নিজস্ব প্রতিবেদক:
করোনা সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিতে সীমান্তবর্তী জেলা রাজশাহী। রাজশাহী বিভাগের মধ্যেও এ জেলা সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। গত একদিনে এই বিভাগে ৪৬৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ১৫৬ জনই রাজশাহী জেলার বাসিন্দা।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের পিসিআর টেস্টে বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) ২৪ ঘণ্টায় ৯৪ জনের টেস্ট করা হয়। এরমধ্যে ৪২ জনের করোনা পজিটিভ আসে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজের আরটিপিসিআর ল্যাবে এদিন ২৮১ জনের করোনার পরীক্ষা করা হয়। এরমধ্যে ৯৭ জনের করোনা পজিটিভ আসে। এই দুইটি টেস্টে করোনা শনাক্তের হার ৪০ দশমিক ১৬ শতাংশ। এদিন ১০৪ টি বেডের বিপরীতে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিলো ৪৩ জন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়।
বিভাগজুড়ে এ পর্যন্ত ১ লাখ ১ হাজার ৬১৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এরমধ্যে গত একদিনেই করোনা ধরা পড়েছে ৪৬৮ জনের। এদিন রাজশাহীতে ১৫৬, বগুড়ায় ১৩৭, পাবনায় ৭২, নওগাঁয় ৪১, সিরাজগঞ্জে ৩০, নাটোরে ১৯, জয়পুরহাটে ৯ এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। বিভাগে এ পর্যন্ত ১ হাজার ৬৯৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৬৮৮ জন মারা গেছে বগুড়ায়। এছাড়া রাজশাহীতে ৩২৭, নাটোরে ১৭৫, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১৫৯, নওগাঁয় ১৪৫, সিরাজগঞ্জে ৯৬, জয়পুরহাটে ৬৫ এবং পাবনায় ৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিভাগজুড়ে ৯৬ হাজার ৮১০ জন করোনা আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়েছেন। করোনা নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ১৮ হাজার ৩৪০ জন।
এদিকে, বুধবার (১৯ জানুয়ারি) রাজশাহীর দুইটি ল্যাবে ৩৭১ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার ছিলো ৪০ দশমিক ১৬ শতাংশ। এর মধ্যে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ৯৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করে করোনা ধরা পড়েছে ৫২ জনের। একই দিনে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ২৭৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৯৭ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়।
আগের দিন মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) রাজশাহীর দুইটি ল্যাবে ২৩৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৬৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়। এদিন নমুনা পরীক্ষার অনুপাতে শনাক্তের হার ছিল ২৮ দশমিক ২৭ শতাংশ। এছাড়াও সোমবার (১৭ জানুয়ারি) রাজশাহীর দুইটি ল্যাবে শনাক্তের হার ৩০ দশমিক ৬৯ শতাংশ। রোববার (১৬ জানুয়ারি) দুইটি ল্যাবে শনাক্তের হার ৩৩ দশমিক ১৯ শতাংশ ও শনিবার (১৫ জানুয়ারি) জেলায় করোনার নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার ছিলো ৯ দশমিক ৬৫ শতাংশ। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকেই করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি বলে জানাচ্ছেন রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তর।
এ বিষয়ে বিভাগীয় (স্বাস্থ্য) পরিচালক ডা. হাবিবুল আহসান তালুকদার জানান, মহামারীর বৈশিষ্ট্যই এমন। একটা ঢেউয়ের শেষে নতুন ঢেউয়ের আবির্ভাব। এই ঢেউ কখনো বাড়ে; আবার কমে। তবে এক পর্যায়ে এটা কমতে থাকে। এবারও করোনার নতুন ঢেউয়ে শুধু রাজশাহী নয়; পুরো বাংলাদেশেই সংক্রমণ বাড়ছে। আর প্রস্তুতি পূর্বের মতোই। তবে ভ্যাক্সিনেশনকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
রাজশাহী অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) কল্যাণ চৌধুরী জানান, সংক্রমণ প্রতিরোধে জেলা প্রশাসন বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে জনসচেতনাকে। একারণে সচেতনতামূলক কার্যক্রম বেশি পরিচালনা করা হচ্ছে। নিয়মিত মাস্ক বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়া বাধ্যতামূলকভাবে মাস্কের ব্যবহার নিশ্চিতে দু’ বেলা ভ্রাম্যমান টিম অভিযান পরিচালনা করছে।