সোমবার, ২৯ মে, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহীতে হঠাৎ করেই কেজিপ্রতি ২০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। সরকার ১৯০ টাকা দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার পরেও ব্রয়লার নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভোক্তারা। এদিকে সব ধরনের মাছেরও দাম বেড়েছে কেজিতে ৫০ থেকে ১০০ টাকা। এমন অবস্থায় রাজশাহী ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের পক্ষে শুক্রবার (৩১ মার্চ) কোনো অভিযান পরিচালনা করতে দেখা যায়নি বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
নগরীতে বাজার করতে আসা আফজাল হোসেন বলেন, কদিন আগেই সরকার ব্রয়লার মুরগির দাম নির্ধারণ করে দিল ১৯০ টাকা। দুদিনের ব্যবধানে শুক্রবার বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২১০ টাকায়। প্রকাশ্যে এমন অনিয়ম হলেও কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যাচ্ছে না বাজার তদারককারী প্রশাসনকে। একই অভিযোগ করে শফিকুল ইসলাম বলেন, শুক্রবারে বাজারে ভোক্তা অধিকারের দেখা মেলে না। অথচ প্রত্যেক সপ্তাহে বাজারে অস্থিরতা দেখা দেয় এই শুক্রবারেই।
মুরগি ব্যবসায়ী সালাম বলেন, খাবারের দাম ও বাচ্চার দাম বাড়ার কারণে ফার্মের মালিকরা মুরগির দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। ফার্ম থেকেই খুচরা ব্যবসায়ীরা কিনছেন ১৯০ টাকা কেজিতে। এ কারণে খুচরা ব্যবসায়ীদের বেশি দামে মুরগি বিক্রি করতে হচ্ছে।
রাজশাহী বিভাগীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের উপপরিচালক মোহাম্মদ সেলিম বলেন, সরকার ব্রয়লার মুরগির দাম ১৯০ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে। দাম বেশি রাখার সুযোগ নেই। আমাদের একটি টিম বাজারে রয়েছে। বিষয়টি দেখা হচ্ছে। তবে বিকাল ৩টা পর্যন্ত সাহেববাজারে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের কোনো অভিযানিক টিমের দেখা মেলেনি।
রাজশাহীর বাজারে কমেছে মাছ ও সয়াবিন তেলের দাম। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে সবজি ও চালের দাম। শুক্রবার (৩১ মার্চ) বৃষ্টি ভেজা দিনে ছুটির দিনে রাজশাহীর সাহেব বাজারে ক্রেতার উপস্থিতি কম ছিল। তবে সোনালী ও লেয়ার মুরগির বলে ব্যবসয়ীরা জানায়।
শুকবার বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে প্রতিকেজি ২১০ টাকা, সোনালী মুরগি ৩০০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৯০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে বলে জানান, বিক্রেতা মো. মামুন। এছাড়া বাজারে কমেছে সুয়াবিন (খোলা) তেলের দাম। প্রতি লিটারে চার টাকা কমে ১৬৬ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তায় ছিল ১৭০ টাকা প্রতিকেজি।
সাহেব বাজারের সবজির দাম আগের মতই ছিল। তবে দুই একটা সবজির দামে কম বেশি হয়েছে বলে জানিয়েছে ব্যবসায়ীরা। এদিন বাজারে প্রতিকেজি সজনার ডাটা ৬০ থেকে ৭০ টাকা, শশা ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, লাউ প্রতিটি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, লাল ও সবুজ শাক ১০ থেকে ১৫ টাকা প্রতি আটি, আলু ২৫ থেকে ৩৫ টাকা, পটল ৬০ থেকে ৭০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, বেগুন ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। ক্রেতা নয়ন বলেন, রমজান মাস আসলে সবজিনিসের দাম বাড়ে। এবছও বেড়েছে। তবে প্রথম রোজারে দিকে। এখন একটু কম সবজির দাম বলে মনে হচ্ছে।
সাহেব বাজারের মাছ বিক্রেতা আবদুল মোমিন জানান, বাজারে মাছের দাম কম। সেই সাথে ক্রেতাও কম। অনেকেই মাছ বিক্রি করতে পারেনি ক্রেতার অভাবে। সপ্তা ব্যবধানে মাছের কেজিতে কমেছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। তবে নদীর মাছের দাম আগের মতোই রয়েছে।
তিনি বলেন, বাজারে আকার ভেদে রুই মাছ বিক্রি হয়েছে প্রতিকেজি ২২০ থেকে ২৮০ টাকা, সিলাভার কাপ ১৩০ থেকে ১৮০ টাকা, মিরকা মাছ ১৬০ থেকে ২২০ টাকা, কাতলা ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, জাপানি মাছ ১৮০ থেকে ২২০ টাকা, মাগুর মাছ ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, চাষের কই ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, দেশী কই ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, টেংড়া ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, জিওল ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা। নদীর পাবদা প্রতিকেজি ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, ইলিশ ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
সাহেব বাজারের এপি চাল ভান্ডারের বিক্রেতা শ্রী মিলন প্রসাদ জানান, চালের দাম গত সপ্তার মতোই রয়েছে। চালের দাম কমেও নি বাড়েও নি। বাজারে আঠাশ চাল প্রতিকেজি ৬২ থেকে ৬৪ টাকা, জিরা ৭০ থেকে ৭২ টাকা, শরনা ৫০ থেকে ৫৪ টাকা, জিরাশাল ৭০ টাকা, বাসমতি ৮৫ টাকা, সিদ্ধ পায়জাম ৭৬ টাকা, সিদ্ধ কাটারি ভোট (নতুন) ১২০ টাকা, কাটারি নাজিরশাল ৮৫ টাকা, আউশ ৫৫ টাকা, কালিজিরা ১১০ টাকা, চিনি গুড়া ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, রাধুনী ৯০ টাকা, কাটারি ভোগ আতপ ৮৫ টাকা, বিরিয়াননির লংগ্রেন বাসমতি ২৬০ টাকা, তামলি আতপ ৬৫ টাকা, মোটা আতপ ৫৫ টাকা প্রতিকেজি বিক্রি হয়েছে।