রাজশাহীতে প্রতি বছর বাড়ছে শব্দদূষণ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহীতে কয়েক বছর ধরেই বাড়ছে শব্দদূষণ। মহানগরীর মিশ্র এলাকায় গত ৫ বছরে শব্দদূষণ বেড়েছে দেড় গুন। রাজশাহীর শব্দদূষণের মাত্রা ঢাকার কাছাকাছি। পরিবেশ অধিদফতরের তথ্যমতে, রাজশাহী নগরীতে সবচেয়ে বেশি শব্দদূষণ হয় বিন্দুর মোড় ও রেলগেটে। প্রতি ১০ মিনিটে হর্ন বাজানো হয় ৫৭৩ বার।

গত ৫ বছর ধরে এই স্থানে বছরে দুইবার শব্দের মান পরীক্ষা করে আসছে বরেন্দ্র পরিবেশ উন্নয়ন সংস্থা। তাদের ভাষ্য, সড়কে পরিবহন আর আবাসিকের নির্মাণ শব্দ দূষণের অন্যতম নিয়ামক। যা মানব শরীরের জন্য ক্ষতিকর। শনিবার (১০ মে) পঞ্চমবারের মতো এই পরীক্ষা চালানো হয়। পরীক্ষায় নেতৃত্ব দেন বরেন্দ্র পরিবেশ উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি ড. প্রকৌশলী জাকির হোসেন খান।

পরীক্ষায় রাজশাহী নগরীর রেলগেট ও বিন্দুর মোড় এলাকায় চার বছরে শব্দের মাত্রা বেড়েছে ৭ ডেসিবেলের বেশি। ২০২২ সালে এই চত্বরে শব্দের মাত্রা ছিল ৯০ ডেসিবেল। শনিবার একই স্থানে শব্দের মাত্রা মেপে পাওয়া গেছে ৯৭ দশমিক ২ ডেসিবেল।

বরেন্দ্র পরিবেশ উন্নয়ন সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল্লাহ জানান, ২০২২ ও ২০২৩ সালে রেলগেট এলাকায় শব্দের মাত্রা পরীক্ষায় ৯০ ডেসিবেল পর্যন্ত পাওয়া যায়। এরপরের বছর ২০২৪ সালে এখানে পাওয়া যায় ৯৬ দশমিক ৩ ডেসিবেল। এবার একই স্থানে পাওয়া গেল ৯৭ দশমিক ২ ডেসিবেল।

সভাপতি ড. প্রকৌশলী জাকির হোসেন খান বলেন, শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ আইন-২০০৬ অনুযায়ী মিশ্র এলাকায় শব্দের মাত্রা ৬০ ডেসিবল থাকার কথা। অথচ রেলগেট এলাকায় শব্দের মাত্রা অতি তীব্র এবং মানের চেয়েও দেড়গুন বেশি। সাহেববাজার, ভদ্রা, তালাইমারী ও লক্ষ্মীপুরেও শব্দের মাত্রা ৭৫ ভাগ বেশি। শব্দদূষণের অন্যতম কারণ যানবাহনের শব্দ ও হর্ন, বিভিন্ন নির্মাণ কাজ। দিনরাত উচ্চ শব্দে অতিষ্ঠ মানুষ। অতিরিক্ত শব্দ স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাকসসহ মানব স্বাস্থ্যের নানা অসুখের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ রকিবুল হাসান ইবনে রহমান বলেন, শব্দদূষণের মাত্রা কমাতে পুলিশ সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এখন যেহেতু দূষণের মাত্রা অনেক বেশি সেকারণে পুলিশ যথাযথ আইন প্রয়োগ করবে।

রাজশাহী পরিবেশ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক কবির হোসেন বলেন, শব্দদূষণের মাত্রা কমাতে নানা উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। ২০২২ সালে জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচির প্রতিবেদনের তথ্যে, সারা বিশ্বের নগরীগুলোর মধ্যে শব্দ দূষণের তালিকায় চতুর্থ স্থানে ছিল রাজশাহী। আমরা বিভিন্ন সচেতনামূলক কার্যক্রম করে আসছি। চালকদেরও অযথা হর্ন বাজানোতে নিরুসাহিত করা হচ্ছে।