শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১ ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
রাবি প্রতিবেদক:
আজ পহেলা অগ্রহায়ণ ১৪৩০। অগ্রহায়ণ এলেই মাঠজুড়ে আমন ধান কাটার ধুম পড়ে। এ মাসে কৃষক ঘরে তোলেন আমন ধান। আমন ধান নিয়ে কৃষকের ঘরে তৈরি তৈরি হয় উৎসবের আমেজ। খাওয়া হয় নতুন ধানের ভাত, পিঠা-পায়েস। কেনা হয় নতুন জামাকাপড়। সব মিলিয়ে কৃষকের আনন্দ-উৎসব। যা মনে করিয়ে দেয় বাঙালির অতীত ইতিহাস ও সংস্কৃতিকে।
চিরায়ত বাংলার মানুষের দীর্ঘদিনের এ ইতিহাস ঐতিহ্যকে বিশ্বব্যাপী তুলে ধরতে নবান্ন উৎসব পালন করছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এগ্রোনমি অ্যান্ড এগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। প্রতি বছরের মতো এবারও বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা, পিঠা-খাওয়া, নাচ গান, আনন্দ-উল্লাসের মধ্যে দিয়ে শুরু হয় ‘নবান্ন উৎসব-২০২৩’।
বুধবার (১৫ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টায় কৃষি অনুষদের সামনে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে উৎসবের উদ্বোধন করেন সহ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সুলতান-উল-ইসলাম। দিবসটি উপলক্ষে এদিন কৃষি অনুষদের সামনে থেকে এক বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়। র্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। র্যালি শেষে পিঠা উৎসব, খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কারের আয়োজন করা হয়।
উদ্বোধন শেষে সহ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, বাঙালির ইতিহাস ও গ্রামীণ ঐতিহ্যের সংস্কৃতিকে তুলে ধরার জন্য আমাদের কৃষি অনুষদ কাজ করে যাচ্ছে। সেই ধারাবাহিকতায় আজকের নবান্ন উৎসব। বাঙালির ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা আমাদের দায়িত্ব। গ্রাম-বাংলার ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে ব্যর্থ হলে তাদেরকে বঞ্চিত করা হবে।
উৎসব অঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, নবান্ন উৎসবে শিক্ষার্থীরা নিজেদের হাতের তৈরি ১২টি পিঠার স্টল তৈরি করেছেন। জামাই পিঠা, বুটের বরফি, পাটি সাপটা, গোলাপ ফুল, ডাবের পিঠা, লবঙ্গ পিঠা, শামুক পিঠা, রুপালি পিঠা, মোহন ভোগ, ডিম সুন্দরী, গাজরের হালুয়া ডিমপুরি, গোলাপ, আরশি নগর, ঝাল-মিষ্টি, হৃদয়হরণ পিঠা, সূর্যমুখী, পাকোয়ান পিঠা, শামু- পিঠা, লবঙ্গ-লতিকা, রসে ভরা সবজি পিঠা, রস মলাই, মাছের পিঠা, খিরপুলিসহ প্রায় দেড় শতাধিক পদের পিঠা শোভা পাচ্ছে। বাহারি নামের এসব পিঠা খেতে শিক্ষার্থীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। ১০ টাকা থেকে শুরু করে বিভিন্ন দামে বিক্রি হচ্ছে এসব পিঠা।
আয়োজনের বিষয়ে জানতে চাইলে এগ্রোনোমী এন্ড এগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন বিভাগের সভাপতি ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা কৃষির ছাত্র। গ্রাম বাংলা নিয়েই আমাদের পড়াশোনা। নবান্ন উৎসবের মাধ্যমে আমরা সবাইকে জানান দিতে চাই আমাদের গ্রাম বাংলার একটি ঐতিহ্য রয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় আজকে আমাদের এই নবান্ন উৎসবের আয়োজন।