রাণীনগরে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের ঘরের তালা ভাঙ্গলেন ইউএনও

আপডেট: মার্চ ১৬, ২০২৪, ১২:০৮ অপরাহ্ণ

আব্দুর রউফ রিপন, নওগাঁ প্রতিনিধি:


নওগাঁর রাণীনগরে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের বরাদ্দকৃত বাসার তালা ভেঙ্গে অন্যকে বাসায় তুলে দিলেন ইউএনও। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার এমন কর্মকাণ্ডে পরিষদের কর্মকর্তাদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। অপরদিকে উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন সরকারি বাসায় বছরের পর ভাড়া, বিদ্যুৎ ও পানি বিল পরিশোধ না করে যে সব কর্মকর্তা-কর্মচারী বসবাস করছেন তাদের প্রতি উদাসীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।

গত ফেব্রুয়ারির ২৯ তারিখে উপজেলা প্রকৌশলী ইসমাইল হোসেন স্বাক্ষরিত স্মারক লিপি থেকে জানা যায় যে ১০ম গ্রেডের নন ক্যাডার সহকারী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা রাজিয়া মার্জিয়ার আবেদনের প্রেক্ষিতে উপজেলা পরিষদের বাসা বরাদ্দ কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক উপজেলা পরিষদের পলাশ দ্বিতীয় তলায় ইউনিট নং-৩ এ ১মার্চ ২০২৪ হতে শর্ত সাপেক্ষে বরাদ্দ প্রদান করা হয়।

তারই প্রেক্ষিতে রাজিয়া মার্জিয়াকে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রউফ দুলু ওই বাসায় ওঠার অনুমতি প্রদান করেন। অনুমতি পাওয়ার পর সহকারি নির্বাচন কর্মকর্তা ওই বাসায় ওঠার প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে তালা দিয়ে রাখেন। একই বাসা বরাদ্দ পাওয়ার জন্য গত ১৩ মার্চ আবেদন করেন উপজেলা পরিষদের অন্য বাসায় বসবাসকারী তথ্যসেবা অফিসের প্রকল্প কর্মকর্তা জেবুন নেসা।

তার আবেদনের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে তাবাসসুম উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কিংবা বাসা বরাদ্দ কমিটির সঙ্গে আলাপ না করেই ওই বাসার তালা ভেঙ্গে ওঠার অনুমতি দেন। পরবর্তিতে বিষয়টি চেয়ারম্যান নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানালেও কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি উম্মে তাবাসসুম। এতে করে বিষয়টি নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনাকর অবস্থার সৃষ্টি হয়।

এ বিষয়ে মুঠোফোনে তথ্য আপা জেবুন নেসা জানান যে, আবেদন করার কারণে ইউএনও স্যার তাকে পলাশ ভবনের ৩ নং বাসায় উঠতে বলেছেন বলেই তিনি সেখানে মালপত্র রেখেছেন। বৃহস্পতিবার (১৪মার্চ) দুপুরে বিষয়টি সম্পর্কে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে তাবাসসুম মুঠোফোনে জানান যে, তিনি জেবুন নেসাকে ওই বাসায় তালা ভেঙ্গে উঠতে বলেননি। এরপর তিনি একটি শুনানিতে আছেন, পরে কথা হবে বলে মোবাইল ফোনের সংযোগ কেটে দেন।

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ দুলু বলেন

ইউএনও’র এমন কর্মকাণ্ডে আমি ব্যথিত হয়েছি। আবেদনের প্রেক্ষিতে কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক বাসাটি বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে একজন কর্মকর্তাকে তাহলে সেই বাসাটি ইউএনও আবার কিভাবে নতুন করে অন্যজনকে বরাদ্দ প্রদান করেন। তিনি বরাদ্দ প্রদানের আগে বিষয়টি আমাকে জানানোর প্রয়োজনবোধও করেননি।

প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের এমন উল্টাপাল্টা কর্মকাণ্ডে উপজেলা প্রশাসনের মধ্যে দলাদলির সৃষ্টি হয় যা সরকার ও উপজেলাবাসীর জন্য মঙ্গলজনক নয়। দেশ ও জনগণের স্বার্থে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের এই বিষয়গুলো একটু যত্ন সহকারে দেখা উচিত বলে আমি মনে করি।