বুধবার, ২৬ মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১২ চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজশাহীর প্রন্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন জন্য কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিকদের সংগঠন বাংলাদেশ রিজেনারেশন ট্রাস্ট (বিআরটিইউকে)।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় সংগঠনটির সদস্যরা রাজশাহী প্রেসক্লাবে মিট দ্যা প্রেস অনুষ্ঠানে এই আগ্রহ প্রকাশ করেন। বাংলাদেশ রিজেনারেশন ট্রাস্টের সাধারণ সম্পাদক ব্রিটিশ নাগরিক নাজির আলী তাদের বর্তমান বিভিন্ন কার্যক্রম সাংবাদিকদের সামনে উপস্থাপন করেন।
এসময় তিনি জানান, বাংলাদেশ রিজেনারেশন ট্রাস্ট (বিআরটিইউকে) বিগত ১৫ বছর ধরে যুক্তরাজ্যে নিবন্ধিত একটি দাতব্য সংস্থা, যা বাংলাদেশের উন্নয়নে নিবেদিত। এর স্থানীয় অংশীদার জিইউএসএস-এর সহযোগিতায় শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও জীবিকা ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগের মাধ্যমে দেশের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন গ্লােবাল উন্নয়ন সেবা সংস্থা জিইউএসএস- এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম।
তারা উল্লেখ করেন স্বাস্থ্য খাতে উখিয়া, কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য স্বাস্থ্য কেন্দ্র, যেখানে সংকটাপন্ন জনগোষ্ঠীর জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়। জরুরি স্বাস্থ্য শিবির, যা মৌলিক চিকিৎসা সেবার সহজপ্রাপ্যতা নিশ্চিত করে। শিক্ষা ক্ষেত্রে বিশ্বনাথ, সিলেটে নারী কলেজ প্রতিষ্ঠা, যা মেয়েদের উচ্চশিক্ষা লাভের সুযোগ বৃদ্ধি করছে।
স্টুডেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম (এসআইপি), যেখানে ২৫ জন মেধাবী কিন্তু দরিদ্র শিক্ষার্থীকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়। জীবিকা ও আশ্রয়ে নোয়াখালীতে গৃহনির্মাণ ও আশ্রয় প্রকল্প, যেখানে বন্যা কবলিত মানুষদের নিরাপদ বাসস্থান দেওয়া হচ্ছে। হাঁস খামার প্রকল্প, যা টেকসই আয়ের সুযোগ সৃষ্টি করছে।
রাজশাহীতে ক্ষুদ্র ব্যবসা ও নারী ক্ষমতায়ন কর্মসূচি, যা উদ্যোক্তা সৃষ্টির পাশাপাশি লিঙ্গ সমতা নিশ্চিত করছে।জরুরি ও মৌসুমি সহায়তা খাদ্য সামগ্রী, শিক্ষা উপকরণ ও খেলাধুলার সামগ্রী বিতরণ, যা সুবিধাবঞ্চিতদের প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করে। নলকূপ স্থাপন, যা বিশুদ্ধ পানীয় জলের সহজপ্রাপ্যতা নিশ্চিত করে। পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি ভাসানচরে ওয়াস কর্মসূচি, যা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য নিরাপদ স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি সুবিধা নিশ্চিত করছে।
গত ১০ বছর ধরে, বিআরটিইউকে সংস্থা বাংলাদেশের চ্যারিটি ও হেরিটেজ ট্যুরের অগ্রদূত হিসেবে কাজ করছে। এই কর্মসূচির মাধ্যমে ২য় ও ৩য় প্রজন্মের ব্রিটিশ বাংলাদেশিদের নিজ মাতৃভূমির ইতিহাস, ঐতিহ্য ও প্রকল্পগুলোর সাথে সংযুক্ত করার সুযোগ দেওয়া হয়।
শুধু সাংস্কৃতিক সংযোগ নয়, এই উদ্যোগের মাধ্যমে প্রবাসী বাংলাদেশিদের (এনআরবি) ও অভিবাসীদের সাথে দেশের একটি স্থায়ী সংযোগ গড়ে তোলা হয়, যাতে তারা বাংলাদেশের উন্নয়নমূলক প্রকল্পে অবদান রাখতে পারেন।
প্রতি বছর, উদার দাতারা প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার ইউরো থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার ইউরো অনুদান প্রদান করেন, যা জিইউএসএস কর্তৃক সরাসরি বাস্তবায়ন করা হয়। এই জীবন পরিবর্তনকারী প্রচেষ্টার মাধ্যমে, বিআরটিইউকে সংস্থা বাংলাদেশের মানুষের জীবনমান উন্নয়ন, মৌলিক সেবার প্রবাহ নিশ্চিতকরণ ও দীর্ঘ মেয়াদি উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।