রাজশাহীর ৬টি আসন থেকেই নির্বাচন করবেন বিএনপির সাবেক নেতারা!

আপডেট: নভেম্বর ২৫, ২০২৩, ১২:০৫ পূর্বাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক:


রাজশাহী ৬টি আসন থেকে নির্বাচন করবেন বিএনপির সাবেক নেতারা। তারা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সমর্থনে কিংবা স্বতন্ত্র্র প্রার্থী হয়েও নির্বাচন করবেন। এর মধ্যে দু’জন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) থেকে প্রার্থী হচ্ছেন বলে নিশ্চিত করেছেন দলটির নেতারা। আরও চারটি আসন থেকে নির্বাচন করার জন্য প্রার্থীও খুঁজছে দলটি।

বিএনএমের নেতারা বলছেন, বেশ কয়েকজন বিএনপি নেতা বিএনএম থেকে নির্বাচনের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। অনেকে দলীয় মনোনয়নও নিয়েছেন। আরও কয়েকজন দলীয় মনোনয়ন নেবেন। কয়েকদিনের মধ্যে তারা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছ মনোনয়নও সংগ্রহ করবেন। এর মধ্যে দিয়ে রাজশাহীর ৬টি আসনে যোগ্য প্রার্থীদের মনোনয়ন দেয়া হবে।

বিএনএম থেকে বিএনপির হেভিওয়াট প্রার্থীও ভোট করতে পারে বলে জানাচ্ছে দলটি। আওয়ামী লীগের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন করবে তারা। তবে লক্ষ্য থাকবে দুটি আসনে জয়ী হয়ে আসা। এক্ষেত্রে কপাল পুড়তে পারে রাজশাহীর দুই আওয়ামী লীগ প্রার্থীর। বিএনএম ৩০০ আসনেই প্রার্থী দিচ্ছে। তাদের লক্ষ্য প্রথমবারে অন্তত ৭০ থেকে ৮০টি আসনে জয়ী হয়ে আসা।

বুধবার (২২ নভেম্বর) রাতে রাজশাহীর একটি হোটেলে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে একটি বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে রাজশাহীর ৬টি আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। ৬টি আসনে দু’জন করে প্রার্থী ঠিক করেছে তারা। কোনো প্রার্থীর নামে যদি মামলা থাকে তার মনোনয়ন বাতিল হলেও আরেকজন নির্বাচন করতে পারবেন। বৈঠকে বিএনপির কোন নেতা রাজশাহীর কোন আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নিবেন তা নির্ধারণ করা হয়।

দলটির একটি সূত্র বলছে, রাজশাহী-১ থেকে নির্বাচন করবেন সাবেক মন্ত্রী বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার আমিনুল হকের ছোটভাই অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন। শরীফ উদ্দিন বিএনপির কোনো পদে না থাকলেও আমিনুল হকের ভাই হওয়ার সুবাদে এলাকায় বেশ প্রভাব আছে। গত বছরের ২ ডিসেম্বর বিএনপির বিভাগীয় জনসভায় তিনি বক্তব্যও দিয়েছিলেন। তবে সভাতে তার পদ-পদবি উল্লেখও করা হয়নি। তিনি এই আসন থেকে নির্বাচন করবেন বলে জানানো হয়েছে। বিএনএম নেতারা বলছেন, প্রায় ১৫ দিন আগে শরীফ উদ্দিন বিএনএমের সদস্য ফরম পূরণ করেছেন। তবে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে দলে যোগ দেননি। দলে যোগদান করে তিনি নির্বাচন করবেন।

এছাড়াও রাজশাহী-১ থেকে নির্বাচন করবেন বিএনপি নেত্রী তাসকিয়া বিনতে নাজীব গ্রেসী। তিনি মহিলা দলের নেত্রী বলে জানা গেছে। ইতোমধ্যে বিএমএর মনোনয়নপত্রও সংগ্রহ করেছেন তিনি।

রাজশাহী-২ (সদর) আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নেবেন বিএনপির সমর্থক ব্যবসায়ী আবদুল বারী। তিনি বিএএনএম-এর মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।

রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসন থেকে নির্বাচন থেকে অংশ নেবেন জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান মন্টু। তিনি বিএনএম থেকে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন। বিএএনএমে যোগ দেয়ায় তাকে কেন্দ্র্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান পদও দেয়া হয়েছে। নির্বাচন করতে প্রস্তুতিও নিয়েছেন তিনি।

তিনি বলেন, ছাত্রজীবন থেকে শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শ ধারণ করে রাজনীতি করেছি। এই রাজনীতিতে জীবন-যৌবন শেষ করেছি। অথচ দল থেকে কিছুই পাইনি। উল্টা মিথ্যা মামলা খেয়েছি। তাই এবার নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বর্তমানে আমি বিএনএমের কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান পদে আছি। আমি রাজশাহী-৩ আসন থেকে নির্বাচন করবো।

রাজশাহী-৪ থেকে নিবার্চন করছেন শহিদুল ইসলাম। তিনি হাটগাঙ্গোপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তার স্ত্রী বাগমারা উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী। শহিদুল ইসলাম বলেন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য করা হলেও তিনি দীর্ঘদিন রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন না।

বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে ছাত্র ইউনিয়নের সঙ্গে জড়িত ছিলাম। রাজনৈতিক দলগুলোর বিধি-বিধান নিয়ে আমার কিছু আপত্তি আছে। আমি বিএনএম থেকে নির্বাচন করতে চাই।

তিনি ছাড়াও আরও একজন বিএনপি নেতা এই আসন থেকে নির্বাচন করতে পারে বলে জানা গেছে। তবে তার নাম, পরিচয় প্রকাশ করেনি বিএনএম নেতারা। তিনি বিএনপি আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে বলে জানানো হয়।

এছাড়া রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনে উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শিক্ষক শফিকুল ইসলাম নির্বাচন করবেন। রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নিতে দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন রায়হান আলী ও আবদুস সামাদ। তারা দুজনেই বিএনপি কর্মী বলে জানা গেছে।

বাংলাদেশ জাতীয়বাদী আন্দোলনের (বিএএনএম) রাজশাহী জেলা সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম বলেন, দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে আমাদের দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। আমাদের দল থেকে নির্বাচনে অংশ নিতে বিএনপির অনেক নেতা এরই মধ্যে যোগদান করেছেন। আরও অনেকেই যোগদান করার প্রক্রিয়ায় আছেন। এর মধ্যে বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থীও আছেন। আমরা রাজশাহী থেকে অন্তত দুটি আসনে জয়ী হতে চায়।

তিনি আরও বলেন, রাজশাহী-১ আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নেবেন মেজর জেনারেল শরীফ উদ্দীন। তিনি সাবেক মন্ত্রী আমিনুল হকের ভাই। দলে যোগদান করলে তিনি হয়তো নির্বাচনেও অংশ নিবেন। আমরা তাকেও ধরে রেখেছি। রাজশাহী-৩ আসন থেকে বিএনপির সাবেক নেতা আমাদের দলের ভাইস চেয়ারম্যান মতিউর রহমান মন্টু নির্বাচন করছেন।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ