সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১ আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহী জেলায় এখনো গাছে গাছে প্রচুর আম রয়েছে বাগানে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও কারফিউয়ের কারণে আম ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাগানে আম পুরোপুরি পুষ্ট হয়ে গেছে। তাই গাছে কিছু আম ফেটে গেছে রসে আর এক ধরণের মাছিপোকাতেও নষ্ট হচ্ছে আম। আর কিছু ক্ষতি করেছে বাদুর ও পাখিতে। তবে যতদিন আম নামানো বন্ধ ছিলো, বাড়তি পরিচর্যা করে ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে আনার চেষ্টা করা হয়েছে।
বুধবার রাজশাহীর বানেশ্বর হাটে গিয়ে দেখা যায়, হাটে আমের প্রচুর সরবরাহ। ফজলী ৩৫০০-৪০০০ টাকা মণ, আশ্বিনা ১৪০০-১৬০০ টাকা মণ, আম্রপালি ৪০০০-৪৫০০ মণ দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে, ক্রেতা সংকটে নওগাঁয় বন্ধ আম বেচাকেনা। তাপমাত্রা বেশি হওয়ায় বাগানে দ্রুত পেকে যাচ্ছে আম। আর সরবরাহ করতে না পারায় পাকা আম বাগানেই নষ্ট হচ্ছে। বাগান মালিকরা বলছেন, এ অবস্থায় বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতি গুনতে হচ্ছে তাদের।
মৌসুমের শেষ সময় তারপরও বিস্তৃত বাগানে বিপুল আমের সমারোহ। হলুদ আভায় দ্রুতি ছড়ানো এসব আম জানান দিচ্ছে গাছ থেকে দ্রুত নামানোর। মে মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে নওগাঁর বরেন্দ্র এলাকার বাগান থেকে শুরু হয় আম নামানো।
তবে বাণিজ্যিক জাতের আম্রপালি, বারিফোর, কাটিমোন গৌড়মতি জাতের আমের জমজমাট কারবার শুরু হয় জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে। চলমান এ কারবারে হঠাৎ কারফিউ ঘোষণায় বন্ধ হয়ে গেছে আম বেচাকেনা। চলমান কারফিউ আর পরিবহন জটিলতায় এসব আম বাজারজাত করতে পারছে না বাগান মালিকরা। ফলে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির কথা বলছেন বাগান মালিকরা। নওগাঁর রামভদ্রপুর এলাকার আমচাষি সাহিদুজ্জামান ও সাপাহারের ফায়সাল শেখ জানান, গত ৪ দিন কোন আম বেচা কেনা করা যায়নি । এর ফলে অনেক আম বাগানে নষ্ট হয়ে গেছে ।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার লাউঘাট্টা এলাকার আমচাষি মিজানুর রহমান জানান, দেশের চলমান পরিস্থিতিতে দেশের অন্য এলাকার ব্যবসায়ীরা তেমন আসছে না। এতে করে আম বিক্রিও করতে পারছিনা। আম তো পচনশীল পণ্য। তাই এই আম নিয়ে অনেকটা বিপাকে রয়েছি। আমরা চায় দ্রুত এর সমাধান হোক।
নওগাঁ সদরর আম বিক্রেতা ফারুক হোসেন বলেন, যে আম ৯০ টাকা কেজিতে বিক্রি করা হয়েছে তা নেমে এসেছে ৬০ টাকায়। অনেক বেশি দিয়ে আম কিনে কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে অনেকে। কারণ দ্রুত পেকে নষ্ট হচ্ছে। আড়তেও বিপুল আম স্তূপাকারে পড়ে রয়েছে। গত ৪ দিনে এসব আড়তে ক্রেতা শূন্য থাকায় নষ্ট হয়ে গেছে অনেক আম। ৫ হাজার টাকা প্রতিমণ বিক্রি করা আমের দর নেমে এসেছে অর্ধেকেরও নিচে।
চলতি মৌসুমে জেলায় ৩২ হাজার হেক্টর জমির বাগান থেকে ৪ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন আম পাওয়ার লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করে কৃষি বিভাগ। আর উৎপাদিত আমের বাজার ধরা হয়েছিল প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা।
নওগাঁয় আমের দাম (প্রতিমণ) কারফিউ’র আগে কারফিউ’র পরে আম্রপালি ৫ হাজার টাকা ৩ হাজার ২শো টাকা, বারি-৪ ৪ হাজার টাকা ৩ হাজার ৫শো টাকা, ফজলি ৫ হাজার টাকা ২ হাজার ৫শো টাকা, গৌড়মতি ৪ হাজার ৫শো টাকা ৩ হাজার ৬শো টাকা ও কাটিমন ৫ হাজার টাকা ৩ হাজার ৪শো টাকা।