শনিবার, ১০ জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ২৭ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
নিজস্ব প্রতিবেদক
রোগির স্বজনদের হাতে লাঞ্ছিত হওয়াকে কেন্দ্র করে অনির্দিষ্টকালের জন্য ডাকা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিয়েছেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। রামেক ছাত্রলীগের সভাপতি শফিকুল ইসলাম অপু এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গত মঙ্গলবার দুপুরে হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে রোগির স্বজনদের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছিলেন অপু। এর প্রতিবাদেই গতকাল বুধবার দুপুর ২টা থেকে হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের ডাকে ধর্মঘট শুরু হয়।
শফিকুল ইসলাম অপু বলেন, গতকাল বিকেলে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এএফএম রফিকুল ইসলাম ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে জরুরি সভা করেছেন। এ সময় তিনি মঙ্গলবারের ঘটনার জন্য থানায় মামলা করার সিদ্ধান্তের কথা তাদেরকে জানিয়েছেন। এছাড়া ইন্টার্ন চিকিৎসকদের নিরাপত্তাসহ সার্বিক বিষয়ে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হাসপাতালে দর্শনার্থী প্রবেশেও কড়াকড়ি করার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। তার এই আশ্বাসের পর ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে তারা ওয়ার্ডেও ফিরে গেছেন।
প্রসঙ্গত, হাসপাতালের পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন রাজশাহী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রথমবর্ষের ছাত্র জনি আহমেদ। মঙ্গলবার দুপুরে তাকে দেখতে ওই ওয়ার্ডে তার ১৩ জন বন্ধু যান। ওই ওয়ার্ডে ইন্টার্ন চিকিৎসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন রামেক ছাত্রলীগের সভাপতি শফিকুল ইসলাম অপু। তিনি তাদের সবাইকে দ্রুত ওয়ার্ড ছেড়ে চলে যেতে অনুরোধ করেন। কিন্তু কয়েকবার অনুরোধের পরেও তারা যাচ্ছিলেন না। এক পর্যায়ে মনিরুল ইসলাম নামে জনির এক সহপাঠী অপুকে বলেন, ‘ওই ব্যাটা তুই কে?’ এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাকবিত-া শুরু হয়। একপর্যায়ে ইন্টার্ন চিকিৎসক শফিকুল ইসলাম অপুকে লাঞ্ছিত করেন মনিরুল ইসলাম।
এ ঘটনার পর ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের নেতারা রামেক হাসপাতালের পরিচালকের সঙ্গে দেখা করে কলেজছাত্র মনিরুলের গ্রেফতার দাবি করেন। এ সময় হাসপাতালের পরিচালক তাদের আশ^াস দেন, বুধবার (গতকাল) সকাল ১০টার মধ্যেই এ বিষয়ে থানায় মামলা করা হবে। তখন পুলিশ তাকে গ্রেফতার করবে। কিন্তু গতকাল দুপুর পর্যন্ত হাসপাতাল কর্র্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। পরে দুপুর ১টায় ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের নেতৃবৃন্দ আবারো হাসপাতাল পরিচালকের সঙ্গে দেখা করে মনিরুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান।
তবে হাসপাতাল পরিচালক এ সময় তাদের কাছে আরও একদিন সময় চান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের নেতৃবৃন্দ ধর্মঘটের ডাক দেন। এতে ভোগান্তিতে পড়েন হাসপাতালের চিকিৎসক ও ভর্তি থাকা রোগিরা। তবে হাসপাতাল পরিচালক ইন্টার্ন চিকিৎসকদের দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দিলে প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘন্টা পর ধর্মঘট প্রত্যাহার করলেন তারা।