান খেতে ঘুমানোর আর দরকার নাই।’ এ সময় এক নারী ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলে ওঠেন। অন্য নারীরা হাততালি দিতে থাকেন।
মাহি এ দিন মাটিকাটা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে গিয়ে নিজের ট্রাক প্রতীকে ভোট চান। অন্যান্য এলাকার মতো এই ইউনিয়নের নারীরাও মাহিকে দেখেই ছুটে আসেন। ঢালিউডের তারকাকে বাড়ির সামনে দেখে খুশি হন তারা। অনেকে এই নায়িকার সঙ্গে ছবি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
এই আসনে আলোচনার শীর্ষে অবস্থান করছেন কাঁচি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য গোলাম রাব্বানী। কাক ডাকা ভোর থেকে রাব্বানী ভোটারদের দ্বারেদ্বারে গিয়ে কাঁচি প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করছেন। রাব্বানী শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে গোদাগাড়ী উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়ন ইউপির দরগা এলাকাসহ বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় গণসংযোগ করেন কাঁচি প্রতীকের প্রার্থী গোলাম রাব্বানী। বিকেলের দিকে বাসুদেব পুর ইউনিয়ন ইউপির বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় ভোটারদের দ্বারেদ্বারে গিয়ে কাঁচি প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করেন রাব্বানী।
এদিকে কাঁচি প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে সাবেক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন তানোর থানা মোড়ে নির্বাচনী অফিস উদ্বোধন করেন। এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় নির্বাচনী কমিটি গঠন করেন মুন্ডুমালা পৌর মেয়র সাইদুর রহমান।
শনিবার সকাল থেকেই উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তে কাঁচি প্রতীকের ভোট প্রার্থনা করে গণসংযোগ করেন সাবেক যুবলীগ নেতা কাঁচি প্রতীকের প্রার্থীর ছোট ভাই শরিফুল ইসলাম। একই দিন তানোর পৌর এলাকার বিভিন্ন স্থানে কাঁচি প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে ভোট প্রার্থনা করে গণসংযোগ করেন পৌর যুবলীগ সভাপতি রাজিব সরকার হিরো, সাবেক যুবলীগ নেতা বাচ্চু মোল্লা, সাবেক ছাত্র লীগ নেতা সোহেল রানা, মৃদুল কুমার ঘোষ।
বৃহস্পতিবার দুপুরের পরে বিএনএমের নোঙ্গর প্রতীকের প্রার্থী শামসুজ্জোহা বাবু তানোর পৌর সদরসহ বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেছেন। ভোটারেরা বলছেন, ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার ইচ্ছে ছিল না। কিন্তু গোলাম রাব্বানীর জন্য ভোট কেন্দ্রে যেতে হবে। কারণ তিনি তৃনমুল জনগণের নেতা, তার কাছে গিয়ে সব রকম কথাবার্তা বলা যায়। তারমত ব্যক্তি যখন ভোটের মাঠে রয়েছেন অবশ্যই কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিব।
কাঁচি প্রতীকের প্রার্থীর আস্থাভাজন সাবেক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, গোলাম রাব্বানীকে ভোটের মাঠে না আসার জন্য নানা ধরনের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তানোর গোদাগাড়ী ভোটারদের দোয়ায় ও মহান আল্লাহর ইচ্ছায় রাব্বানী ভোটের মাঠে আছেন। আমরা কখনো ভাবিনি ভোটারদের মনে এত পরিমান স্থান করে নিয়েছেন রাব্বানী। শুধু তানোরে না গোদাগাড়ীতেও ব্যাপক জনপ্রিয় তা রাব্বানীর। আসা করছি আগামী ৭ তারিখে কাঁচি প্রতীক বিপুল ভোটে বিজয় লাভ করবে ইনশাআল্লাহ।
কাঁচি প্রতীকের প্রার্থী গোলাম রাব্বানী এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, মহান আল্লাহর ইচ্ছায় আদালতের মাধ্যমে প্রার্থীতা ফিরে পেয়েছি। ভোটারদের মাঝে যে রকম সাড়া দেখছি, তাতে করে বিজয়ী হব ইনশাআল্লাহ। তিনি আরো বলেন, আমি প্রার্থীতা ফিরে না পেলে হয় তো ভোটারেরা কেন্দ্র যেত কিনা সন্দেহ ছিল। কিন্তু ভোটারদের সাব কথা আপনার জন্যই ভোট কেন্দ্রে যাব।
অপরদিকে, এই আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন-বিএনএম এর সংসদ সদস্য প্রার্থী শামসুজ্জোহা বাবু শনিবার দিনভর তানোর উপজেলায় গণসংযোগ করেছেন। তানোর উপজেলা সদর থেকে শুরু করে তিনি বিভিন্ন ইউনিয়নে যান এবং ভোটারদের মাঝে প্রচারপত্র বিতরণ করেন। এসময় বাবু বলেন, মানুষ পরিবর্তনের প্রত্যাশা জনাচ্ছেন। সেই প্রত্যাশা পূরণে সবস্তরের মানুষ তাকে আশ^স্ত করছেন। স্রোতের বিপরীতে হাঁটলে বাধা-বিপত্তি আসবেই। তবে এখন পর্যন্ত তেমন বড় ধরণের কোনো বাধা আসেনি। সরকার, নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে আন্তরিকতা ও সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে।
প্রচারকালে বাবু ভোটারদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমি বড়দের সম্মান করতে জানি, ছোটদের স্নেহ করতে জানি। আমার এই শিক্ষা আজীবন কাজে লাগাবো। আমি সংসদ সদস্য হলে এই এলাকার প্রতিটি মানুষ যথাযথ সম্মান পাবে। নিজের আত্মসম্মান নিয়ে সবাই বাঁচবে। শিক্ষকরা যথাযথ সম্মান পাবেন। টাকার বিনিময়ে শিক্ষক নেয়ার প্রবনতা বন্ধ হবে। ব্যবসায়ীরা স্বাচ্ছন্দে ব্যবসা করবে। চাঁদাবাজি হবে না। কৃষক বাঁজবে নিজের সম্মান নিয়ে। আমার কাছে মানুষ হিসেবে সবাই মর্যাদা পাবেন। এখানে ভেদাভেদ করার কিছু নাই।
শনিবার বিকেলে তানোর উপজেলা সদরে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে বিএনএম এর প্রার্থী শামসুজ্জোহা বাবু বলেন, অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে মানুষের দরজায় দরজায় ভোট চেয়ে যাচ্ছি। জনগণের ওপর ভরসা রেখে প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছি। এদিন তানোর উপজেলা নিজ কার্যালয় থেকে প্রচারণা শুরু করে বিভিন্ন এলাকায় যান।
রাজশাহী-২ (সদর) আসন: রাজশাহী-২ আসনে ১৪ দল মনোনিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ফজলে হোসেন বাদশা বলেছেন, স্বাধীনতার পর থেকে রাজশাহীবাসীর যতটুকু অর্জন; তা একমাত্র নৌকার বিজয়ের কারণেই সম্ভব হয়েছে। ২০০৮ থেকে ১৮ পর্যন্ত আপনারা নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছেন বলেই আজকে উন্নত ও সমৃদ্ধ নগরী পেয়েছেন। আগামী ৭ তারিখের নির্বাচনে যদি আবারও আপনারা নৌকার প্রতি আস্থা রাখেন; তবে আগামী দিনের রাজশাহী হবে নতুন প্রজন্মের।
শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকাল চারটায় নগরীর ঝাওতলা মোড় থেকে শুরু করে লক্ষীপুর, মেডিকেল, ঘোষপাড়া পর্যন্ত গণসংযোগকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। বাদশার গণসংযোগে স্থানীয় পর্যায়ের হাজারো নারী পুরুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।
নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বাদশা বলেন, জামায়াত-বিএনপি জোট সরকারের আমলে রাজশাহী ছিল অত্যন্ত অবহেলিত একটি নগরী। এখানকার বিএনপি নেতারা এ অঞ্চলের উন্নয়ন বরাদ্দ নিয়ে চলে যেত বগুড়ায়। তারা একের পর এক এই অঞ্চলের সকল কল-কারখানা বন্ধ করে দেয়। দুর্নীতি-লুটপাটে জর্জরিত তৎকালীন বিএনপি নেতাদের প্রতি সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ার কারণেই আজকের প্রতিষ্ঠিত রাজশাহী। জননেত্রী শেখ হাসিনা সবসময় রাজশাহীর উন্নয়নে নিজের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। তার কাছে আপনাদের জন্য যা চেয়েছি; তাই পেয়েছি। যারা শেখ হাসিনার প্রতি আস্থা রাখতে পারেনি, তাদেরকে অবশ্যই সাধারণ জনগণ প্রত্যাখ্যান করবে। আপনাদের আমি আশ্বস্ত করতে চাই, আপনারা আবারও শেখ হাসিনার নৌকার প্রতি ঐক্যবদ্ধ থাকলে রাজশাহীর জন্য আরও যা যা করা দরকার; সবকিছুই করা হবে।
এদিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী-২ (সদর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশার কাঁচি প্রতীকের পক্ষে নির্বাচনী প্রচার মিছিল ও পথসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শফিকুর রহমান বাদশা সমর্থকগোষ্ঠীর ব্যানারে এই নির্বাচনী প্রচার মিছিল ও পথসভা অনুষ্ঠিত হয়।
শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) নগরীর আলুপট্টি মোড় হতে প্রচার মিছিলটি শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে একই জায়গায় পথসভা অনুষ্ঠিত হয়।
পথসভায় সভাপতিত্ব করেন আইনজীবী এন্তাজুল হক বাবু। পথসভায় বক্তব্য রাখেন, কাঁচি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা, ব্যবসায়ী আবদুর রাজ্জাক, আকবর আলী, আশরাফ আলী, আজিজুল হক প্রমুখ।
পথসভায় স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিকুর রহমান বাদশা বলেন, রাজশাহীতে সংসদ সদস্য হিসেবে যে কাজ সে কাজ করেননি বর্তমান এমপি। রাজশাহীর উন্নয়নে সবচেয়ে বেশি অবদান জাতীয় চারনেতার অন্যতম শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের সুযোগ্য পুত্র রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের। বর্তমান এমপি শুধু বসে থেকে দেখে গেছেন। লিটন ভাই রাজশাহী শহরের সব উন্নয়ন করেছেন। লিটনের ভাইয়ের উন্নয়ন তার বলে দাবি করছেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, আমি সবার সহযোগিতা নিয়ে রাজশাহী শহরকে স্মার্ট নগরী হিসেবে গড়ে তুলবো। প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার ভিশন বাস্তবায়ন করা হবে।
এদিকে শনিবার বেলা ৩টায় রাজশাহী মহানগরীর ০৮ নং ওয়ার্ডের ঘোষপাড়ার মোড়, সিপাইপাড়া ও কাজিহাটা এলাকায় ও রাত ৮টায় ০১ নং ওয়ার্ডের কোর্ট বাজার, কোর্ট বাজার হিন্দুপাড়া, কোর্ট নিউমার্কেট ও গুড়িপাড়া এলাকায় গণসংযোগ করেন রাজশাহী-২ আসনের কাঁচি প্রতীকের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা। উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের সহ-সভাপতি সৈয়দ শাহাদত হোসেন, শিল্প ও বানিজ্য বিষয়ক সম্পাদক ওমর শরীফ রাজিব, সদস্য নজরুল ইসলাম তোতা, হাফিজুর রহমান বাবু, ০৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জানে আলম খান জনি, রাজপাড়া থানা আ’লীগের সাংগঠনিক-সম্পাদক শাহ আলম, সদস্য বাবু, আরিফ, ০৮ নং ওয়ার্ড আ’লীগ সভাপতি রবিউল ইসলাম রবি, ০১ নং ওয়ার্ড আ’লীগ সভাপতি আব্দুর রউফ, বাংলাদেশ খ্রিষ্টান এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সমর চৌধুরী, নগর কৃষক লীগের সদস্য কুদ্দুস খান, নগর যুবলীগের সাবেক-সাংগঠনিক সম্পাদক মুকুল শেখ, ০৮ নং ওয়ার্ড মহিলা আ’লীগ সভাপতি মনিরা রহমান, হড়গ্রাম বাজার কমিটির সভাপতি খোকন,প্রমুখ।
শনিবার রাত ৭টায় রাজশাহী মহানগরীর সাহেব বাজার এলাকায় রাজশাহী-২ আসনের কাঁচি প্রতীকের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা-কে জয়যুক্ত করার লক্ষ্যে গণসংযোগ করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল। উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সদস্য ইপফাৎ আরা কামাল সহ মহিলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।
রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসন : গণসংযোগকালে আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থী আসাদুজ্জামান আসাদের সাথে বিএনএমের প্রার্থী মতিউর রহমান মন্টুর সৌজন্য সাক্ষাৎ হয়েছে। শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে মোহনপুর উপজেলার কেশরহাটে গণসংযোগকালে উভয় প্রার্থীর সাক্ষাৎ হয়। এসময় তারা একে ওপরের সাথে হাত মেলান এবং কুশল বিনিময় করেন। সাক্ষাৎকালে বিএনএম প্রার্থী মন্টু আওয়ামী লীগের প্রার্থী আসাদের দলীয় লোকজনের কার্যক্রম নিয়ে সমস্যার কথা বলেন। আসাদ এসব সমস্যার সমাধানও দেন।
এসময় আসাদ বলেন, আমরা একসাথে রাজনীতি করা ও পথ চলা মানুষ। এক সাথেই নির্বাচনি পথ চলতে চাই। নির্বাচনে সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ বজায় রাখতে চাই। নির্বাচনে মাঠে এক সাথেই প্রচার চালাতে চাই। আমার পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা থাকবে। পরে দুই প্রার্থী একে অপরের সাথে কোলাকুলি করেন।
রাজশাহী-৩ আসনে বিএনএম এর প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মন্টু। তিনি রাজশাহী জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। কিছুদিন আগে বিএনএমএ যোগ দেয়ায় তাকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়।
রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া- দুর্গাপুর) আসন: ঈগল প্রতীক নিয়ে প্রচারে নেমে জনগণের কাছে গিয়ে ভোট চাচ্ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ ওবায়দুর রহমান। রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দূর্গাপুর) আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী কেন্দ্রীয় উপকমিটির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এবং রাজশাহী জেলা যুবলীগের সাবেক সহসভাপতি ওবায়দুর রহমান প্রতীক পাওয়ার পর থেকেই পুঠিয়া-দূর্গাপুরের মাঠ চোষে বেড়াচ্ছেন গণসংযোগ করে। তারই ধারাবাহিগতাই শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে মেঘলা আবহাওয়া ও শীতকে অপেক্ষা করে দূর্গাপুর পৌর এলাকার বিভিন্ন স্থানে জনপ্রিয়তাই থেকে জনসংযোগকালে ফুলের মালা গলায় পরিয়ে দিয়ে ভালবাসায় সিক্ত করে বরন করে নেন ওবায়দুর রহমানকে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা পরিষদের সদস্য আবুল কালাম আজাদ বাচ্চু, দুর্গাপুর উপজেলা সৈনিকলীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল লতিফ মেধা, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের মন্ডল, দুর্গাপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আলমগীর হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান আতিক, দুর্গাপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাকিল খান, সাধারণর সম্পাদক আতিকুর রহমান রিপন, দুর্গাপুর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সালিম উদ্দিন, দুর্গাপুর পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার, পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মেহেদী হাসান মন্ডলসহ শতাধিক নেতাকর্মী জনসংযোগে ঈগল প্রতীকের প্রার্থী ওবায়দুর রহমান সাথে সাধারণ মানুষের মাঝে ভোট প্রার্থনা করেন।
রাজশাহী-৬ (বাঘা- চারঘাট) আসন : বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য ও চারঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাহেনুল হক রায়হান কাঁচি প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করেন। শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) তিনি উপজেলার মনিগ্রাম ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করেন। সাবেক এই সংসদ সদস্যকে পেয়ে অনেকেই আবেকে আপ্লুত হয়ে পড়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়তে দেখা গেছে।
এ সময় তার সাথে ছিলেন বাঘা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক এ্যাড. লায়েব উদ্দিন লাভলু, বাঘা পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আক্কাছ আলী, বাঘা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুব লীগের সাধারণ সম্পাদক মোকাদ্দেস আলী, পাকুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মেরাজুল ইসলাম মেরাজ, ছাত্র লীগের সাবেক নেতা সুরুজ্জামান, রবিউল ইসলাম রবি প্রমুখ।
অন্যদিকে চারঘাটে স্বতন্ত্র প্রার্থী রাহেনুল হকের কাঁচি প্রতীক মার্কার গণসংযোগ করেছেন। শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় চারঘাট উপজেলার চারঘাট ইউনিয়নের নির্বাচনী এলাকায় মুংলী বাজার, হুজারপাড়া, পরানপুর, কাঁকড়ামারি ও বড়বড়িয়া এলাকায় জনগনের সাথে মতবিনিময় ও বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট প্রার্থনা করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন ভায়ালক্ষীপুর সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শওকত হোসেন বুলবুল, সরদহ সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মতিউর রহমান তপন,জালাল উদ্দিন বিশ্বাস সহ নেতাকর্মীবৃন্দ।
এছাড়া এ আসনে জাতীয় পার্টির শামসুদ্দিন রিন্টু (লাঙ্গল), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) মহসিন আলী (আম), বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের (বিএনএম) আবদুস সামাদ (নোঙ্গর), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (ইনু) জুলফিকার মান্নান জামী (মশাল) প্রতীক নিয়ে ভোট করছেন।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি’র ছেলে সাদমান শাহরিয়ার। শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) বাঘা ও চারঘাট উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে নৌকার জন্য ভোট প্রার্থনা করেন তিনি। এছাড়া তিনি বিভিন্ন ইউনিয়নে নির্বাচনী প্রচারণা সভায় যোগ দেন।
সভায় তিনি বলেন, আমি গত বছর বিদেশ থেকে দেশে এসেছি। ১৫ বছর ধরে আমার বাবা আপনাদের সাথে আছেন। সুখে-দুঃখে সব সময় পাশে পেয়েছেন। আমার বাবা আপনাদের এলাকায় যে উন্নয়ন করেছেন, তা আপনারা জানেন। তাই আমার আহবান বাবাকে নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম নৌকায় ভোট প্রার্থনার পাশাপাশি ছেলের জন্য সবার কাছে দোয়া চান।