রাণীনগরে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের শুদ্ধি অভিযান

আপডেট: আগস্ট ২৯, ২০২৪, ৮:৫২ অপরাহ্ণ

নওগাঁ প্রতিনিধি:


নওগাঁর রাণীনগরে মেয়েদের শিক্ষা গ্রহণে আদর্শ বিদ্যাপিঠ হচ্ছে রাণীনগর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়। ১৯৭৭ সাল থেকে উপজেলার মেয়েদের মাঝে সুনামের সঙ্গে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে আসছে এই প্রসিদ্ধ বিদ্যাপিঠটি। কিন্তু বিগত এক দশকের বেশি সময় ধরে রাজনৈতিক যাতাকলে পড়ে বিদ্যাপিঠটি তার সুনামের অনেকাংশই হারিয়ে ফেলেছে। বিশেষ করে বিদ্যাপিঠটির এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে শিক্ষক পিটু স্যারের একটি ন্যক্কারজনক ঘটনা দেশের মানুষের কাছে বিদ্যাপিঠটিকে নতুন করে নেতিবাচক ভাবে পরিচয় করে দেয়।
এরপর থেকে এক একটি ঘটনা বিদ্যাপিঠটিকে অনেকটাই সমালোচনা ও দুর্নামের তালিকার শীর্ষে তুলে এনেছে।


এমন দুর্নাম ও মন্দ অভিযোগের তালিকা থেকে বিদ্যাপিঠটিকে নিচে নামিয়ে আবার সুনামের সঙ্গে পাঠদানের সুস্থ্য একটি পরিবেশ ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার দুপুরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন পরিষদ রাণীনগরের কিছু শিক্ষার্থীরা স্কুলটিতে শুদ্ধি অভিযান চালায়। নওগাঁ আস্তান মোল্লা ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন পরিষদ রাণীনগরের সদস্য রুহুল আমীন রিমনের নেতৃত্বে ১৩ জন শিক্ষার্থী এই অভিযোনে অংশগ্রহণ করে।


এসময় শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের অনুমতি সাপেক্ষে তাদের অভিমত ও অভিযোগগুলো ব্যক্ত করতে গিয়ে জানায় বর্তমানে শিক্ষকরা অর্থ কামানোর নেশায় পড়ে প্রাইভেট পড়ানোর যুদ্ধে নেমেছেন আর সেই যুদ্ধে পরীক্ষায় বেশি নম্বর পাওয়ার আশায় বলির পাঠা হচ্ছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। এছাড়া বিদ্যাপিঠের পরিচালনায় যারা থাকেন তারা বিদ্যালয়ের আয়কৃত ও বরাদ্দকৃত অর্থের সঠিক ব্যবহার না করে নিজেদের পকেটে তুলতেই ব্যস্ত থাকেন। এতে করে আধুনিকতা ও সঠিক উন্নয়ন থেকে বছরের পর বছর বঞ্চিত হয়ে আসছে বিদ্যাপিঠটি। পরবর্তিতে যেন এই রকম অভিযোগের আর পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেই বিষয় থেকে বেরিয়ে এসে যত্নসহকারে পাঠদানে নিজেদের নিযুক্ত করার প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

বিদ্যাপিঠটিকে পুনরায় পূর্বের স্থানে ফিরিয়ে আনতে আগামীতে একাধিক শিক্ষার্থী যে কোন সময় পরিবেশ বজায় রেখে বিদ্যাপিঠটি পরিদর্শন করা, নিয়মিত অভিভাবক সমাবেশ, সকলের পরামর্শ সাপেক্ষে স্কুলের বরাদ্দকৃত অর্থের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা নেয়াসহ বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করে শিক্ষার্থীরা। এসময় শিক্ষার্থীরা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের কক্ষে বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক ও অন্যান্য কর্মচারীদের কাছে বিদ্যালয়ের আলোচিত বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরে এবং সেই সব অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত শিক্ষকরা তাদের ব্যাখ্যা প্রদান করেন। এরপর শিক্ষক ও অন্যরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শপথ বাক্য পাঠ করেন। এসময় সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মনোয়ার হোসেন তোতা, শিক্ষক বেগম নাসিমা খাঁন, জাহাঙ্গীর আলম, হাসিবুর রহমান প্রমুখ।

শেষে পুরাতন সকল গ্লানি ও অভিযোগ ভুলে গিয়ে নতুন বাংলাদেশের জন্য আগামীতে একটি সুষ্ঠ, সুন্দর, সুস্থ্য ও ছিমছাম পরিবেশে সঠিক পন্থায় শিক্ষার্থীদের পাঠদানের অঙ্গিকার এবং সবাই মিলে নতুন করে দেশের মধ্যে ভিন্নধর্মী একটি বিদ্যাপিঠ হিসেবে বিদ্যালয়কে বিনির্মাণ করার কাজে নিজেদের নিয়োজিত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ