রবিবার, ৪ জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ২১ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাজারে বেড়েছে মুরগির দাম। এক সপ্তার ব্যবধানে রাজশাহীতে ব্রয়লার ও সোনালী মুরগির প্রতিকেজিতে দাম বেড়েছে ২০ থেকে ২৫ টাকা করে। প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগিতে ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকা দরে। একইভাবে সোনালী মুরগির প্রতিকেজিতে ২০ থেকে ২৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা কেজিতে। শুধু মুরগিই নয়, বেড়েছে সবজি ও মাছের দামও। প্রতিকেজি সবজিতে বেড়েছে ৩ থেকে ৫ টাকা।
ব্রয়লার মুরগি ক্রেতা সুমনা বেগম জানান, গত শুক্রবার প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি কিনেছি ২২০ টাকা। এক সপ্তার ব্যবধানে সেই মুরগি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকা দরে। এতে দাম হলে মানুষ কিভাবে মুরগি খাবে। পণ্যের দাম বেড়েছে, কিন্তু মানুষের উপার্জন বাড়েনি। সরকারকে বাজার ব্যবস্থাপনার দিকে নজর দেওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।
নগরীর বিনোদপুর বাজারের মুরগির ব্যবসায়ী মোশাররফ হোসেন বলেন, এখন সাধারণ খামারিদের মধ্যে ব্রয়লার মুরগির ব্যবসা নেই। ব্রয়লার মুরগির পুরো ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে বিভিন্ন কোম্পানি। মুরগির দাম বাড়াতে কোম্পানিগুলো চাহিদার অর্ধেক মুরগি বাজারে বিক্রি করে। এতে করে বাজারে মুরগির সঙ্কট দেখা গিয়েছে। বাজারে চাহিদার তুলনায় মুরগি কম থাকায় বেড়ে যাচ্ছে দাম। অন্যদিকে, মুরগির দাম বাড়ায় কমেছে ক্রেতাও। কিছুদিন আগে যে মানুষগুলো তিন কেজি মুরগি কিনতেন। তারা এখন দুই কেজি মুরগি কিনছেন।
অন্যদিকে, বাজারে বেড়েছে সবজির দাম। গত এক সপ্তার ব্যবধানে বিভিন্ন সবজির প্রতি কেজিতে বেড়েছে ৩ থেকে ৫ টাকা। সবজি ব্যবসায়ী মো. শাহিন বলেন, বাজারে প্রতিকেজি করলো বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজি। সিম বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, বেগুন ৩০ টাকা, গাজর ৪০ টাকা, পুইশাক ২৫ থেকে ৩০ টাকা, ফুলকপি ২৫ থেকে ৩০ টাকা, লাউ ২৫ থেকে ৩০ টাকা, আলু ১৫ থেকে ২০ টাকা, টমেটো ২৫ থেকে ৩০ টাকা, শশা ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, পেঁপে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, কাঁচা মরিচ ১০০ টাকা, পেঁয়াজ ৩০ টাকা, রসুন ৬০ থেকে ১০০ টাকা, আদা ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৯০ টাকা দরে।
সবজি ক্রেতা হৃদয় ইসলাম বলেন, রমজান আসন্ন। প্রতি বছরই তো রমজান মাস আসা উপলক্ষে দাম বাড়ে। এবারও দাম বাড়বে, তার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। ব্যবসায়ীরা আগে থেকেই দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। পুরো বাজার এক শ্রেণির সিডিকেটের দখলে চলে গেছে। তারা কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করে জিনিসপত্রের দাম বাড়াচ্ছে। এখানে ক্রেতাদের কিছুই করার নেই। সরকার বাজার মনিটরিং না করলে কখনই দাম স্বাভাবিক হবে না।
অন্যদিকে, বাজারে বেড়েছে মাছের দাম। রুই মাছ বিক্রি হয়েছে প্রতিকেজি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, কাতলা মাছ ২৭০ থেকে ৩২০ টাকা, তেলাপিয়া ১৭০ থেকে ২৪০ টাকা, সিলভার ১৮০ থেকে ২৬০ টাকা, বোয়াল ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা, ইলিশ ১ হাজার থেকে ১২০০ টাকা, কই মাছ ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা, মাগুর মাছ ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, পাবদা মাছ সাড়ে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, মিরকা মাছ ১৮০ থেকে ২৪০ টাকা, টেংড়া মাছে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
মাছ ক্রেতা রবিউল ইসলাম বলেন, বিক্রেতারা মাছের দাম বেড়িয়ে চাচ্ছে। গত সপ্তার তুলনায় এই সপ্তায় বিভিন্ন মাছের দামে ১০ থেকে ১৫ টাকা করে বেশি চাচ্ছেন ক্রেতারা। মাছ বিক্রেতারা বলছেন, বাজারের মাছের সরবরহ কম। তারা বেশি দামে মাছ কিনছেন।
নগরীর সাহেব বাজারের মাছ বিক্রেতা আবদুল মোমিন জানান, সবজি, মুরগির দাম বেড়েছে। মাছ উৎপাদনে বেড়েছে খরচ। তাই আড়তেই মাছ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। সেখানে বেশি দাম কিনতে হচ্ছে আমাদের।