শুক্রবার, ১১ অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৬ আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
রাজশাহী সীমান্তবর্তী জেলা। রাজশাহী মহানগরীর দক্ষিণ দিকের পুরোটাই সীমান্ত এলাকা। দেশের অন্যান্য সীমান্ত এলাকার মত রাজশাহীর সীমান্ত পথেও চোরাকারবারিরা তৎপর থাকে। এই চোরাচালানিদের দেশের অভ্যন্তরে ও আন্তর্জাতিক পরিসরে নেটওয়ার্ক আছে। এই নেটওয়ার্কের সাথে জড়িতরা বিভিন্ন স্তরের ছড়িয়ে ছিটিয়ে চোরাচালানিরা কাজ করে যাচ্ছে। যখন যে সীমান্ত দিয়ে যে পণ্যের চোরাচালানের জন্য নিরাপদ মনে করে- তখন ওই পণ্যই চোরাচালান হয়ে থাকে। একই সীমান্ত দিয়ে অস্ত্র. মাদক, স্বর্ণ কিংবা মানব পাচারের মত ঘটনা ধারাবাহিকভাবে চলে না। চোরাচালানিরা বার বার রুট পরিবর্তন করে থাকে। রাজশাহী সীমান্ত দিয়ে অনেক বছর বিরতি দিয়ে সোনা চোরাচালানের রুট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। সম্প্রতি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনির হাতে কয়েকটি সোনা চোরাচালান ধরা পড়েছে। সোনাসহ সোনা বহনকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু চোরাচালানের সাথে জড়িত মূল অ্যাকটররা সব সময়ই ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যায়।
সোনার দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এ বছরে তিনটি সোনা চোরাচালানের ঘটনা ঘটেছে। সবশেষ ৩০ জুন ৮১ ভরি সোনার একটি চালান এবং ১ এপ্রিল রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে থেকে ৯টি সোনার বারসহ সোনা বহনকানীকে গ্রেফতার করা হয়। ৬ জুলাই রাজশাহী সীমান্তের বিপরীতে ভারতের জলঙ্গী থেকে ৫৬৫ গ্রাম সোনা জব্দ করা হয়। এ গুলো ধরা পড়েছে বলেই জানা যাচ্ছে। কিন্তু যা ধরা পড়েনি তার সংখ্যা ও পরিমাণ নির্ধারণ করা খুবই মুশকিল। তবে এটা বলাই যায় যে, যা ধরা পড়ে তার চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণ চোরাচালান সফল হয়। আর উদ্বেগের বিষয়টি হল এই যে, বাংলাদেশ থেকে সোনা ভারতে গেলেও ভারত থেকে আসে মাদক কিংবা অবৈধ অস্ত্র। যা বাংলাদেশে অস্থিরতা সৃষ্টিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখে। রাজশাহীতে মাদক একটি মারাত্মক সমস্যা। তরুণদের একটি অংশ এই মাদকের সাথে জড়িয়ে পড়ছে। এরফলে শ্রমশক্তির অবক্ষয় হচ্ছে- অন্যদিকে সামাজিক অস্থিরতাও তৈরি করছে।
চোরাচালানিতে যারা ধরা পড়ছে তাদের প্রায় সকলেই চোরাচালানের পণ্য বহণের কাজ করে থাকে। কিন্তু মূল কুশীলবরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। তবে চোরাচালান প্রতিরোধ করতে প্রয়োজন নেপথ্যের কারিগরদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা। যে কাজটি মোটেও হচ্ছে না।