বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
মাঘের বাঘ কাঁপানো শীত কাকে বলে! একেবারে হাড়ে হাড়ে জানান দিচ্ছে রাজশাহীবাসীর। দৈনিক সোনার দেশসহ সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে ‘জনজীবন বিপর্যস্থ’। লাফ দিয়ে কমছে তাপমাত্রা। শুক্রবার সর্বনি¤œ তাপমাত্রা পরিমাপ করা হয় ৯ দশমিক দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস। পরদিন শনিবারই সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৫ দশমিক এক ডিগ্রি সেলসিয়াস। হঠাৎ করেই মানুষের বেসামাল অবস্থা।
আবহাওয়া দফতরের তথ্য মতে, সর্বশেষ ২০১৩ সালে রাজশাহীতে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা পরিমাপ করা হয় ৪ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে ২০১১ সালে তাপমাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। একবিংশ শতাব্দীর মধ্যে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ছিল ২০০৩ সালে। ওই সালে জানুয়ারিতে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা পরিমাপ করা হয় ৩ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এখন উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, এই তাপমাত্রা কি আরো কমবে? তাপমাত্রা কমার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে দুর্ভোগ। বাড়ছে শীতকালীন রোগের উপসর্গ। প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্রের অভাবে হাড় কাঁপানো এই ঠান্ডায় ছিন্নমূল মানুষ বড়ই অসহায়। গরম বস্ত্রের অভাব তো বটেই জীবনের দায়টাই এখন তাদের কাছে খুবই বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। দাঁতে দাঁত চেপে শীত নিবারণের চেষ্টা করা যায় কিন্তু সেইসাথে পেটের জ্বালা মেটাবে কী করে? জীবন-জীবিকাই অসহায় ছিন্নমূল মানুষগুলোর এই মুহূর্তের বড় সমস্যা। কাজ পাচ্ছে না শ্রমজীবী মানুষ। শীতের তীব্রতা বাড়লে কাজের অভাব দেখা দেয়। দিন মজুরদের কাজে লাগান হয় না। শীতের প্রভাবে প্রয়োজন না হলে মানুষ বাড়ি থেকে বেরুতেও চায় না। এর প্রভাব পড়ে রিক্সা- অটো রিকক্সা চালক এবং উন্মুক্ত দোকানিদের ওপর। হাসপাতালগুলোতেও শীতের তীব্রতায় ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিসসহ শীতকালীন রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। বিশেষ করে শিশুরা এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। ছিন্নমূল মানুষের জন্য তীব্র শীত দুর্যোগের মতই।
জেলা প্রশাসনসহ স্বেচ্ছাসেবি সংগঠনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যেই শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু হয়েছে। কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অল্প। আন্যান্য সামাজিক সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর এখনই সময় শীতার্ত মানুষেদের পাশে গিয়ে দাঁড়ানো। শুধু শীতবস্ত্রেই চলবে নাÑ হতদরিদ্র যারা আছে তাদেরকে খাদ্য সহায়তা দেয়াও প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। শীতের তীব্রতার সাথে সাথে শ্রমবাজারের ব্যাপক অবনতি হয়েছে। দিন মজুর যারা কাজ পাচ্ছে না, তাদের শুধু শীতবস্ত্র দিলেই চলবে না। তাদের জীবন-জীবিকার বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দেখা দিয়েছে। জেলা প্রশাসনসহ সমাজের বিত্তবান মানুষেরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে অসহায় মানুষগুলোর পাশে দাঁড়াতে পারেন। আর্ত মানবতার সেবায় এগিয়ে আসার এখনি সময়।