রাজশাহী টেক্সটাইল মিল চালুর উদ্যোগ, কর্মসংস্থান সুযোগ সৃষ্টির হাতছানি

আপডেট: এপ্রিল ৩০, ২০২৫, ১:২৯ পূর্বাহ্ণ

১৯৭৫ সালে স্থাপিত রাজশাহী টেক্সটাইল মিল ২২ বছর ধরে বন্ধ থাকার পর পুনরায় চালুর উদ্য্যোগ নিয়েছে সরকার। পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) ভিত্তিতে মিলটি চালুর সব প্রক্রিয়া ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগ্রুপ প্রাণ-আরএফএল ৩০ বছরের জন্য লিজ গ্রহণ করেছে। ‘বরেন্দ্র রাজশাহী টেক্সটাইল লিমিটেড’ নামে ইতোমধ্যে পরীক্ষামূলক যাত্রা শুরু করেছে। বর্তমানে কাজ করছেন এক হাজার শ্রমিক- যাদের ৭০ শতাংশই নারী। এখানে দুই বছরে ১২ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান করতে চায় প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ।

বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিল করপোরেশনের (বিটিএমসি) সঙ্গে গেল বছরের অক্টোবরে চুক্তি স্বাক্ষরের পর ডিসেম্বরেই কারখানার দায়িত্ব বুঝে নেয় প্রাণ-আরএফএল। দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার তিন মাসের মাথায় কারখানায় পরীক্ষামূলক উৎপাদন কার্যক্রম শুরু হয়। আগামী দুই বছরের মধ্যে কারখানাটি পুরোদমে চালু করা সম্ভব হবে।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ-এর কর্মকর্তারা তাদের উদ্দেশ্য ও পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন। তাদের ভাষ্যমতে প্রায় ২৬ একর আয়তনের ‘রাজশাহী টেক্সটাইল মিল’কে উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ পরিবেশবান্ধব শিল্পপ্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে চায় প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ। শতভাগ রফতানিমুখী এ কারখানায় তৈরি করা হবে বিভিন্ন ব্যাগ, জুতা ও তৈরি পোশাক। তাছাড়া এখানে একটি আধুনিক কল সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হবে। আর কারখানায় বিনিয়োগ করা হবে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা।

এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, রাজশাহীর বড় সমস্যাই হলো কর্মসংস্থান। কর্মসংস্থানের এতোই সুযোগ কম যে, মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানেই কর্মকর্তারা কর্মসংস্থানের তিব্রতর ঘাটতির কথাই তুলে ধরেছে। রাজশাহীতে ১০০ লোকের চাহিদা দিলে এখানে ৩০০ লোক আবেদন করেন। এ্ পরিস্থিতি সস্তা শ্রমের কথাও স্মরণ করিয়ে দেয়। এখানে তেমন শিল্প-কারখানাও গড়ে উঠেনি। হাতে গোনা দু’একটা মাঝারি শিল্প থাকলেও কোনো বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান নাই। বেসরকারি খাতেও তেমন অগ্রগতি লক্ষণীয় নয়। অন্য কোনো খাতও বিকশিত লাভ করে নি যাতে করে জেলার তরুণরা কর্মসংস্থানের সহজ সুযোগ লাভ করবে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, আইসিটি কিংবা পর্যটন খাতেও উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ হয়নি। বিষয়টি রাজনৈতিকভাবেই সবিেেশষ বিবেচনার দাবি রাখে।

প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ যে উদ্যোগ নিয়েছে তাতে আশা জাগায়। এর জন্য তারা ধন্যবাদ পাওয়ার দাবি রাখে। তাদের এই বিনিয়োগ সাহস ও চ্যালেঞ্জের বিষয়টি গুরুত্বপর্ণ। তাদের সাফল্যের সাথে রাজশাহীতে আরো বড় বড় বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে। আইনের মধ্য দিয়ে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ সংশ্লিষ্ট মহলের সহযোগিতা প্রত্যাশা করাই যথার্থ হবে। স্বার্থান্ধতা দিয়ে অর্থনীতির বিকাশ-ভাবনাকে বিচার করা বিচারই হবে- এটাও মনে রাখতে হবে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ