রাবিতে জমে উঠেছে শীতকালীন পিঠার আড্ডা

আপডেট: নভেম্বর ১২, ২০২৪, ৯:৫৮ অপরাহ্ণ

রাবি প্রতিবেদক


প্রকৃতিতে ইতিমধ্যে শীতের আমেজ বইতে শুরু করেছে। আপামর বাঙালির কাছে এই সময়টা পিঠার জন্য বেশ প্রিয়। হিম হাওয়া বাড়ার সাথে সাথে পিঠা আড্ডাও জমজমাট হতে শুরু করে। ব্যতিক্রম নয় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোও। শীতের আগমনের সাথে সাথে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাসেও জমে উঠেছে পিঠা খাওয়ার আড্ডা। সন্ধ্যা নামতেই শিক্ষার্থীদের ভিড়ে জমে উঠছে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিসি প্রাঙ্গনসহ বিভিন্ন স্থান। পরিবারের সাথে থাকতে না পারলেও শীতের শুরুতে পিঠার স্বাদ আস্বাদন করতে পারছেন শিক্ষার্থীরা।



প্রতিবছরই শীত আসতে না আসতেই রাবিতে শুরু হয় হরেক রকম শীতকালীন পিঠা বিক্রি। চলে শীতের অধিকাংশ সময় জুড়ে। আর এসব দোকানের ধোঁয়া ওঠা গরম গরম পিঠা খেতে খেতে জমে উঠে পিঠাপ্রেমী শিক্ষার্থীদের আড্ডা। পিঠা খাওয়ার রীতি বাংলার চিরায়ত সংস্কৃতির অংশ। কথায় আছে ‘শীতের পিঠা, খেতে ভারি মিঠা’। তাই শীত এলেই শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি স্থানীয় মানুষজনও ভিড় জমায় ক্যাম্পাসের পিঠার দোকানগুলোয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, সন্ধ্যা নামার আগেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে শীতকালীন হরেক রকম পিঠার পসরা সাজিয়ে বসছেন পিঠা বিক্রেতারা। এই উদ্যোক্তাদের মধ্যে স্থানীয় নারী-পুরুষের পাশাপাশি আছেন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া কিছু তরুণও। বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল স্কুল মাঠ, খালেদা জিয়া হল ও রোকেয়া হলের সামনে পিঠার দোকান বসলেও সবচেয়ে বেশি জমে উঠেছে শহীদ সুখরঞ্জন সামাদ্দার ছাত্র-শিক্ষক সংস্কৃতিক কেন্দ্রের (টিএসসিসি) মাঠে।

পিঠার অস্থায়ী দোকানগুলো ঘুরে দেখা যায়, অনেকগুলো চুলায় একসঙ্গে পিঠা তৈরি হচ্ছে। আতপ চালের আটা দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে চিতই পিঠা, চালের গুঁড়া দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে ভাপা পিঠা, পাটিসাপটা পিঠা, পুলি পিঠাসহ হরেক রকমের পিঠা। গরম গরম পিঠা শিক্ষার্থীদের আড্ডার আসরে পৌঁছে দিচ্ছেন দোকানের কর্মচারীরা। তবে কিছু দোকান রাবির শিক্ষার্থীদের দিতে দেখা যায়। যেখানে শিক্ষার্থীরাই পরিবেশনা করছেন।

হরেক রকমের ভর্তায় তৈরি করা প্লেট সাজিয়ে দিচ্ছেন তারা। ভর্তাগুলোর মধ্যে রয়েছে— চিংড়ি ও মাছের শুঁটকি, বেগুন, কাঁচামরিচ, ধনিয়া পাতা, কালিজিরা ভর্তা। পিঠার সঙ্গে সঙ্গে ভর্তার প্লেটও চলে যাচ্ছে আড্ডাস্থলে। গরম পিঠা আর তার সঙ্গে নানা রকম ভর্তায় আড্ডা যেন আরো জমে ওঠে।
একটি দোকানের সামনে বসে কথা হয় ফোকলোর বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসানের সঙ্গে। মেহেদী বলেন, ‘শীতকাল মানেই নিত্য নতুন খাবারের সমাহার। তেমনই শীতকালের একটি অন্যতম মজার খাবার পিঠা। পিঠা পছন্দ করে না এমন মানুষ মেলা ভার। আমিও তার ব্যতিক্রম নই। পরিবার ছাড়া পিঠা খেয়ে সব থেকে বেশি আনন্দ পাই টিএসসিসির মাঠে। এর মূল কারণ হলো, প্রায় সময় বন্ধু-বান্ধব নিয়ে একসাথে আসি। পিঠার জন্যই যেন শীতের আগমন। শীতের পিঠা খাওয়ার অনুভূতিটা আসলেই অন্যরকম।’

ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মরিয়ম ইসলাম বলেন, ‘সারাদিন ক্লাস-পরীক্ষা শেষে ক্লান্ত মন নিয়ে আমরা এখানে এসে বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে আড্ডা জমিয়ে পিঠা খাওয়ার ফলে সেই ক্লান্তি দূর হয়ে যায়। বাড়িতে থাকলে হয়তো পিঠা খেতাম, কিন্তু বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা জমিয়ে খাওয়ার সুযোগ হতো না।’

অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী শারমিন আক্তার বলেন, শীতকাল আসতেই বাড়িতে পিঠা বানানোর কাজ শুরু হতো। ক্যাম্পাস খোলা থাকায় মায়ের হাতে পিঠা খাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের এসব দোকানগুলো আমাদের মায়ের হাতের পিঠার কথা স্বরণ করিয়ে দিচ্ছে। বিভিন্ন রকম ভর্তাও পাওয়া যাচ্ছে এখানে।