রাজশাহী শহর রক্ষা বাঁধে তীব্র ভাঙন || বাজেট স্বল্পতায় কাজ শুরু করতে পারছে না পাউবো

আপডেট: জানুয়ারি ২৬, ২০১৭, ১২:২০ পূর্বাহ্ণ

বুলবুল হাবিব



এবছর পদ্মা নদীর পানি নেমে যাওয়ার পর তালাইমারি থেকে বুলনপুর পর্যন্ত নদীসংলগ্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। ভাঙনে বাঁধের গোড়া থেকে ব্লক ও পাথর সরে গেছে। বেশকিছু জায়গায় মূল শহর রক্ষা বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে বাঁধ সংলগ্ন এলাকার মানুষদের মধ্যে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বলছে, বাঁধের ভাঙন রোধে ও সংস্কারে বেশ কয়েকটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে রাজশাহী নগরবাসীর ভয় ও আতঙ্ক দূর হবে। ইতোমধ্যে প্রকল্পের প্রাথমিক কাজ সম্পন্ন হয়েছে। নকশা অনুমোদনও পেয়েছে। বাজেট স্বল্পতার কারণে কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। বাজেট পেলেই কাজ শুরু করা হবে।
গত রোববার ও সোমবার নদী সংলগ্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নগরীর তালাইমারি থেকে বুলনপুর পর্যন্ত নদীসংলগ্ন এলাকায় তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে শ্রীরামপুর এলাকায় অবস্থিত টি-গ্রয়েন ও জেলা পুলিশ লাইনের সামনে শহর রক্ষা বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেশি। ওই এলাকায় মূল বাঁধকে আঘাত করেছে বন্যা। টি-গ্রয়েনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মারাত্মক। বাঁধ ও টি-গ্রয়েনের গোড়া থেকে পাথর সরে গেছে। কেশবপুর এলাকায় নদীতীরবর্তী এলাকায় কোনো ধরনের প্রতিরোধক না থাকায় ওই এলাকার ভাঙনও মারাত্মক।
এছাড়া এবছর বর্ষাকালে নগরীর পঞ্চবটি এলাকায় শহর রক্ষা বাঁধ সংলগ্ন এলাকায় ধস নামে। এতে ওই এলাকার বেশকিছু বাড়ি ভেঙে পড়ে। সিটি করপোরেশন কর্তৃক নির্মিত পদ্মার তীরে সড়কে ধসে নেমে পাথর ও ব্লক সরে যায়।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড রাজশাহীর নির্বাহী প্রকৌশলী মুখলেসুর রহমান জানান, বাঁধের সব বিষয় নিয়েই কর্তৃপক্ষ অবগত আছে। ইতোমধ্যে ঢাকা থেকে বিশেষজ্ঞ টিম এসে এলাকা পরিদর্শন করে গেছেন। নকশাও অনুমোদন করা হয়েছে। বাজেট পেলেই কাজ শুরু করা হবে।
মুখলেসুর রহমান জানান, পুলিশ লাইনের সামনে বাঁধে যে ভাঙন দেখা দিয়েছে তা এপ্রিলের মধ্যেই সংস্কার করা হবে। পানি নেমে গেলেই ওখানে কাজ শুরু করা হবে। কারণ আগে থেকেই ওখানে কাজ চলছিল। গতবছরও কাজ হয়েছে। তবে টি-গ্রয়েন ও কেশবপুর এলাকার ভাঙন রোধে নকশা প্রণয়ন সম্পূর্ণ করা হয়েছে। বাজেট স্বল্পতার জন্য কাজ শুরু করা যাচ্ছে না।
মুখলেসুর রহমান জানান, টি- গ্রয়েন সংস্কারের জন্য চাহিদা দেয়া হয়েছে ৫ কোটি টাকা। বরাদ্দ আছে মাত্র ৩৫ লাখ টাকা। কেশবপুর এলাকা সংস্কারের জন্য লাগবে দেড় কোটি টাকা। বরাদ্দ আছে মাত্র ৬০ লাখ টাকা। এই দুই প্রকল্পের নকশা প্রস্তুত করা শেষ। বাজেট অনুমোদন পেলেই কাজ শুরু করা হবে। এছাড়া পঞ্চবটি এলাকায় যে ধস নেমেছে তার পুরো দায়ভার সিটি করপোরেশনের হলেও আমরাই দায়িত্ব নিয়ে কাজটি করে দিব। কারণ সিটি করপোরেশন ওই এলাকায় রাস্তা তৈরিতে পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে কোনো ধরনের অনুমোদন নেয়নি।
এবছর বাঁধ সংলগ্ন নদীতীরে তীব্র ভাঙনের বিষয়ে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, রাজশাহী শহর রক্ষা বাঁধের সংস্কার কাজের মেয়াদ অল্প সময়ের জন্য হয়ে থাকে। মেয়াদ থাকে ২০ বছরের মতো। রাজশাহী শহর রক্ষা বাঁধের কাজ হয়েছিল ২০০০ সালের দিকে। এইজন্য বাঁধের ভাঙন তীব্র হচ্ছে। এছাড়া টি-গ্রয়েনেও ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শুধু টি- গ্রয়েন না পবার খিদিরপুর এলাকায়ও ভাঙন বেশি হয়েছে। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, পানির ¯্রােত প্রথমে টি-গ্রয়েনকে আঘাত করেছে সেখানে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে তা পদ্মার ওপারের চরে আঘাত করে। এইজন্য মধ্য চরেও ব্যাপক ভাঙন হয়েছে।