মঙ্গলবার, ১৩ মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩০ বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ।
তবু উন্নয়ন সদিচ্ছায় পিছিয়ে
সুষ্ঠু কর ব্যবস্থাপনার ওপরই নির্ভর করে একটি দেশের সার্বিক উন্নয়ন। করারোপ ও কর সংগ্রহ এবং করের আওতা বৃদ্ধিতে সহজ ও সমন্বিত প্রক্রিয়া মানুষকে কর দিতে আগ্রহী করে তোলে। করদাতাদের কর প্রদানে সহজ অভিগম্যতা নিয়ে নানা প্রশ্ন থাকলেও রাজশাহীর করদাতারা কর প্রদানে দৃষ্টান্তমূলক উদাহরণ সৃষ্টি করেছেনÑযা কর প্রদানের ক্ষেত্রে অন্যদেরকে উৎসাহ যোগাবে।
সোনার দেশ পত্রিকার এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে ২০২২-২৩ অর্থ বছরে রাজশাহী কর অঞ্চলে কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে অর্জন হয়েছে ১০১ শতাংশ। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) রাজশাহী আঞ্চলের তথ্যমতে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১ হাজার ২১১ কোটি টাকার বিপরীতে আদায় হয়েছে ১ হাজার ২২৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ১৪ কোটি টাকা বেশি অর্জন হয়েছে। এই অর্জন রাজশাহী অঞ্চলের করদাতাদের আগ্রহ ও সদিচ্ছারই প্রতিফলন।
রাজশাহী অঞ্চলের অর্থনীতি এখনো অনেকটাই কৃষিনির্ভর। যদিও কৃষিতে আধুনিকতার ছাপ লেগেছে। শিক্ষিত তরুণরাও এখন কৃষির প্রতি ঝুঁকতে শুরু করেছে। তারা কৃষিকেন্দ্রীক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলছে। তথাপি কৃষিশিল্প বলতে যা বোঝায় সে ক্ষেত্রে এ অঞ্চল এখনো অনগ্রসর রয়ে গেছে। আর এই অনগ্রসরতা রাজশাহী অঞ্চলের উন্নয়ন অগ্রগতির জন্য বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতাও। এই প্রতিবন্ধকতা দূর করার ক্ষেত্রে বিশেষায়িত সুযোগ সুবিধা বাড়ানো সুযোগ আছে। এটা এ অঞ্চলের উন্নয়নের অধিকারও বটে।
সরকার সুবোধে কর আদাতে আশাতীত সাফল্য অর্জন করলেও সেবা সুবিধাও বাড়াতে কার্যত উদ্যোগ নেই। এ অঞ্চলের কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও তথ্য প্রযুক্তির দুর্বল স্তরগুলো চিহ্নিত করে সেগুলো সমাধানে বিশেষ ব্যবস্থারও প্রয়োজন। দেশের অন্যান্য অঞ্চলের থেকে রাজশাহীকে পিছিয়ে রেখে কিংবা বৈষম্যের মধ্যে রেখে এ অঞ্চলের মানুষের বঞ্চনার অবসান হবে না। বিদ্যমান শিল্পনীতির সাথেও এ অঞ্চলের ব্যবসায়ীদের পেরে ওঠার কাজটি মোটেও সহজ নয়। কৃষিকে শিল্প হিসাবে দাঁড় করাতে হলে আঞ্চলিক শিল্পনীতির প্রয়োজনীয়তা নিয়েও সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ব্যাংকগুলোকেও এ অঞ্চলের সমস্যা উত্তরণে ভূমিকা রাখতে হবে।