নিজস্ব প্রতিবেদক:
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার এক মাসের মাথায় মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমলেও তা এখন ভোক্তাদের জন্য সহনীয় নয়। এ অবস্থায় ভোগ্যপণ্যের দামে লাগাম টানতে সরকার নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে সম্প্রতি কৃষি বিপণন অধিদফতর ডিম এবং ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে। কিন্তু মূল্য নির্ধারণের তিনদিন পার হলেও রাজশাহীর বাজারে এর কোনো প্রভাব দেখা যায়নি।
নতুন মূল্য অনুযায়ী প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৭৯ টাকা ৫৯ পয়সা, সোনালি মুরগি ২৬৯ টাকা ৬৪ পয়সা এবং প্রতিটি ডিমের দাম নির্ধারণ করা হয় ১১ টাকা ৮৭ পয়সা। এতে প্রতি ডজন ডিমের দাম পড়ে ১৪২ টাকা ৪৪ পয়সা।
ব্যবসায়ীদের ভাষ্য, অতিরিক্ত গরম ও বৃষ্টিপাতের কারণে পোলট্রি খাতের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এতে ওইসব এলাকায় মুরগি ও ডিমের সরবরাহ কমেছে। তাছাড়া ভারত থেকে আসা ডিম চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত না হওয়ায় এ পণ্যের দাম কমছে না।
রাজশাহী মহানগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া যায়। বাজারগুলোতে সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে বেশি দামে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৮০-১৯০ ও সোনালি মুরগি ২৭০-২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া ফার্মের মুরগির প্রতিটি ডিম ১৩ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। অর্থাৎ প্রতি ডজন বাদামি ডিম ১৫৬ ও সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে প্রতি ডজন ১৫০ টাকার মধ্যে।
সাহেববাজারের পাইকারি ডিম বিক্রেতা আবদুল আজিজ বলেন, খামারিরা আমাদের চাহিদা মতো ডিম সরবরাহ করতে পারছে না। এছাড়াও খাবারের দাম অতিরিক্ত গরম আর বৃষ্টির অজুহাতে তারা আমাদের থেকে ডিমের দাম বেশি নিচ্ছে। তাই আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। কিন্তু দাম নির্ধারণ করা আগে আমাদের সাথে বসতে হতো। এজন্য সফলতার মুখ দেখা যায় না।
সাহেববাজারের মুরগি ব্যবসায়ী আবদুল মতিন বলেন, পাইকারি বাজারে দাম কমাতে না পারলে খুচরা বাজারে দাম বেঁধে দেওয়ার কোনো প্রভাব পড়ে না। কারণ বেশি দাম দিয়ে কিনে কেজি প্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা লস দেওয়া খুচরা ব্যবসায়ীদের পক্ষে সম্ভব নয়।
এর আগেও বিভিন্ন সময় বাজার নিয়ন্ত্রণে ভোগ্যপণ্যের দাম বেঁধে দিতে দেখা যায় সরকারকে। সর্বশেষ গত বছর সেপ্টেম্বরে আলু, ডিম ও দেশি পেঁয়াজের দাম বেঁধে দিয়েছিল সরকার। কিন্তু ওই দাম বাজারে কার্যকর হয়নি। এর জন্য বাজার মনিটরিংকে দায়ী করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, ভোগ্যপণ্যের মূল্য বেঁধে দেওয়া পর্যন্ত সরকারি সংস্থাগুলোর প্রধান কাজ। এরপর বাজার মনিটরিংয়ে তাদের খুব একটা দেখা যায় না।
সিনিয়র কৃষি বিপণন কর্মকর্তা অপু সরকার বলেন, বাজারে নির্ধারিত দামে মুরগি হচ্ছে। ১৭৯ টাকা ব্রয়লার মুরগি নির্ধারণ হলেও বাজারে ১৭৫ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও সোনালী মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৬০ টাকাতে। খুচরা পর্যায়ে ডিম নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। আমরা নিয়মিত বাজার মনিটরিং করছি। তবে বেশি দাম দেখলে তা আমরা জেলা প্রশাসনকে জানায়।