মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৭ কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (রামেবি) নার্সিং অনুষদের পরীক্ষা খুবই দ্রুত হবে। এর আগে বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ করা হবে। তারপর চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়। রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) রাতে রামেবি থেকে প্রেরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এতথ্য জানানো হয়।
বিশ^বিদ্যালয়ের সহকারি রেজিস্ট্রার (চ.দ.) মো. রাশেদুল ইসলাম জানান, উদ্ভূত পরিস্থিতে নার্সিং অনুষদের স্থগিত পরীক্ষা দ্রুত শুরু করার প্রয়োজনীয় সকল প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। মহামারি করোনাজনিত কারণে নার্সিং অনুষদের আওতাধীন অধিভুক্ত নার্সিং প্রতিষ্ঠানের বিএসসি ইন নার্সিং শিক্ষার্থীদের সেশন জট তৈরি হয়েছে। দ্রুত পরীক্ষা গ্রহণ করে ফলাফল প্রকাশ করতে না পারলে শিক্ষার্থীদের ইন্টার্নশিপ শেষ করে আগামী কম্প্রিহেনসিভ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। এর ফলে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের ক্ষতি কাটিয়ে উঠার লক্ষ্যে এবং সেশনজট কমানোর জন্য জুলাই মাসের ১৫ তারিখে ডিন, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও সকল নার্সি কলেজের অধ্যক্ষদের অংশগ্রহণে ৭ সেপ্টেম্বর থেকে চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষা শুরু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। পরীক্ষা কমিটি গঠন এবং পরবর্তী সকল পরীক্ষার জন্য একটি রোডম্যাপ তৈরি করা হয়। অনুষদ সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক রামেবির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ দফতর, পরীক্ষা কমিটিসহ সংশ্লিষ্ট সকলে নিরলস পরিশ্রম করে ৭ সেপ্টেম্বর থেকে নার্সিং চতুর্থ বর্ষের চুড়ান্ত পরীক্ষা শুরু করার জন্য পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ, প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, ফরম ফিলাম, প্রবেশপত্র তৈরিসহ সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।
কিন্তু গত ২৭ আগস্ট পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক পদত্যাগ করার পর উপাচার্য, পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) ও রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) কে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে পরীক্ষা পরিচালনার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। কিন্তু ২ সেপ্টেম্বর ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে উপাচার্যও পদত্যাগ করেন। তিনি পদত্যাগ করার আগে নির্বাহী আদেশে নার্সিং অনুষদের পরীক্ষা স্থগিত করে যান। উপাচার্যের পদত্যাগের পর পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) রেজিস্ট্রার ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের অতিরিক্ত দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেন। বর্তমানে রামেবিতে উপাচার্য, ট্রেজারার, রেজিস্ট্রার, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, কলেজ পরিদর্শকসহ সকল বিভাগীয় প্রধানের পদ শূন্য। এমনকি ডেপুটি পর্যায়েরও কোন কর্মকর্তা নাই। এরফলে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হওয়া সত্ত্বেও রামেবিতে পরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করার মত সিগনেটরী উর্দ্ধত্বন কোন কর্মকর্তা না থাকায় নার্সিং এর স্থগিত পরীক্ষা শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না। এমনকি চলমান বিডিএস, হেলথ্ টেকনোলজির পরীক্ষাও বন্ধ রয়েছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতে নার্সিংয়ের চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষা স্থগিতের পর দ্রুত পরীক্ষা শুরু করার দাবিতে ৪ সেপ্টেম্বর থেকে নার্সিং শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছেন। নার্সিং শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা শুরুর এই আন্দোলন অত্যান্ত যৌক্তিক এবং এর সাথে রামেবির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একমত। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী উপাচার্য ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ছাড়া জুনিয়র কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পরীক্ষা পরিচালনা করার কোন ক্ষমতা না থাকায়, রামেবির সকল কর্মকর্তা-কর্মচারি স্বাক্ষর করে ৫ সেপ্টেম্বর উপাচার্য নিয়োগের জন্য স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন। উপাচার্য নিয়োগের এই আবেদনপত্র একজন কর্মকর্তা সরাসরি মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়ে নথিভুক্ত করিয়েছেন। মন্ত্রণালয় বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে আমলে নিয়েছেন। আশা করা হচ্ছে খুব শিঘ্রই উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হবে। যেহেতু পরীক্ষার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে, উপাচার্য নিয়োগের দু/একদিনের মধ্যেই পরীক্ষা শুরু করা সম্ভব হবে। অতি দ্রুত পরীক্ষা শেষ করে ফলাফল প্রকাশের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সদা প্রস্তুত রয়েছেন।