রাবির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা মাদার বখ্শের মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

আপডেট: জানুয়ারি ২০, ২০২৫, ৯:২১ অপরাহ্ণ

রাবি প্রতিবেদক


রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা মাদার বখ্শের ৫৮তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল করেছে মাদার বখ্শ হল কর্তৃপক্ষ। সোমবার (২০ জানুয়ারি) রাবির মাদার বখ্শ হলের মসজিদে বিকাল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এ আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভা শেষে দোয়া মাহফিলের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি সমাপ্ত হয়।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাবির কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মতিয়ার রহমান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের শিক্ষাঙ্গনে মাদার বখ্শ যে অবদান রেখে গেছেন, তার তুলনা হয় না। শুধু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় নয়, গোটা উত্তরবঙ্গের শিক্ষা ক্ষেত্রে তার ভূমিকা অনস্বীকার্য। তিনি অন্যায়কে কখনো প্রশ্রয় দেননি এবং সর্বদা সমাজ ও রাষ্ট্রের উন্নয়নে কাজ করেছেন। শিক্ষার্থীরা তার জীবন ও আদর্শ থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে সমাজকে উন্নত করতে পারবে। আমরা তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।”

মাদার বখ্শের পৌত্র কাজি হা-মিম সালেহ্ বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় মাদার বখ্শের অবদান সর্বজনবিদিত। তিনি ন্যায়ের পথে কাজ করেছেন। তবে প্রশাসনিকভাবে তার জন্মবার্ষিকী এবং মৃত্যুবার্ষিকী পালনে কিছুটা অবহেলা রয়েছে। আমি দাবি জানাই, প্রশাসন কেন্দ্রীয়ভাবে এ দিনগুলো পালনের উদ্যোগ নিক। আজকের আয়োজন দেখে আমি আনন্দিত।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন মাদার বখ্শ হলের প্রাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. শাহ্ হোসাইন আহমদ মেহেদী। তিনি উপস্থিত শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন। দোয়া মাহফিলে হলের শিক্ষার্থীসহ প্রায় শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, মাদার বখ্শ ছিলেন এক প্রতিভাদীপ্ত কর্মী ও জননেতা। উত্তরবঙ্গের প্রতি অবহেলা তার মনকে ব্যথিত করত। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে বলেছিলেন, “যদি রাজশাহীতে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন না হয় তবে উত্তরবঙ্গকে স্বতন্ত্র প্রদেশ ঘোষণার দাবি করতে হবে।” তার এই বলিষ্ঠ নেতৃত্বের ফলস্বরূপ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট পাস হয়।

রাজশাহী শহরে ১৯টির বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার মাধ্যমে তিনি শহরটিকে “শিক্ষানগরী” হিসেবে গড়ে তুলতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭৪ সালে তার নামে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি আবাসিক হলের নামকরণ করা হয় “মাদার বখ্শ হল”। এছাড়া রাজশাহীতে তার নামে সড়ক, ইনস্টিটিউট এবং গ্রন্থাগারের নামকরণ করা হয়েছে। তার সম্মানে “মাদার বখ্শ সাহিত্য সংস্কৃতি পুরস্কার” প্রদান করা হয়।

১৯০৫ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি নাটোর মহকুমার সিংড়ায় জন্মগ্রহণ করা মাদার বখ্শ ১৯৬৭ সালের ২০ জানুয়ারি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও জনকল্যাণে নিবেদিতপ্রাণ এই নেতার অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

Exit mobile version