রাজশাহীর ৪২ প্রার্থীর ৩১ জনই হারিয়েছেন জামানত

আপডেট: জানুয়ারি ৯, ২০২৪, ১২:১০ পূর্বাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক:


রাজশাহীর ছয়টি সংসদীয় আসনের ৪২ জন প্রার্থীর মধ্যে চিত্র নায়িকা মাহিয়া মাহিসহ ৩১ জন প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। রাজশাহীর জেলা প্রশাসক ও নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা শামীম আহমেদ স্বাক্ষরিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাথমিক বেসরকারি চূড়ান্ত ফলাফল বিশ্লেষণ করে এই তথ্য পাওয়া গেছে।

এছাড়া কোনো প্রার্থী মোট প্রদত্ত বৈধ ভোটের আট ভাগের এক ভাগেরও কম ভোট পান তাহলে তার জামানত বাজেয়াপ্ত হবে বলে রাজশাহীর রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে।

রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা ১১ জন প্রার্থীর মধ্যে চিত্র নায়িকা মাহিয়া মাহিসহ ৯ জনেরই জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। এই আসনে মোট ভোট পড়েছে ২ লাখ ১২ হাজার ২৯৬টি।

আসনটিতে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন নৌকার প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরী। তিনি পেয়েছেন ১ লাখ ৩২ হাজার ৫৯২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কাঁচি প্রতীকের প্রার্থী মো. গোলাম রাব্বানী ৯২ হাজার ৪শো১৯ ভোট পেয়েছেন।

এই আসনে জামানত হারানো প্রার্থীদের মধ্যে ট্রাক প্রতীকের প্রার্থী চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি পেয়েছেন ৯ হাজার ৯ ভোট, বেলুন প্রতীকের শাহনেওয়াজ আয়েশা আখতার জাহান ডালিয়া পেয়েছেন ২ হাজার ৭১৮ ভোট, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক জোটের ‘ছড়ি’ প্রতীকের বশির আহমেদ পেয়েছেন ৩৩৫ ভোট, স্বতন্ত্রের ঈগলের প্রার্থী মো. আখতারুজ্জামান পেয়েছেন ২০২ ভোট, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের টেলিভিশন প্রতীকের প্রার্থী আল-সাআদ পেয়েছেন ৬০৩ ভোট, তৃণমূল বিএনপির সোনালী আঁশ প্রতীকের জামাল খান দুদু পেয়েছেন ২৭৩ ভোট, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোনের নোঙর প্রতীকের প্রার্থী শামসুজ্জোহা পেয়েছেন ১ হাজার ৯১১ ভোট এবং জাতীয় পার্টির শামসুদ্দিন লাঙল প্রতীকে পেয়ছেন ৯৩৮ ভোট পেয়েছেন।

রাজশাহী-২ (সদর) আসনে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা ৭ জনের মধ্যে ৫ জনই জামায়াত হারিয়েছেন। আসনটির সর্বমোট প্রদত্ত বৈধ ভোটের সংখ্যা ৯০ হাজার ৪৪১। এখানে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন কাঁচি প্রতীকের (স্বতন্ত্র) প্রার্থী অধ্যক্ষ মো. শফিকুর রহমান বাদশা। তিনি পেয়েছেন ৫৪ হাজার ৯০৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ফজলে হোসেন বাদশা পেয়েছেন ৩১ হাজার ৪৬৬ ভোট।

আনসটিতে জামানত হারানোরা হলেন- জাসদের মশাল প্রতীকের প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল মাসুদ সিদ্দিকী শিবলী পেয়েছেন ১ হাজার ৬২ ভোট, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তি জোটের ‘ছড়ি’ প্রতীকের ইয়াসির আল বিন হাবিব পেয়েছেন ৩১০ ভোট, বিএনএফ এর নোঙর প্রতীকের কামরুল হাসান পেয়েছেন ২২৮ ভোট, বাংলাদেশ কংগ্রেসের ‘ডাব’ প্রতীকের প্রার্থী পেয়েছেণ মারুফ শাহরিয়ার ৪০৯ ভোট এবং জাতীয় পার্টির ‘লাঙল’র প্রার্থী সাইফুল ইসলাম স্বপন পেয়ছেন ১ হাজার ৮১৬ ভোট।

রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনে ৬ জন প্রার্থীর মধ্যে ৫ জন প্রার্থীর জামানত হারিয়েছেন। আসনটিতে মোট ভোট পড়েছে ১ লাখ ৬৬ হাজার ৩১০। তবে আসনটি থেকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন নৌকার প্রার্থী মোহা. আসাদুজ্জামান আসাদ। তিনি পেয়েছেন ১ লাখ ৫৪ হাজার ৯০৯ ভোট। হারানোরা হলেন- বিজয়ীর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির লাঙলের প্রার্থী আব্দুস সালাম খান পেয়েছেন ৫ হাজার ২৭৪ ভোট, বাংলাদেশ জাতীয়বাদী আন্দোলনের ‘নোঙর’ প্রতীকের প্রার্থী একেএম মতিউর রহমান পেয়েছেন ৩ হাজার ৫২৩ ভোট, বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের ‘ছড়ি’ প্রতীকের এনামুল হক পেয়েছেন ৮১০ ভোট, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের ‘টেলিভিশন’র প্রার্থী বজলুর রহমান পেয়ছেন ৭৯৯ ভোট এবং ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ‘আম’ প্রতীকের সাইদুর রহমান পেয়ছেন ৯৯৫ ভোট।

রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বি ৬ জন প্রার্থীর মধ্যে ৪ জনই জামানত হারিয়েছেন। আসনটিতে মোট ভোট পড়েছে ১ লাখ ৬৪ হাজার ৮৯২। এরমধ্যে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত নৌকার প্রার্থী অধ্যক্ষ মো. আবুল কালাম আজাদ পেয়েছেন ১ লাখ ৭ হাজার ৯৮৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কাঁচি প্রতীকের প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার মো. এনামুল হক পেয়েছেন ৫৩ হাজার ৮১২ ভোট।

আসনটিতে জামানত হারানোরা হলেন- জাতীয় পার্টির ‘লাঙল’র আবু তালেব পেয়েছেন ১ হাজার ৫১৮ ভোট, বিএনএম’র ‘নোঙর’ প্রতীকের সাইফুল ইসলাম রায়হান পেয়েছেন ১৪৯ ভোট, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ‘আম’ প্রতীকের জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না পেয়েছেন ৫৬০ ভোট এবং স্বতন্ত্রের ‘মাথাল’ প্রতীকের বাবুল হোসেন পেয়েছেন ৮৭০ ভোট।

রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনেও ৬ জনের মধ্যে ৪ জন প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন। আসনটিতে মোট ভোট পড়েছে ১ লাখ ৭৩ হাজার ৪৩৩টি। এরমধ্যে নৌকার প্রার্থী মো. আব্দুল ওয়াদুদ দারা ৮৬ হাজার ৯১৩ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঈগলের মো. ওবায়দুর রহমান পেয়েছেন ৮৩ হাজার ৮৬২ ভোট।

এই আসনে জামায়ত হারানোরা হলেন- জাতীয় পার্টির ‘লাঙ্গল’ প্রতীকের আবুল হোসেন পেয়েছেন ১ হাজার ৫৩১ ভোট, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির ‘একতারা’ প্রতীকের আলতাফ হোসেন মোল্লা পেয়েছেন ৪৪০ ভোট, গণফ্রন্টের ‘মাছ’ প্রতীকের মখলেসুর রহমান পেয়েছেন ৩২৩ এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলেনের ‘নোঙর’ প্রতীকের শরিফুল ইসলাম পেয়েছেন ৩৬৪ ভোট পেয়েছেন।

রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনটিতেও ৬ জন প্রার্থীর ৪ জনই জামানত হারিয়েছেন। এই আসনে মোট বৈধ ভোট পড়েছে ১ লাখ ৭৭ হাজার ৭৪৯। আসনটিতে নৌকার প্রার্থী মো. শাহরিয়ার আলম ১ লাখ ১ হাজার ৫৯৯ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী কাঁচি প্রতীকের মো. রাহেনুল হক রায়হান পেয়েছেন ৭৪ হাজার ২শো৭৮ ভোট।

আসনটিতে জামানত হারানো প্রার্থীরা হলেন- জাসদের ‘মশাল’ প্রতীকের জুলফিকার মান্নান জামী পেয়েছেন ২০২ ভোট, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের ‘নোঙর’ প্রতীকের আব্দুস সামাদ পেয়েছেন ২৯০ ভোট, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ‘আম’ প্রতীকের মহসিন আলী পেয়েছেন ৪৮২ ভোট এবং জাতীয় পার্টির ‘লাঙ্গল’ প্রতীকের শামসুদ্দিন রিন্টু পেয়েছেন ৮৯৮ ভোট।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ