রাবি শিক্ষক বিষ্ণু কুমারকে সাময়িক বরখাস্তে হাইকোর্টের নির্দেশনা

আপডেট: সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৪, ৮:৫৬ অপরাহ্ণ

রাবি প্রতিনিধি


যৌন হয়রানীর দায়ে শাস্তিপ্রাপ্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সহকারী অধ্যাপক বিষ্ণু কুমার অধিকারীকে সাময়িক বরখাস্তের নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী তিন মাসের মধ্যে শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় শৃঙ্খলা কমিটির কার্যক্রম শেষ করারও নিদের্শ দেয়া হয়। সম্প্রতি রাবির রেজিস্ট্রারকে পাঠানো একটি চিঠিতে এই তথ্য জানা যায়।

ইতোমধ্যে চিঠি পেয়ে বিষ্ণু কুমারকে প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম থেকে সাময়িক বিরত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইইআর প্রশাসন।

রেজিস্ট্রারকে পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়কে বিবাদী করে সহকারী অধ্যাপক বিষ্ণু কুমার অধিকারী একটি রিট দায়ের করেন। এর প্রেক্ষিতে গত ৩০ এপ্রিল তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির দায়ে ২০২২ সালে রাবি সিন্ডিকেট সভায় নেয়া শাস্তিমূলক সিদ্ধান্তটি ছয় মাসের স্থগিতাদেশ দেন আদালত। এছাড়া এই আদেশ প্রাপ্তির ৯০ দিনের মধ্যে তার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটির কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য নির্দেশনা দিয়ে বিষ্ণু কুমারকে তিন মাস সাময়িক বরখাস্ত রাখার পরামর্শ দেন আদালত।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) ড. শেখ সা’দ আহমেদ বলেন, এটা এখনো সিদ্ধান্তের পর্যায়ে যায়নি। এই বিষয়ে কর্তৃপক্ষ বা সিন্ডিকেট সিদ্ধান্ত নিবেন।

আইইআরের পরিচালক অধ্যাপক ড. আকতার বানু জানান, কোর্টের নির্দেশনা মেনে ইনস্টিটিউট কমিটির সভায় বিষ্ণু কুমারকে প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম থেকে সাময়িক বিরত রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

এর আগে, ২০১৯ সালে বিষ্ণু কুমার অধিকারীর বিরুদ্ধে দুই ছাত্রীকে যৌন হয়রানি ও মানসিকভাবে উত্ত্যক্তের অভিযোগ ওঠে। এতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে গঠিত অনুসন্ধান কমিটি অভিযোগের সত্যতা পেলে তাকে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে সাময়িক অব্যহতি দেয়া হয়। শিক্ষার্থীরা সেসময় তার বিরুদ্ধে কোর্সের নম্বর নিয়ে ভয় দেখানো, চেম্বারের ডেকে মানসিকভাবে হয়রানী এবং ছাত্রী ও নারী শিক্ষকদের নিয়ে ক্লাসে কুরূচিপূর্ণ মন্তব্যসহ নানা অভিযোগ তোলেন। পরে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দেয়া লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে তৎকালীন আইইআরের ৪টি ব্যাচের একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিষ্ণু কুমারকে বিরত রাখার সিদ্ধান্ত হয়।

তবে আইইআরের সদ্য পদত্যাগকারী পরিচালক ড. দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস সেই সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে বিষ্ণু কুমারকে ইনস্টিটিউটে ফিরিয়ে আনেন। চলতি বছর তাকে আন্দোলনকারী ৪র্থ ব্যাচের পরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যানও করেন সাবেক পরিচালক ড. দুলাল চন্দ্র।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন নিরোধ সেলের তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২০২১ সালে তাকে ৬ বছর বরখাস্তের সুপারিশ করা হয়।

তবে ২০২২ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫১৪তম সিন্ডিকেটে তার শাস্তি কমিয়ে ৪ বছর পদোন্নতি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। চলতি বছর এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে তিনি হাইকোর্টে রিট করেছিলেন যার পরিপ্রেক্ষিতেই হাইকোর্ট বিষ্ণু কুমারকে সাময়িক বরখাস্তের পরামর্শ দেন।