শনিবার, ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৫ মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
আমানুল হক আমান, বাঘা:
রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনে আওয়ামী লীগের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপি নিরব। জাতীয় পার্টি নিচ্ছেন প্রস্তুতি।
এ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী বর্তমান বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি, সাবেক সংসদ সদস্য ও চারঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রায়হানুল হক রায়হান, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও বাঘা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাড. লায়েব উদ্দিন লাভলু, বাঘা পৌরসভার মেয়র আক্কাছ আলী।
এদিকে বিএনপি নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত নেই, তবে কেন্দ্রীয়ভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে কারাগার থেকে জেলা বিএনপির আহবায়ক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আবু সাঈদ চাঁদ, জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি বজলুর রহমান, জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি আনোয়ার হোসেন উজ্জল, জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মোস্তফা মামুন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য দেবশীষ রায় মধু, রমেশ দত্ত, বাঘা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নুরুজ্জামান খান মানিক মনোনয়ন চাইবেন।
এ আসনে জাতীয় পার্টির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব সামসুদ্দিন রিন্টু ও সাবেক আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব ইকবাল হোসেন নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
এ দিকে রাজশাহী পূর্ব জেলা সাংগঠনিক জামায়াত ইসলামীর সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক নির্বাহী প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান।
সাবেক সংসদ সদস্য রায়হানুল হক বলেন, আমি জন্মসূত্রে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে আছি। মনোনয়ন পেলেও আওয়ামী লীগ, না পেলেও আওয়ামী লীগ। তবে যেহেতু আমি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত, তৃণমূলের রাজনীতির সাথে যুক্ত। সেদিক থেকে আমি দলের মনোনয়ন চাইবো।
বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি বলেন, আমার সবচেয়ে বড় পরিচয় আমি আওয়ামী লীগের একজন কর্মী। মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে যারা নিজেদের তৃণমূলের নেতা দাবি করেন, তাদের চেয়েও অনেক বেশি পোড় খাওয়া নেতারা আমার সঙ্গে আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করছেন। আমি সাধারণত আমার আসনের কোনো নেতা বা কর্মীর বিরুদ্ধে কখনো কিছু বলি না। তারপরও বলতে হয়, এই আসন থেকে প্রধানমন্ত্রী যাকেই মনোনয়ন দিবেন তার পক্ষেই সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। এর বিকল্প নেই। নিজেকে আওয়ামী লীগের নেতা বলে দাবি করবেন, আবার বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে দাঁড়াবেন, সেই সুযোগ আর নেই।
তিনি বলেন, আমি এই আসন থেকে তিন বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য। গত পাঁচ বছর এমপি ও প্রায় ১০ বছর ধরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করছি। আমার আমলে ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। রাস্তাঘাটসহ অবকাঠামো উন্নয়ন হয়েছে অনেক। শতভাগ বিদ্যুতায়িত বাঘা ও চারঘাট উপজেলার প্রতিটি গ্রাম। আবার অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে বাঘা-চারঘাটের রাজনীতি অনেক বেশি ঐক্যবদ্ধ। বাঘা ও চারঘাট আওয়ামী লীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত তৃণমূলের সব নেতাকর্মীরাই আমার সঙ্গে আছেন। সেদিক থেকে এবারও এই আসন থেকে মনোনয়ন পাবার ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। তারপরও প্রধানমন্ত্রী যাকেই মনোনয়ন দিবেন তারপক্ষেই কাজ করবো।
জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি বজলুর রহমান বলেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির ঘোষিত ১ দফা কর্মসূচী নিয়ে বাঘা ও চারঘাটের প্রতিটি ইউনিয়নের ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীদের খোঁজ খবর নেওয়া, তাদেরকে উৎসাহিত করা হচ্ছে। বিএনপি যদি নির্বাচনে অংশ নেয়, এই নির্বাচনের সময় কোনো এজেন্টের ঘাটতি না পড়ে। সেদিক থেকে বলা যায়, বাঘা ও চারঘাটে বিএনপির অবস্থানটা অনেক ভালো।
জেলা জাতীয় পার্টির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব সামসুদ্দিন রিন্টু বলেন, কেন্দ্রীয়ভাবে নির্বাচনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিলে আমি মনোনয়ন প্রত্যাশী। তৃণমূলের রাজনীতিকে সুসংহত ও সংগঠিত করছি। তৃণমূলের নেতাকর্মীরা যেন সবাই ঐক্যবদ্ধ ভাবে আগামী নির্বাচনে এক-সাথে কাজ করতে পারি সেই লক্ষ্যেই এগচ্ছি।
বাঘা ও চারঘাট উপজেলা নিয়ে রাজশাহী-৬ আসন। এ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৪ হাজার ২৭৫ জন। এরমধ্যে নারী ভোটার ১ লাখ ৫১ হাজার ৬৮৭ জন ও পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৫২ হাজার ৫৮৮ জন।