রাবিতে হাল্ট প্রাইজের রেজিস্ট্রেশন শুরু ৯ ডিসেম্বর

আপডেট: ডিসেম্বর ৭, ২০২৪, ৯:০৮ অপরাহ্ণ

রাবি প্রতিবেদক


রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮ম বারের মতো আয়োজিত হতে যাচ্ছে হাল্ট প্রাইজ ২০২৪-২৫। আগামী ৯ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে এবারের রেজিস্ট্রেশন। চলবে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। শনিবার (৭ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনের টিচার্স লাউঞ্জে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।



সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন হাল্ট প্রাইজ, রাবির ডিরেক্টর প্রান্ত বড়ুয়া। তিনি বলেন, সাধারণত চারটি ধাপে এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। সেগুলো হলো- অন ক্যাম্পাস প্রোগ্রাম, রিজিওনাল সামিট, গ্লোবাল অ্যাকসিলারেটর এবং গ্লোবাল ফাইনাল। অংশগ্রহণকারী প্রত্যেকটি দল মোট চারটি ধাপে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবে।

সেগুলো হলো- টিম ফরমেশন, এবস্ট্রাকট সাবমিশন, এলোভেটর পিচ, ফাইনাল প্রেজেন্টেশন এবং প্রশ্নোত্তর পর্ব। এই বছর অন ক্যাম্পাস প্রতিযোগিতায় সকল অংশগ্রহণকারী দল গুলোর মধ্যে সেরা ৩০ টি দল সেমিফাইনাল রাউন্ডে এবং সেখান থেকে ৬ টি দল ফাইনালে অংশগ্রহণের জন্য মনোনীত হবে। এই ৬ টি দলের মধ্যে সেরা ৩ টি দলকে চূড়ান্ত বিজয়ী হিসেবে মনোনীত করা হবে। সেরা ৩ দলের জন্য থাকবে আকর্ষনীয় পুরস্কার।

তিনি আরও বলেন, অন ক্যাম্পাস রাউন্ডে বিজয়ী দলগুলো পরবর্তীতে রিজিওনাল সামিটে এবং সেখানে বিজয়ী দলটি সুযোগ পাবে গ্লোবাল অ্যাকসিলারেটর অংশগ্রহণ করার। গ্লোবাল অ্যাকসিলারেটর এর সেরা ছয়টি দল সুযোগ পাবে গ্লোবাল ফাইনালে। গ্লোবাল ফাইনাল এর চূড়ান্ত বিজয়ী দলটি তাদের বিজনেস আইডিয়াটি বাস্তবায়নের জন্য পাবে ১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

টিম গঠনের প্রক্রিয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত সকল শিক্ষার্থী এই প্রতিযোগিতায় ৩-৫ জনের একটি দল গঠন করে অংশগ্রহন করতে পারবেন। প্রতিযোগিদের অবশ্যই রাবির যেকোনো ডিপার্টমেন্ট অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী হতে হবে। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রনের জন্য প্রতিযোগীদের কোন রেজিস্ট্রেশন ফি প্রদান করতে হবে না।

অংগ্রহণকারী প্রত্যেক প্রতিযোগীর সুবিধার্থে তাদের জন্য বিশেষ ট্রেইনিং সেশনের আয়োজন করা হয়েছে। যেখানে ট্রেইনার হিসাবে থাকবেন পূর্ববর্তী হাল্ট প্রাইজ বিজয়ী সহ আরো বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় সফলতার প্রমাণ রাখা বর্তমান ও প্রাক্তন প্রতিযোগীরা। এ ছাড়াও প্রতিযোগীদের জন্য থাকছে ৬টি বিশেষ ওয়ার্কশপ। যেখানে অতিথি হিসাবে থাকবেন খ্যাতনামা বিভিন্ন মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ এবং স্বনামধন্য উদ্যোক্তা

হাল্ট প্রাইজ অন ক্যাম্পাস ২৪-২৫ এ উপদেষ্টা হিসেবে থাকবেন- পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক এবং রাবির আইকিউএসি’র অতিরিক্ত পরিচালক ড. মো. মনিমুল হক, রাবির সিসিডিসির পরিচালক ও লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. নুরুল মোমেন এবং ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. জহুরুল আনিস। এই বছর হাল্ট প্রাইজ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এবং ক্যারিয়ার কাউন্সিলিং ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের যৌথ উদ্যোগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে হাল্ট প্রাইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক মনিমুল হক বলেন, বাংলাদেশে এই মূহুর্তের শিক্ষিত বেকার আছে এবং প্রতিবছর যে গ্রাজুয়েটরা বের হয় তার মাত্র ৪-৫% সরকারি জব পায়। বাকি ৯৫ ভাগ কিন্তু সরকারি জব পায় না। তার মানে প্রতিবছর ৩০ লাখ এর সাথে যোগ হতে থাকে। এরা আসলে কি ভাবে নিজেদের কে ইমপ্লোয়েড করবে? এটা বাংলাদেশের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন, বেসরকারি জব যেটা আছে, সেটা দিয়ে ৯৫ শতাংশকে জব প্রভাইড করা সম্ভব না। সম্ভব একমাত্র যদি উদ্যোক্তা তৈরি করা যায়। এবং এই উদ্যোক্তা যে কেউ চাইলে আবার হতে পারে না৷ এটা যার মধ্যে ওই পটেনশিয়ালটিটা আছে সেটাকে যদি ফাইন্ড আউট করা যায় তাহলে উদ্যোক্তা হওয়া যায়।

এসময় হাল্টা প্রাইজ, রাবির বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীলরা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, ছাত্রদের নোবেল পুরস্কার খ্যাত হাল্ট প্রাইজ, হাল্ট ফাউন্ডেশন এর পৃষ্ঠপোষকতায় এবং হাল্ট ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস স্কুল কর্তৃক আয়োজিত একটি আন্তর্জাতিক বার্ষিক প্রতিযোগিতা। হাল্ট ফাউন্ডেশনের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক বাল্টিন এরিক হাল্টের নাম অনুসারে এই প্রতিযোগিতার নাম রাখা হয় হাল্ট প্রাইজ। হাল্ট প্রাইজ প্রতিবছর প্রায় ১২১ টি দেশ এবং তিন হাজার এর অধিক বিশ্ববিদ্যালয় অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।

২০০৯ সালে হাল্ট ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস স্কুলের শিক্ষার্থীদের একটি দল এটি চালু করার পর থেকে, হাল্ট প্রাইজ বিশ্বব্যাপী ১০ লাখেরও বেশি তরুণকে সম্পৃক্ত করেছে। হাল্ট পরিবার, যারা ঊঋ এডুকেশন ফার্স্ট এবং হাল্ট ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও পৃষ্ঠপোষক, প্রতি সেপ্টেম্বরে ক্যাপস্টোন ইভেন্টে বিজয়ী দলকে ১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুদান প্রদান করে তাদের ব্যবসার ধারণাকে সফল করতে ভূমিকা রাখেন।

হাল্ট প্রাইজ শিক্ষার্থী উদ্যোক্তাদের উদ্ভাবনী সামাজিক উদ্যোগের মাধ্যমে বিশ্বের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলো সমাধান করতে অনুপ্রাণিত করে, যা বৈশ্বিক ইতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (ঝউএ) সাথে সামঞ্জস্য রেখে বার্ষিক চ্যালেঞ্জ সমাধানে উচ্চ-প্রভাবযুক্ত স্টার্টআপ তৈরি করার জন্য কাজ করছে। প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন প্রতিবছর একটি চ্যালেঞ্জের বিষয় নির্বাচন করেন এবং প্রতি সেপ্টেম্বরে বিজয়ী ঘোষণা করেন।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ