রাবি প্রতিনিধি :
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) চিত্রকলা, প্রাচ্যকলা ও ছাপচিত্র বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সুজন সেনকে অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিভাগের অ্যাকাডেমিক কমিটির সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে নিশ্চিত করেছেন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. বনি আদম।
তিনি বলেন, আজ আমাদের বিভাগের অ্যাকাডেমিক কমিটির ১৪১তম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে কমিটি সদস্যদের সর্বসম্মতক্রমে ড. সুজন সেনকে শিক্ষা কার্যক্রম থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীরা গতকাল উনার বিরুদ্ধে অনেকগুলো বিভাগে জমা দিয়ে উনার পদত্যাগ দাবি করেছে। এই বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দেখবে। কাউকে চাকরিচ্যুত করার এখতিয়ার বিভাগের নেই।
এর আগে, রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) ড. সুজন সেনের চাকরিচ্যুতি দাবি করে বিভিন্ন অভিযোগের প্রমাণসহ লিখিত অভিযোগ পত্র উপাচার্য বরাবর জমা দেন শিক্ষার্থীরা। একই দাবিতে এদিন দুপুরে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন অ্যাকাডেমিক ভবনের সামনে অভিযুক্ত শিক্ষকের কুশপুত্তলিকা পোড়ান তারা।
লিখিত অভিযোগ পত্রে ড. সুজন সেনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো হলো- চরমমাত্রায় দুর্নীতিবাজ ও অপরাধী হওয়া, ন্যূনতম শিক্ষাদানেও অক্ষমতার পরিচয় দেওয়া, ইচ্ছাকৃতভাবে টার্গেটেড শিক্ষার্থীদের মার্ক কমবেশি করে দেওয়া, অন্যের শিল্পকর্ম নিজের নামে চালানো, কোর্স না করিয়েই পরীক্ষা নেওয়া, ব্যবহারিক কাজ ব্যবহারিকভাবে না করানো, হলের জিনিসপত্র ক্রয়ে জালিয়াতি করা ইত্যাদি।
জানা যায়, ড. সুজন সেন শহীদ জিয়াউর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ ছিলেন। ওই হলের শিক্ষার্থীরাও তার বিরুদ্ধে দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অভিযোগ করেছেন। এছাড়া চারুকলার বর্তমান ও সাবেকদের মধ্যে ৪৬ জন শিক্ষার্থী অনলাইনে গুগল ফর্ম পূরণের মাধ্যমে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন।
বিভাগের শিক্ষার্থীরা ইতোপূর্বে তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে বিভাগের সামনে ব্যানার টানিয়ে দিয়েছিল এবং বিচার দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি করেছে। একইসঙ্গে হলে প্রাধ্যক্ষের দায়িত্ব পালনের সময় বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে ‘ফাদার অব ক্রিমিনালস্’ অ্যাখ্যা দিয়ে হল গেটেও ব্যানার টানিয়ে দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
উল্লেখ্য, গত ২৭ আগস্ট যৌন নিপীড়নের ঘটনায় অভিযুক্ত রাবির আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাদিকুল ইসলাম সাগরকে সকল ধরনের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, গত ২ সেপ্টেম্বর ছাত্র-জনতা গণহত্যায় সমর্থন ও উস্কানি দেওয়া, একাডেমিক পরিসরে অনিয়ম-দুর্নীতি, যৌন হয়রানি ও অর্থ কেলেঙ্কারির অভিযোগে রাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. মুসতাক আহমেদকে বিভাগের সকল কার্যক্রম থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।