এ. কে তোতা গোদাগাড়ী :
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনে ১১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে পাঁচজন প্রার্থী ব্যাপক প্রচার প্রচারণা করায় উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে এলাকায়। চিত্র নায়িকা শারমিন আক্তার নিপা মাহিয়া মাহি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে থাকার কারণে এ আসনে সবার নজর রয়েছে।
রাজশাহী-১ আসনে আওয়ামীলীগ থেকে বর্তমান এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী (নৌকা), মাহিয়া মাহি (ট্রাক), গোলাম রাব্বানী (কাঁচি), বিএনএম’র শামসুজ্জোহা বাবু (নোঙর), বিএনএফের আল-সাআদ (টেলিভিশন), তৃণমূল বিএনপির জামাল খান দুদু (সোনালী আঁশ), এনপিপির নুরুন্নেসা (আম), বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের বশির আহমেদ (ছড়ি), জাতীয়পার্টির শামসুদ্দীন (লাঙ্গল), আয়েশা আক্তার ডালিয়া (বেলুন), আখতারুজ্জামান আক্তার (ঈগল) প্রতিক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে নৌকা, কাচি, ট্রাক, নোঙ্গর ও বেলুন প্রতীকের প্রচার-প্রচারণা অন্য প্রার্থীদের চাইতে বেশি ছিল।
১৫ বছর ওমর ফারুক চৌধুরী এই আসনে রাজত্ব করলেও আওয়ামী লীগকে এক কাতারে আনতে পারেন নি। যার কারণে এ আসনে আওয়ামী লীগের মধ্যে সেভেনস্টার তৈরি হয়েছিল। বিশেষ করে ফারুক চৌধুরী মুষ্টিমেয় কিছু নেতাকর্মীর মূল্যয়ন করার কারণে তানোর-গোদাগাড়ীতে বিগত দিনে তার বিরোধিতাকারীর সংখ্যাই বেশি ছিল। বর্তমানও বিরোধিতাকারীর সংখ্যা একেবারে কম নয় বলেও মনে করছেন নেতাকর্মীরা। এ কারণে এবার ফারুক চৌধুরীকে জয়ী হতে হলে কাঠখড়ি পোড়াতে হবে, এমনটা বলছেন নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটাররা
। এ আসনে আওয়ামী লীগেরই স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন গোলাম রাব্বানী। গোলাম রাব্বানীর নিজস্ব ভোট ব্যাংক রয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন থেকে এ আসনটি বাগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করলেও পারেননি। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনেও তিনি নৌকা প্রত্যাশি ছিলেন। কিন্তু নৌকা না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে ভোট করছেন তিনি। গোলাম রাব্বানী একজন হেভিওয়েট প্রার্থী বলেও মনে করছেন সাধারণ ভোটাররা। বর্তমান তার সাথে যোগ হয়েছে অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী আক্তরুজ্জামান। আক্তার নির্বাচন থেকে সরে গিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম রাব্বানীকে সমর্থন দিয়েছেন। এতে গোলাম রাব্বানীর হাত আরো শক্তিশালি হয়েছে।
আওয়ামী লীগেরই অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী চিত্র নায়িকা মাহিয়া মাহি। তিনি বেশ কয়েক বছর ধরে তানোর গোদাগাড়ীতে আসা-যাওয়া করেছেন। মাহি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার আবেদনকারী ছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি নৌকা পাননি। নৌকা না পেলেও তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। এবার মাহিকে নিয়েই মূলত এই আসন আলোচনায় রয়েছে। মাহিকে সাধারণ মানুষ সিনেমার পর্দায় দেখেছেন। কিন্তু এবার সামনে থেকে প্রিয় নায়িকাকে দেখার আশায় লোকজন তার গণসংযোগে হাজির হচ্ছেন। মাহিকে যারা ভোট দেবেন তারা তো বটেই, যারা ভোট দিবেন না তারাও তাকে দেখার জন্য উপস্থিত হচ্ছেন গণসংযোগে।
মাহি অল্প সময়ের মধ্যে নিজের অবস্থান তৈরি করে নিয়েছেন। এখন মাঠ পর্যায়ে দেখা যাচ্ছে, ফারুক চৌধুরির বড় শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী বলতে মাহি, গোলাম রাব্বানী ও ডালিয়া। ফারুক চৌধুরীকে জয়ী হতে হলে এই তিন প্রার্থীকে পেছনে ফেলে জয়ী হতে হবে। যদিও ভোটাররা বলছেন নৌকা, কাচি ও ট্রাক প্রতীকের মধ্যে ত্রিমুখি লড়াই হবে।