শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩ মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
রাবি প্রতিবেদক
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. সাহাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে প্রকাশনা জালিয়াতি করে পদোন্নতি পাওয়ার অভিযোগ তুলেছেন আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোরশেদুল ইসলাম। রোববার (২৪ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটারিয়ায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ তোলেন। তবে, এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন অভিযুক্ত অধ্যাপক ড. মো. সাহাল উদ্দিন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মো. মোরশেদুল ইসলাম জানান, অধ্যাপক ড. মো. সাহাল উদ্দিন ২০১২ সালের ৮ আগস্ট সহযোগী অধ্যাপক পদে পদায়নের জন্য আবেদন করেন। তার আবেদনপত্রে উল্লেখ করা তিনটি প্রকাশনার মধ্যে একটি বাংলা প্রকাশনা রয়েছে মর্মে উল্লেখ করেছেন এবং সহযোগী অধ্যাপক পদে পদায়নের যোগ্যতা পূরণ করেছেন বলে দাবি করেছেন। তবে তার উল্লিখিত দুইটি প্রকাশনা যথাক্রমে “দ্য আনহোলি ডিলে অব দ্য লাস্ট কেয়ারটেকার গভার্নমেন্ট: বাংলাদেশ ইজ অন দ্য ভার্জ অব আ কনস্টিটিউশনাল ক্রাইসিস” এবং “কনফ্লিক্ট অব ল’জ অ্যান্ড ইট’স ইমপ্যাক্ট অন চাইল্ড লেবার ইস্যুজ: বাংলাদেশ পার্সপেক্টিভ” প্রকৃতপক্ষে অন্য লেখকের এবং তা তিনি জালিয়াতির মাধ্যমে নিজের নামে প্রকাশ করেছেন।
তিনি আরও বলেন, ২০১৮ সালের ৪ জানুয়ারি ড. সাহাল উদ্দিন প্রফেসর পদে পদায়নের জন্য যে ছয়টি প্রকাশনা তার নিজের বলে দাবি করেছেন, সেগুলোর সবই অন্যের কাজ থেকে চুরি করে প্রকাশিত বলে প্রমাণিত হয়েছে। তিনি বর্তমানে প্রেষনে আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগে কর্মরত আছেন। সহযোগী অধ্যাপক ও অধ্যাপক পদে প্রকাশনা জালিয়াতির মাধ্যমে পদায়ন লাভ করলেও এই পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। তবে প্রকাশ আছে যে, তিনি স্বৈরাচারী প্রশাসনের খুব আস্থাভাজন ব্যাক্তি হিসেবে স্বৈরাচারী সরকারের সকল বিভাগের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে আসছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জালিয়াতির মাধ্যমে প্রকাশনা কেন অনৈতিক কার্য হিসেবে গণ্য হবে না?, প্রকাশনা জালিয়াতির মাধ্যমে অর্জিত পদায়ন কেন বাতিল করা হবে না?, প্রকাশনা জালিয়াতির কারণে অধ্যাপক ড. সাহাল উদ্দিনকে কেন পূর্ব পদে পদনমিত করা হবে না? এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ১৯৭৩ এর ৫৫ (৩) ধারা অনুযায়ী নৈতিক স্খলনের জন্য ড. সাহাল উদ্দিনকে চাকরি থেকে অব্যাহতি প্রদান কেন করা হবে না?
তবে, এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন অভিযুক্ত অধ্যাপক ড. মো. সাহাল উদ্দিন।
তিনি বলেন, আমি ২০১২ সালে সহযোগী অধ্যাপক এবং ২০১৮ সালে অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেছি। এর যথাক্রমে বারো এবং ছয় বছর পর অধ্যাপক মোরশেদুল ইসলাম এসব অভিযোগ তুলছেন। উনি এতোদিন কোথায় ছিলেন? উনি আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগের সভাপতি হওয়ার জন্য লালায়িত ছিলেন। সেটা হতে না পেরে এসব ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলছেন। তাছাড়া, উনি গত ১৪ নভেম্বর আমার বিরুদ্ধে রেজিস্ট্রার বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন। সেটার সিদ্ধান্ত আসার আগেই আবার সংবাদ সম্মেলন করতে হলো কেনো? উনি সম্পূর্ণ উন্মাদ হয়ে গেছেন।
তিনি আরও বলেন, অধ্যাপক মোরশেদুল ইসলাম ঠিকমত ক্লাসই নিতে পারেন না। এজন্য মাস্টার্সে কোনো শিক্ষার্থী উনার কোর্স নেননা। উনি এমনভাবে খাতা দেখেন, অসংখ্য খাতা তৃতীয় পরীক্ষককে দিয়ে দেখাতে হয়।
উল্লেখ্য, অধ্যাপক সাহাল উদ্দিন আইন বিভাগের অধ্যাপক। গত ১৭ নভেম্বর প্রেষণে তিনি আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগের সভাপতি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।