জাহিদ হাসান পলাশ:
রাজশাহী অঞ্চলে বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে গমের সোনালী রঙের মেলা। খেতে খেতে দোল খাচ্ছে পরিপুষ্ট গমের ছড়া। কিছুদিন পরে মাঠের গম কাটা শুরু করে দিবেন। এই অঞ্চলে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার গমের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখছে কৃষক।
কৃষি অফিসের তথ্যমতে, গত বছরের তুলনায় এবার ১ হাজার ২৫ হেক্টর জমিতে গম চাষাবাদ বেশি হয়েছে। গত বছর রাজশাহী অঞ্চলে গমের আবাদ হয়েছিল ৯২ হাজার ৮৪২ হেক্টর জমিতে এবং উৎপাদন হয়েছিল ৩ লাখ ৮৮ হাজার ২৬৮ মে. টন। এ বছর আবাদ হয়েছে ৯৩ হাজার ৮৬৭ হেক্টর জমিতে এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৯৫ হাজার ৩৪৮ মে. টন। সেই দিক বিবেচনায় এবার গমের আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে ১ হাজার ২৫ হেক্টর জমিতে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি গম উৎপাদন হবে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।
আঞ্চলিক কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষকেরা গমের ভালো ফলন পাচ্ছেন। খরচ কম হওয়ায় গম চাষাবাদেও আগ্রহী হচ্ছেন তাঁরা। গত বছর রাজশাহী অঞ্চলে গমের আবাদ হয়েছিল ৯২ হাজার ৮৪২ হেক্টর জমিতে এবং উৎপাদন হয়েছিল ৩ লাখ ৮৮ হাজার ২৬৮ মেট্রিকটন। এ বছর আবাদ হয়েছে ৯৩ হাজার ৮৬৭ হেক্টর জমিতে এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৯৫ হাজার ৩৪৮ মেট্রিকটন। সেই দিক বিবেচনায় এবার গমের আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে ১ হাজার ২৫ হেক্টর জমিতে।
জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সাথে গমের নতুন নতুন জাত উদ্ভাবন হয়েছে। গম চাষে খরচ কম। অল্প খরচে অধিক লাভবান হওয়ার আশায় কৃষকদের গম চাষে আগ্রহ বাড়ছে।
পবা উপজেলার পুকুরিয়ার গম চাষি রফিকুল ইসলাম জানান, তিনি উপজেলা কৃষি অফিসের দেওয়া উন্নত জাতের গম বীজ ও সার বিনামূল্যে পেয়েছিলেন। এখন পর্যন্ত তাদের গম অনেক সুন্দর রয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে তাদের খরচ হবে প্রায় ৮ হাজার টাকা। আবহাওয়া ভাল থাকলে প্রতি বিঘা জমিতে ১৫ থেকে ২০ মণ পর্যন্ত গমের ফলন আশা করছেন তিনি।
পবা উপজেলার বড়গাছী ইউনিয়নের কৃষক শরিফুল আলম বলেন, ‘এ বছর ১৫ বিঘা জমিতে গম চাষাবাদ করেছেন। উপজেলা কৃষি বিভাগের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা বিভিন্ন সময়ে আমাকে পরামর্শ দিয়েছেন। বিঘাপ্রতি ১৫ মণ গম উৎপাদনের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
পবা উপজেলার পাকুড়িয়ার এলাকার আরেকজন গম চাষি জসিম উদ্দিন বলেন, গম চাষে এবার পাঁচ বিঘা জমিতে প্রায় বিঘা প্রতি সাড়ে ৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ধারণা করছি, গমের ফলন ভালো হবে এবং বাজারে গম বিক্রি করে বেশি দাম পাওয়া যাবে।’
এবিষয়ে রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক উম্মে ছালমা জানান, ‘রবি ফসলের মধ্যে গম একটি লাভজনক আবাদ। কৃষকদের গম চাষে আগ্রহী করতে তালিকাভুক্ত চাষিদের ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী ও উচ্চফলনশীল উন্নত জাতের গম বীজ ও সার বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গম চাষ করতে কৃষকদের নানাভাবে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গমের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
পবা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ফারজানা তাসনিম জানান, এবছর উপজেলায় ২ হাজার ১৫ হেক্টর জমিতে গমের চাষ হয়েছে। শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে গমের ভালো উৎপাদন হবে। কৃষকদের গম চাষের আগ্রহী করে তোলার লক্ষ্যে কৃষি প্রণোদনার আওতায় পবা উপজেলার ১ হাজার ৮০০ কৃষককে গমের বীজ ও সার বিনা মূল্যে বিতরণ করা হয়েছে। এতে উপজেলায় গম চাষের লক্ষ্যমাত্রা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আশা করছি গমের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।