রাবি প্রতিবেদক :রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) নির্মাণাধীন ভবন ধসের ঘটনায় আহত শ্রমিকদের পর্যাপ্ত আর্থিক ক্ষতিপূরণ প্রদানসহ চার দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে শিক্ষক- শিক্ষার্থীরা। সোমবার (০৫ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ বুদ্ধিজীবী চত্বরের সামনে এই কর্মসূচি পালন করেন তারা।
তাদের দাবিগুলো হলো- নির্মাণাধীন ভবন ধসের ঘটনায় আহত শ্রমিকদের পর্যাপ্ত আর্থিক ক্ষতিপূরণ প্রদান, কাজের সুষ্ঠু পরিবেশ ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দায়িত্ব অবহেলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং পুনরায় ভবনের গুনগতমান পরীক্ষা করা।
এসময় পপুলেশন সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী আমান উল্লাহ আমানের সঞ্চালনায়
রাকসু আন্দোলন মঞ্চের আহবায়ক আব্দুল মজিদ অন্তর বলেন, নির্মাণাধীন ১০তলা ভবন নির্মাণের মান ঠিক আছে কিনা, ভবনটি টেকসই হবে কিনা, এ বিষয়ে আমরা সন্দিহান। কারণ ইতোমধ্যে একটি ভবন ধসে পড়েছে। আমাদের কাছে এ ভবনটি এখনো ঝুকিপূর্ণ মনে হচ্ছে।
ভবন নির্মাণ হওয়ার পর আবার ভেঙে পড়তে পারে বলে আমরা ধারণা করছি। তাই বুয়েট থেকে বিশেষজ্ঞ সিভিল ইঞ্জিনিয়ার এনে এর তদন্ত সাপেক্ষে কাজ শুরু করা হোক। এছাড়াও এ ভবন ধসের ঘটনায় যেসকল শ্রমিক আহত হয়েছে তাদেরকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি।
অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, ভবন ধসের ঘটনাকে আমরা দুর্ঘটনা বলতে পারিনা, এটি একটি চরম গাফিলতির ফল। দুর্নীতির ফলেই এসব ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। যেসব কোম্পানি এসব কাজ করছে, তারা বিল্ডিং কনস্ট্রাকশনের সঠিক নিয়মনীতি অনুসরণ করছে না। এদিকে নামে মাত্র তদন্ত কমিটি গঠন করে দায়সারা কাজ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এধরণের বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করতে গেলে সেখানে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের রাখতে হয়। আমরা চাই সঠিক তদন্ত করার পরে এ ভবনের কাজ শুরু করা হোক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এভাবে ভবন ধসের ঘটনা মর্মান্তিক। এখানে একটা নামমাত্র তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। যাদের মধ্যে কোন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার নেই। কনস্ট্রাকশনের কাজ ভাল জানে এমন কেউ নেই তদন্ত কমিটিতে। নিরপেক্ষ বডি থেকে এই তদন্ত করা উচিত। একটি রাষ্ট্রের জন্য মানুষ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা মানুষের প্রাণকে কতটুকু মূল্য দেই?
আজ যারা আহত হলেন, তারা শ্রমিক না হয়ে শিক্ষার্থী হলে বিশ্ববিদ্যালয় উত্তাল হয়ে যেত। গাফিলতি ছাড়া একটি ভবন ধসে পড়ে না। তদন্ত কমিটির একটা রিপোর্ট ছাড়া এ ভবনের কোন কাজ চলতে পারে না। কিন্তু কাজটি চলছে৷ কোন সভ্য দেশে এটি কাম্য নয়।
মানববন্ধনে ফোকলোর বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আমিরুল ইসলাম কনকসহ বিভিন্ন বিভাগের ১৪ জন শিক্ষক-শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।