বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
রাবি প্রতিবেদক :
যৌন হয়রানির দায়ে বহিষ্কৃত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রের উপ-প্রধান চিকিৎসক ডা. রাজু আহমেদের পুনর্বাসনের অপচেষ্টা করা হচ্ছে দাবি করে এর প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দের ব্যানারে আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে এই প্রতিবাদ জানানো হয়। পরে উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দেন আন্দোলনকারীরা।
শিক্ষার্থীদের দাবি ডা. রাজু একজন প্রমাণিত ধর্ষক। তাকে একবার বহিষ্কার করা হয়েছে কিন্তু সে আবারও তার স্ত্রীর নামে ক্যাম্পাসে বরাদ্দ দেওয়া বাসায় অবস্থান করতেছে৷ সে হাইকোর্টে রিট করে আবার ক্যাম্পাসে পুনর্বহাল হওয়ার চেষ্টা করতেছে।এই ফ্যাসিবাদের দোসর ও ধর্ষককে কোনোভাবে ক্যাম্পাসে অবস্থান করতে দেওয়া হবে না। এই ধর্ষক ক্যাম্পাসে অবস্থান করা নারী শিক্ষার্থীদের জন্য হুমকি স্বরূপ।
এ সময় শিক্ষার্থীরা, ‘ফ্যাসিবাদের দোসর ক্যাম্পাসে কেন?’, ‘রাজুর কালো হাত ভেঙে দাও, গুড়িয়ে দাও’, ‘লুইচ্চা রাজুর দুই গালে জুতা মারও তালে তালে’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘ক্যাম্পাসে যৌন হয়রানি কেন?’সহ বিভিন্ন লেখা সংবলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করে প্রতিবাদ জানান।
উপাচার্য বরাবর দেওয়া স্মারকলিপিতে শিক্ষার্থীরা উল্লেখ করেন, রাবি মেডিকেলে একজন প্রমাণিত যৌণ নিপীড়ককে পুনর্বাসনের অপচেষ্টা চলছে। ফলিত রসায়ন ও রসায়ন প্রকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাবিনা ইয়াসমিন ম্যাডামের মেয়ে দন্ত চিকিৎসারত অবস্থায় ডা: রাজু আহমেদের দ্বারা যৌণ নিপীড়নের শিকার হয়।
অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্র হতে বহিষ্কার করা হয়। অতঃপর বর্তমানে তিনি হাইকোর্টে রিটের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রে পুনর্বাসনের অপচেষ্টা করছে।
এছাড়াও এই প্রশাসন গত ১৬ অক্টোবর তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে বাসা বরাদ্দ দেয়। ডাঃ মোঃ রাজু আহমেদের মতো চিকিৎসক বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নারী শিক্ষার্থী ও কর্মচারী- কর্মকর্তাদের কন্যা সন্তানদের জন্য অনিরাপদ ও হুমকিস্বরূপ।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে বিভিন্ন বিভাগ ও ইন্সটিটিউটের প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, এর আগে গত ৩০ অক্টোবর রাতে নগরীর তালাইমারীর আমেনা ক্লিনিকে দাঁতের চিকিৎসাকালে ডা. রাজুর বিরুদ্ধে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের মেয়েকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠে। ঘটনাস্থলেই ভুক্তভোগীর মা ও স্থানীয়রা তাকে মারধর করে।
সেদিনই নগরীর বোয়ালিয়া থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা করেন ভুক্তভোগীর মা (বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক)। পরে যৌন হয়রানির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ডা. রাজুকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩১তম সিন্ডিকেট সভায় স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করার সিদ্ধান্ত হয়।