নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহী জেলার ছয়টি আসনে নৌকার প্রার্থীদের মনোনয়ন চূড়ান্ত করেছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। মনোনয়ন প্রাপ্তদের তালিকায় রয়েছে সাবেক ও বর্তমান সংসদ সদস্যরা। তবে বাদ পড়েছেন বর্তমান তিনজন সংসদ সদস্য। নতুন করে জায়গা হয়েছে একজন সাবেক সংসদ সদস্যসহ তিন জনের। তবে মনোনয়ন প্রত্যাশী চার নারীর কেউই পাননি কোনো আসন। এরআগে জেলার ছয়টি আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন ৪১ জন।
মনোনয়ন পেলেন যারা- রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনে সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী, রাজশাহী-২ (সদর) আসনে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল, রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনে তাহেরপুর পৌরসভার মেয়র অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ, রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনে সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ দারা, রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনের সংসদ-সদস্য ও পররাষ্ট্র-প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসন থেকে নৌকার মাঝি হয়েছেন সংসদ সদস্য প্রতিমন্ত্রী ওমর ফারুক চৌধুরী। তিনি ২০০৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। এই সালের শেষের দিকে শিল্প প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। পরের নির্বাচনে জয়যুক্ত হয়ে তিনি টানা তৃতীয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া ওমর ফারুক চৌধুরী রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পরবর্তিতে তিনি সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।
রাজশাহী-২ (সদর) আসনে নৌকার মাঝি হয়েছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল। তিনি বর্তমানে নগর আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। এই আওয়ামী লীগ নেতা দীর্ঘদিন সহসভাপতি পদে ছিলেন।
রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনে নৌকা পেয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ। বর্তমানে তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। এছাড়া ছাত্রজীবনে রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের দুই বার করে চারবার সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তিতে তিনি জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ছিলেন।
পরে রাজশাহী জেলা যুবলীগের দুই বার করে চারবারের সাধরণ সম্পাদক ও সভাপতি ছিলেন। এছাড়া তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পরে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। অপরদিকে, এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে তিনি ছাত্র রাজনীতি করতে গিয়ে কারাবরণ করেন। এসময় তিন মাস জেলে ছিলেন আসাদ।
রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনে তাহেরপুর পৌরসভার মেয়র অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ। রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপকমিটির সদস্য।
রাজশাহী-৫ আসন থেকে নৌকার মাঝি হয়েছে সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল ওয়াদুদ দারা। দারা ২০১৯ সালের ৮ ডিসেম্বর রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক হন। এরআগে ২০০৮ ও ২০১৪ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন দারা। তিনি পুঠিয়া আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। পরবর্তিতে তিনি রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ছিলেন।
রাজশাহী-৬ আসনে নৌকার মাঝি হয়েছে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। তিনি রাজশাহী-৬ আসনের আসনে ২০০৮ সালে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরবর্তিতে তিনি একই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য, শিক্ষা ও দারিদ্র বিমোচন বিষয়ক ‘অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপ’, জলবায়ু পরিবর্তন, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং এমডিজি, পিআরএসপি, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা এবং বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরাম সংক্রান্ত ‘অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের’ ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
প্রসঙ্গত, নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ তারিখ আগামী ৩০ নভেম্বর। ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হবে। ১৭ ডিসেম্বর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ। ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ। আর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ৭ জানুয়ারি।