রাজশাহী-৬ আসনে নৌকা ও কাচির মধ্যে লড়াই

আপডেট: জানুয়ারি ৫, ২০২৪, ৭:২৪ অপরাহ্ণ

চারঘাট (রাজশাহী) প্রতিনিধি:


রাজশাহীর ৬টি নির্বাচনি আসনের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ আসন রাজশাহী-৬ (চারঘাট-বাঘা) আসনটি। এ আসনে সরকারের হ্যাভিওয়েট প্রার্থী পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও তিনবারের এমপি আলহাজ¦ শাহরিয়ার আলম। এ আসনে ৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও প্রতিমন্ত্রীর মূল লড়াই হবে নিজ দলের সাবেক এমপি চারঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাহেনুল হক রায়হানের সাথে।

এ আসনে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে কাঁচি প্রতীক নিয়ে মাঠে নেমেছেন রায়হান। একই দলের দলীয় প্রার্থী ও স্বতন্ত্রপ্রার্থী হওয়ায় দুটি উপজেলায় আ’লীগের নেতাকর্মীরা দুভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। এতে করে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শাহরিয়ার আলমের সঙ্গেই স্বতন্ত্রপ্রার্থী রাহেনুল হকের কাচি প্রতীকের হবে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

অন্য দলের প্রার্থীরা রয়েছেন অনেকটাই নিরব। তারা হলেন, জাতীয় পার্টির শামসুদ্দিন রিন্টু (লাঙ্গল), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মহসিন আলী (আম), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের জুলফিকার মান্নান জামী (মশাল), বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের আব্দুস সামাদ (নোঙ্গর)।

সরেজমিনে দেখা গেছে, আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থীর পক্ষে সক্রিয় কাজ করছেন চারঘাট উপজেলা আ’লীগের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন, উপজেলা চেয়ারম্যান ফকরুল ইসলাম, পৌর আ’লীগের সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন, পৌর মেয়র একরামুল হক, বাঘা উপজেলা আ’লীগের সম্পাদক বাবুল আক্তারসহ দুই উপজেলার যুবলীগ, কৃষকলীগ, শ্রমিকলীগ, ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠনের বর্তমান কমিটির অনেক নেতাকর্মী।

অপরদিকে একই দলের স্বতন্ত্রপ্রার্থী রাহেনুল হকের পক্ষে সক্রিয় কাজ করছেন বাঘা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আ’লীগের যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট লায়েব উদ্দিন লাভলু, ভাইস চেয়ারম্যান মোকাদ্দেস আলী, বাঘা পৌর মেয়র আক্কাছ আলী, পাকুড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান মেরাজুল ইসলাম মেরাজ, চারঘাট উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া বিপ্লব, নারী ভাইস চেয়ারম্যান তাজমিরা খাতুন, উপজেলা আ’লীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক জালাল উদ্দিন, ভায়ালক্ষিপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শওকত আলী বুলবুল, সরদহ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মতিউর রহমান তপন, ইউসুফপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শফিউল আলম রতন, শলুয়া ইউনিয়ন আ’লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মকলেচুর রহমান মকা প্রমুখ।

প্রতীক বরাদ্দের পর গণসংযোগে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন আ’লীগের প্রার্থী শাহরিয়ার আলম এবং কাঁচি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী রাহেনুল হক রায়হান। নির্বাচনি মাঠে নৌকার প্রার্থী শাহরিয়ার আলম ও স্বতন্ত্রপ্রার্থী রাহেনুল হকের সমর্থনে প্রচারণার দেখা মিললেও বাকি চার প্রার্থী নিরব ভূমিকায় রয়েছেন।

নৌকার প্রার্থী শাহরিয়ার আলম প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকালে সফলতা দেখিয়েছেন। সমালোচনা, বিতর্ক এসব থেকে দূরে থেকেছেন সব সময়। সারা দেশে ইতিবাচক ভাবমূর্তি গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। শিক্ষিত-মার্জিত হিসেবে সুখ্যাতিও আছে শাহরিয়ার আলমের। কিন্তু জনপ্রিয়তা খুইয়েছেন নিজের দলের নেতাকর্মীদের কাছে। এবারের নির্বাচনে নিজের নির্বাচনি এলাকায় বহিরাগত তকমা লেগেছে শাহরিয়ার আলমের গায়ে। ফলে আ’লীগের নেতাকর্মীরা এখন দুভাগে বিভক্ত হয়ে মাঠে নেমেছেন শাহরিয়ার ও রাহেনুল হকের পক্ষে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তির দাবি, এ এলাকায় সবচেয়ে বেশি বিএনপির সাধারণ ভোটার রয়েছেন। এবারের নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নেয়ায় ভোটের মাঠে ভোট দিতে যেতে পারেন অনেক বিএনপির ভোটার। আর ভোট দিতে গেলে বিএনপির ভোটাররা নৌকায় ভোট না দিয়ে স্বতন্ত্রপ্রার্থীর ঘরেই সিল দিতে পারেন। এতে করে নৌকার বিজয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী রাহেনুল হকের কাচি বড় বাধা। ফলে কাচি প্রতীকের সঙ্গে নৌকার হবে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই।

এ আসনে চারঘাটে ৫৭টি মোট ১১৮টি ও বাঘা ৬১ কেন্দ্র রয়েছে। দুটি উপজেলায় মোট ভোটার ৩ লক্ষ ৪০ হাজার ৫২৭ ভোট। এরমধ্যে পুরুষ ১ লক্ষ ৭০ হজার ৫২৮ ও নারী ১ লক্ষ ৬৯ হাজার ৯৯৯ ভোট।
এরমধ্যে চারঘাটে ১ লক্ষ ৭৭ হাজার ৬৬৬ ও বাঘায় ১ লক্ষ ৬২ হাজার ৮৬১ ভোট। পুরুষ ৮১ হাজার ৪৭২ ও নারী ৮১ লক্ষ ৩৮৯ ভোট। ভোট। পুরুষ ৮৯ হাজার ৫৫ ও নারী ৮৮ হাজার ৬১০ ভোট।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ