রাজশাহী নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থীদের একাংশ ফেল করে অধ্যক্ষের রুমে তালা লাগিয়ে অপসরণ দাবি

আপডেট: জানুয়ারি ১৯, ২০২৫, ৯:১৭ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক


পরিক্ষায় ফেল করে রাজশাহী নার্সিং কলেজের ১৪ জন শিক্ষার্থী অধ্যক্ষের রুমে তালা ঝুঁলিয়ে দিয়ে অপসারণ দাবি করেছে। এ নিয়ে ক্যাম্পাসজুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

রোববার (১৯ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহী নার্সিং কলেজে ফেল করা শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের রুমে তালি ঝুঁলিয়ে দিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এসময় অন্য শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করলে উত্তেজনা তৈরি হয়।

এসময় স্থানীয় প্রশাসন ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের পরিচালকের আশ্বাসে পরিস্থিতি শান্ত হয়। জানা গেছে, রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (রামেবি) অধিভুক্ত নার্সিং কলেজের ৩য় বর্ষের বিএসসি ইন নার্সিং চূড়ান্ত পরীক্ষা গত বছরের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হয়েছিলো। গত ১৫ জানুয়ারি এ পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু এ পরীক্ষায় রাজশাহী নার্সিং কলেজ থেকে ১৪ জন শিক্ষার্থী কমিউনিটি হেলথ্ বিষয়ে ফেল করেছে। ফেল করার বিষয়টি ওই ১৪জন শিক্ষার্থী জানতে পেরে ১৬ জানুয়ারি কলেজের অধ্যক্ষের রুমে তালা ঝুঁলিয়ে দেয়। একই সাথে তারা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে অপসরণ দাবি করে। যদিও স্বপক্ষে কোন প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারে নি তারা।

এদিকে, ১৪ জন শিক্ষার্থী অধ্যক্ষের কক্ষে তালা দিয়ে বিক্ষোভ করার প্রতিবাদে কলেজের অন্যান্য সাধারণ শিক্ষার্থীরা এক জোট হয়ে ফেল করা শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেন। ক্লাস চালু রাখা ও অধ্যক্ষের পক্ষে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করলে ১৪ জন শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেকেই সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর চড়াও হন। এমন কী মারমুখি আচরণ করেন তারা। তারা পোস্ট বেসিক কোর্সের ক্লাসের সিনিয়র শিক্ষার্থীদের উপরও চড়াও হন।

এতে দু’পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিষয়টি রাজপাড়া থানায় খবর দেয়া হলে পুলিশ ও রামেক হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহম্মদ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। রামেক হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহম্মদ ফেল করা শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেন ও তাদের কথা শোনেন। তাদের বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা হবে বলে আশ্বাস দেন পরিচালক। পরে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা নার্সিং কলেজ ত্যাগ করেন।

বিষয়টি নিয়ে রাজশাহী নার্সিং কলেজের অধ্যক্ষ ফয়েজুর রহমান বলেন, ১৪ জন শিক্ষার্থী যারা ফেল করার পরের দিনই আমার কক্ষে তালা দিয়েছে। আমি তাদের সাথে আলোচনায় বসতে চেয়েছি। কিন্তু তারা আমার সাথে বসে নি। এখানে বিক্ষোভ করার মতো কোনো কিছু নেই। আর তাদের পাস-ফেলের বিষয়ে আমাদের কোন হস্তক্ষেপও থাকে না। তারা আগামী ৪০ দিনের মধ্যে ফেল করা বিষয়ে পরিক্ষাও দিতে পারবেন। কিন্তু তারা যে ঘটনা ঘটালো এটা খুবই দুঃখজনক।

জানা গেছে, রামেবির অধিভুক্ত নার্সিং কলেজের ৩ য় বর্ষে বিএসসি ইন নার্সিং চূড়ান্ত পরীক্ষার ফলাফল গত ১৫ জানুয়ারি প্রকাশিত হয়। এতে ১২৫১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে ৯০৮ জন শিক্ষার্থী পাস করেছে। যার পাসের হার ৭২.৫৮%। এ পরীক্ষায় লালমনিরহাট সরকারি কলেজ থেকে ৭ জন, রংপুর কলেজের ৩, প্রাইম নার্সিং কলেজের ২৬, রংপুর কমিউনিটি নার্সিং কলেজের ১৭, আনোয়ারা নার্সিং কলেজের ২৮, এশিয়ান নার্সিং কলেজের ২২, হাসনাহেনা নার্সিং কলেজের ২১ জনসহ ৩৪৩ জন শিক্ষার্থী ফেল করেছে। এরমধ্যে রাজশাহী নার্সিং কলেজের ১৪ জন শিক্ষার্থী কমিউনিটি হেলথ্ বিষয়ে ফেল করেছে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ