রবিবার, ৪ জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ২১ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
নিজস্ব প্রতিবেদক
ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখার ২৫তম সম্মেলন আগামী ৭ ডিসেম্বর। সম্মেলনকে সামনে রেখে এর মধ্যেই পদপ্রার্র্থীরা নড়েচড়ে বসেছেন। রাবি ছাত্রলীগের অভিভাবক খ্যাত রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের উচ্চ মহলের সঙ্গে চলছে পদপ্রার্থীদের লবিং, গ্রুপিং ও তদবির। সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সঙ্গে চলছে যোগাযোগ। ব্যক্তিগত সম্পর্কের পাশাপাশি আঞ্চলিক সম্পর্কের টানেও এগিয়ে চলছে প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ।
রাবি ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিবির অধ্যুষিত হওয়ার কারণে মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতা নির্বাচনে রাজশাহীর স্থানীয়দেরকে বেশি প্রাধান্য দেয় বলে অভিযোগ আছে। এর আগের কাউন্সিল ও পরবর্তীতে বহিষ্কারের পর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক মিলে চারজনই ছিলেন স্থানীয়। এ কারণে এবারে রাজশাহীর বাইরের যারা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন তাদের মধ্যে এ নিয়ে একটা শঙ্কাও রয়েছে। তবে মহনগর নেতারা বলছেন, ভিন্ন কথা। প্রাধান্য নয়, যোগ্য প্রার্থীকেই নেতা নির্বাচন করা হবে বলে তারা জানিয়েছেন।
এর মধ্যেই পদপ্রার্থীরা প্রতিদিন মহানগর পার্টি অফিসে ধর্না দিচ্ছেন। রাবি ছাত্রলীগকে নেতৃত্বে আসতে মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগসহ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগযোগও করছেন তারা। প্রার্থীরা ক্যাম্পাসে শোডাউন দিচ্ছেন নিয়মিত। আর এরই মাঝে কৌশলে নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সাংগঠনিক দুর্বলতা তুলে ধরার চেষ্টা করছেন। একে অপরের নেতিবাচক দিকগুলো বলে বেড়াচ্ছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। সেই সঙ্গে অছাত্র ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত কিছু নেতারাও এ সম্মেলনে প্রার্থী হচ্ছেন বলে জানা গেছে।
নতুন নেতৃত্বের বিষয়ে কথা বললে সব প্রার্থীই একই আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তারা বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ত্যাগী, সৎ ও আদর্শবান নেতাদের হাতে রাবি ছাত্রলীগের নেতৃত্ব দেবেন এটাই আমাদের প্রত্যাশা।’
বর্তমান কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদুল ইসলাম রাঞ্জু ও সাধারণ সম্পাদক খালিদ হাসান বিপ্লব উভয়ই সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। তবে এ বিষয়ে তারা এখনই মুখ খুলতে নারাজ। পদপ্রার্থী অনেকেই এখনও সভাপতি না সাধারণ সম্পাদক পদে লড়বেন সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাচ্ছেন না। পদপ্রার্থীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য রয়েছেন, বর্তমান কমিটির সহসভাপতি মেহেদী হাসান রাসেল, আতিকুর রহমান সুমন, দেলোয়ার হোসেন ডিলস, রানা চৌধুরী, তন্ময়ানন্দ অভি, মেহেদী হাসান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাহানুর সাকিল, গোলাম কিবরিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু, ছাত্রবৃত্তি বিষয়ক সম্পাদক টগর এম. ছালেহ, বঙ্গবন্ধু হল শাখার সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মিনারুল ইসলাম, হবিবুর হলের সভাপতি মামুন অর রশিদ, সৈয়দ আমীর আলী হলের সভাপতি সজল, মতিহার হলের সভাপতি শরীফ কাউয়ুম, ছাত্রলীগ সদস্য সাকিবুল হাসান বাকী, অনিক মাহমুদ বনি প্রমুখ। এছাড়া আরো অনেক নেতাকর্মী পদপ্রার্থী হচ্ছেন যারা এখনই নাম প্রকাশ করছেন না।
এখানে ছাত্রলীগ নেতা মামুন অর রশিদ ও তন্ময়ানন্দ অভি দুজনই প্রধান প্রকৌশলী সিরাজুম মুনীরকে মারধরের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কৃত হয়েছেন। সেই সঙ্গে এখানে কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতা আছেন যাদের ছাত্রত্ব অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে।
সম্মেলনের প্রস্তুতির ব্যাপারে রাবি ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদুল ইসলাম রাঞ্জু বলেন, ‘শুক্রবার রাতে আমরা বর্ধিত সভা ডেকেছি এবং শনিবার কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হবে। আর সম্মেলনের আগেই এই কয়েকদিনের মধ্যে সব আবাসিক হলগুলোর পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে।’ সম্মেলনের আগেই আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করতে পারবেন বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এ বিষয়ে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘উত্তরবঙ্গের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপিঠ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। রাজনীতিতে রাবি ছাত্রলীগের অবদান রয়েছে অনেক। অঞ্চল প্রাধান্যের ভিত্তিতে নয়, সৎ, যোগ্য ও ত্যাগী প্রার্থীকেই রাবি ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আনা হবে।’